বিলুপ্তপ্রায় শুশুক ধরে ভিডিও, অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ায় বিলুপ্তপ্রায় জলজ প্রাণী শুশুক ধরে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে খোকসা উপজেলা চত্বর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ দুপুরে কুষ্টিয়া, খোকসা ও রাজবাড়ী বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত শেষে খোকসা থানায় এজাহার দায়ের করেন। অভিযোগের পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতে সাদ্দাম হোসেনকে আটক করে।
খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মইনুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ৩৭ ও ৪১ ধারায় সাদ্দাম হোসেনকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলমান।'
জানা গেছে, সাদ্দাম হোসেন নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ২৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি কাঁধে একটি মৃত শুশুক নিয়ে দৌড়ে এসে বলেন, 'পাইছিরে পাইছি, এই শালার হারামির বাচ্চা পদ্মা নদীতে আইসা সব ইলিশ খায়া ফেলছে, মানুষজন কোনো ইলিশ পাইতেছে না, তাই ধরিয়া আনছি।' মুহূর্তের মধ্যেই ভিডিওটি ভাইরাল হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগেও একই ফেসবুক পেজ থেকে পদ্মা নদীর বিরল প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী ধরে তৈরি করা একাধিক ভিডিও পোস্ট করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
গতকাল বুধবার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে আসে বনবিভাগসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও খোকসা উপজেলার বনবিভাগের কর্মকর্তারা অভিযানে যান এবং ঘটনার অনুসন্ধান করেন।
ভিডিও প্রকাশকারী সাদ্দাম হোসেন (২৮) কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের নতুন সেনগ্রামের বাসিন্দা। তিনি বলেন, 'বন বিভাগের কর্মকর্তারা এসেছিলেন, আমি তাদের সব ব্যাখ্যা দিয়েছি। শুশুকটি আমি জেলেদের কাছ থেকে নিয়েছিলাম, ভিডিও করে আবার তাদের ফিরিয়ে দিয়েছি।' আশেপাশের লোকেরাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল আলম বলেন, 'বিষয়টি তদন্তে আমরা টিম পাঠিয়েছি। পরে খোকসা ও রাজবাড়ী থেকেও কর্মকর্তারা গিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, শুশুকটি মৃত অবস্থায় জেলেরা উদ্ধার করে। ভ্যানে রাজবাড়ীতে নেওয়ার পথে সাদ্দাম ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে প্রকাশ করে। বন্যপ্রাণী নিয়ে ভিডিও তৈরি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করাও আইনের আওতায় অপরাধ। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
