জুলাই সনদ আদেশ: ঘোড়ার আগে গাড়ি?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রিদওয়ানুল হক বলেছেন, সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু জিনিস অন্তর্ভুক্ত হওয়ার নজির দুনিয়ার কোথাও নেই। সেইসঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে যে গণভোটের কথা বলা হচ্ছে, সেটাকে ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার মতো বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের নিয়মিত আয়োজন 'রোড টু ইলেকশন'-এ অস্ট্রেলিয়া থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক শাখাওয়াত লিটনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গত ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির সুপারিশ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
এতে বলা হয়, জুলাই সনদের সাংবিধানিক সংস্কারগুলো ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়িত না হলে সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে।
এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রিদওয়ানুল হক বলেন, সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু জিনিস অন্তর্ভুক্ত হওয়ার নজির দুনিয়ার কোথাও নেই। এই প্রস্তাব যখন কমিশন দিয়েছে, কমিশনের বিবেচনায় কোনো নজির ছিল কি না বা কোনো সংবিধানের বর্তমান কোনো প্রভিশন তাদের ইনফ্লুয়েন্স করেছে কি না, আমার জানা নেই। তবে এ ধরনের কোনো নজির নেই।
তিনি আরও বলেন, যে পদ্ধতিতে প্রস্তাবটা দেওয়া হচ্ছে যে আমরা গণভোটে যাচ্ছি, গণভোটটা কীসের ওপর? গণভোটটা একটা বিলের ওপর। একটা আদেশ আগে পাশ হবে, সংবিধান সংস্কার আদেশ এবং সেটা যখন পাশ হবে, তখন ওই পুরো আদেশ গণভোটে যাবে এবং এটা একটা অ্যাডেন্ডাম বা সংযুক্তি হিসেবে। এটার মাধ্যমে যেটা হচ্ছে সেটা হচ্ছে ঘোড়ার আগে গাড়িকে জুড়ে দেওয়ার মতো। স্বাভাবিকভাবে ঘোড়া সামনে থাকে, গাড়িটা পেছনে থাকে। ঘোড়াটাই গাড়িটাকে নিয়ে চলে যায়।
সরকারের এ ধরনের আদেশ জারি করার এখতিয়ার আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে রিদওয়ানুল হক বলেন, সরকারের এ ধরনের আদেশ জারি করার এখতিয়ার নেই।
তবে আমি বিশ্বাস করি, জুলাই আন্দোলনের যে মাত্রা বা স্কেল সেদিক থেকে বিবেচনা করে জুলাই আন্দোলন বা জুলাই চার্টার একটা স্বীকৃতির দাবি রাখে। সেই স্বীকৃতিটা ভিন্নভাবে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু সরকারের ক্ষমতা নেই এত দিন পর এভাবে আইন তৈরি করার।
