রাজনৈতিক দলগুলো পুতুলে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন উপদেষ্টারা: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন উপদেষ্টারা। কিন্তু তাদের এই ধারনা সঠিক নয়। আমরা অনেক সহ্য করেছি। বিএনপি ভেসে আসা কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আমরা এদেশের মানুষের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে দেশে রাজনীতি করি। ফলে আমাদের ফেলনা মনে করলে ভুল করবেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে যশোর টাউন হল ময়দানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।
ফখরুল আরও বলেন, 'নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট করা ঠিক হবে না। যদি তা হয়, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। আমি ড. ইউনূস সরকারকে অবিলম্বে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানাই। গণতন্ত্রকে আর হরণ করবেন না, জনগণের অধিকারকে নষ্ট করবেন না। বিএনপি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিশ্বাসী। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় এবং কিছু রাজনৈতিক দল অসৎ উদ্দেশ্যে গলযোগ করার চেষ্টা করছে, তাদেরকে জনগণ ক্ষমা করবে না।'
এসময় তিনি প্রয়োজনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থিতিশীল করার চেষ্টার পরিণাম ভালো হবে না। একটি দল দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে ঘোলা করার চেষ্টা করছে। আজকের শোকাহত পরিবেশে আপনাদের বলতে চাই, এ সরকার যদি ব্যর্থ হয় তার পরিণাম ভয়াবহ হবে। তবে যদি নির্বাচন নিয়ে কোনো টালবাহানা করেন, তবে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। বিএনপি জানে কিভাবে নির্বাচন আদায় করতে হয়।'
ফখরুল আরও বলেন, 'ড. ইউনূসের সরকার একটি ঐকমত্য কমিশনার মাধ্যমে জুলাই সনদে স্বাক্ষর সম্পন্ন করেছে। কিন্তু সেই স্বাক্ষরের পর উপদেষ্টা পরিষদ একটি ব্রিফিংয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত পোষণের জন্য আলটিমেটাম দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন উপদেষ্টারা, কিন্তু তা সঠিক নয়। আমরা অনেক সহ্য করেছি। বিএনপি ভেসে আসা কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আমরা মানুষের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে রাজনীতি করি। রাজনৈতিক দলগুলোকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার পরিণাম ভালো হবে না।'
মরহুম তরিকুল ইসলামকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আজীবন সংগ্রামী কিংবদন্তিতুল্য নেতা মরহুম তরিকুল ইসলাম সারাজীবন মা, মাটি ও মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। তিনি যশোরের উন্নয়নে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। কোনো অন্যায় বা অনিয়মের সঙ্গে আপোষ করেননি। শত অত্যাচার সহ্য করেও আদর্শের প্রতি ছিলেন অবিচল। তিনি ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের পতনের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন। কিন্তু আজ সেই স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে তিনি আমাদের মাঝে নেই। আজকের বাংলাদেশে তার খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। তিনি সারাজীবন আপনাদের জন্য, যশোর এবং দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছেন।'
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, 'তরিকুল ইসলাম একজন ক্ষণজন্মা নেতা ছিলেন। তার মতো ব্যক্তিরা দেশে বারবার জন্মায় না। যুগে যুগে ক্ষণে ক্ষণে তরিকুল ইসলামের মতো নেতার জন্ম হয়। আজকের স্মরণসভা থেকে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।'
স্মরণসভায় তিনি যশোরের ৫টি সংসদীয় আসনের বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাদের পক্ষে ভোট চান।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন সঞ্চালিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন- যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, প্রকৌশলী টি এস আইয়ুব প্রমুখ।
