৫ দফা দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার গণমিছিল করবে জামায়াতসহ সমমনা ৮ দল
জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোটসহ পূর্বঘোষিত ৫ দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আটটি রাজনৈতিক দল।
নতুন ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী বৃ্হস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদানের লক্ষ্যে গণমিছিল এবং দাবির বিষয়ে সন্তোষজনক অগ্রগতি না হলে ১১ নভেম্বর রাজধানীতে গণসমাবেশ করবে দলগুলো।
সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।
মামুনুল হক বলেন, 'বাংলাদেশ ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে উপনীত। তবে জুলাই সনদ নিয়ে দেশের মানুষ যে স্বপ্ন দেখেছিল এবং নতুন বন্দোবস্তের স্বপ্ন এখনও অধরা।'
মামুনুল হক আরও বলেন, 'আমাদের আটটি দলের পাঁচ দফা দাবিতে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছি। অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই পৃথকভাবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট করতে হবে। আরপিও সংশোধন করা হলে আমরা সেটা মানব না, অর্থাৎ আরপিও আগের মতোই রাখতে হবে। এগুলোই এখন আমাদের মূল দাবি।'
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, 'আগামী নির্বাচনে ইসলামি দলগুলোর এক বাক্সে ভোট হবে।'
তিনি বলেন, 'আমরা যে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, তাতে হঠাৎ করে একটি দল বিরোধিতা করছে। আমরা আশা করি, তারা তাদের দলীয় অবস্থান পরিষ্কার করবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে গণভোট আগে-পরে করে লাভ নেই। বরং, গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ নির্বাচনের দিন হ্যা বা না ভোটে কারও মনোযোগ থাকবে না।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি আশা করি রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা রেফারির ভূমিকা নিবেন।'
জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলো হলো- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস(দুই গ্রুপ), নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
সংবাদ সম্মেলনের আগে সোমবার সকালে রাজধানীর পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন আটটি দলের শীর্ষ নেতারা।
তাদের ৫ দফা দাবি হলো-
১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর পৃথক গণভোট আয়োজন করা। সংশোধিত ও উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত আরপিওতে আর কোনো ধরণের সংশোধন, পরিমার্জন বা পরিবর্তন না করা।
২. আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে বা উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা
৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা
৪. ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল জুলুম নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা
৫. স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কাযর্ক্রম নিষিদ্ধ করা
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর), মাওলানা ইউনুছ আহমাদ ও অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, নেজামী ইসলাম পার্টির মুফতি হারুন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) মুখপাত্র রাশেদ প্রধান প্রমুখ।
