‘আল্লাহর পর আপনিই বিচারক, আমি নির্দোষ, গায়েবি মামলার ঝড়ে বিধ্বস্ত’: ট্রাইব্যুনালকে ইনু
সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বলেছেন, 'আল্লাহর পর বিচার নিষ্পত্তির প্রতিনিধি আপনি। আমি নির্দোষ। সম্পূর্ণ নির্দোষ। শুধু গায়েবি মামলার ঝড়ে বিধ্বস্ত'।
রোববার (২ নভেম্বর) ইনুর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার অভিযোগে ইনুর বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ গঠন করা হয়।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসানুল হক ইনুকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানা থেকে আসামির কাঠগড়ায় তোলা হয়। তার উপস্থিতিতে প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগগুলো পড়ে শোনানো হয়।
অভিযোগ শোনানোর একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল ইনুর উদ্দেশে বলেন, 'আপনার বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আপনি 'গিল্টি প্লিড' [দোষ স্বীকার] করলে আমাদের কাজ শেষ হয়ে যায়। নয়তো আমরা বিচার শুরু করবো।'
জবাবে ইনু বলেন, 'আমি কয়েকটি অভিযোগ শুনেছি। বাকিগুলো শুনিনি। তবে আপনারা আমার আবেদনটি আমলে নিচ্ছেন না।' তখন ট্রাইব্যুনাল জানান, তার আবেদনটি খারিজ করা হয়েছে।
এরপর ইনু কথা বলার অনুমতি চাইলে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তার সরাসরি কথা বলার সুযোগ নেই। ট্রাইব্যুনালও বলেন, 'এটির সুযোগ নেই। আপনি আইনজীবী নিয়োগ করেছেন। যা বলার ওনার মাধ্যমে বলবেন।'
তবে এরপরও হাসানুল হক ইনু কথা বলা চালিয়ে যান। তিনি বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টা দুইবার বলেছেন, দেশে গায়েবি মামলা হচ্ছে। আইন উপদেষ্টাও গায়েবি মামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে গায়েবি মামলার ঝড় থামছে না বলে জানিয়েছেন। তার এসব কথা শুনে আমি খুশি হয়েছি।'
নিজেকে 'রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার' দাবি করে ইনু আরও বলেন, 'সিএমএম কোর্টে আমার বিরুদ্ধে ৬০টি মামলা চলমান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও গায়েবি অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন। আমি রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার। গায়েবি মামলার ঝড়ে আক্রান্ত। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, "৫ আগস্টের আগে যা হয়েছে তা ভুলে যান"।'
সবশেষে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, 'আমি মনে করি আল্লাহর পর বিচার নিষ্পত্তির প্রতিনিধি আপনি। আপনি ন্যায়বিচার করবেন। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।'
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
