তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে আপিলের চূড়ান্ত শুনানি ২ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে পুনরায় আপিলের চূড়ান্ত শুনানি আগামী ২ নভেম্বর (রোববার) পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) পঞ্চম দিনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ মুলতবির আদেশ দেন।
পঞ্চম দিনের শুনানিতে বিএনপির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, 'তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কথা জামায়াতে ইসলামী প্রথম উপস্থাপন করেছে। এরপর আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উপস্থাপন করে। পরে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়।'
এদিন আরেক রিভিউ আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এএসএম শাহরিয়ার কবির।
এর আগে গত ২১, ২২, ২৩ ও ২৮ অক্টোবর চারদিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ চারদিনে ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজনের পক্ষে আইনজীবী ড. শরীফ ভুঁইয়া, ইন্টারভেনার হিসেবে আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক এবং জামায়াতে ইসলামী'র পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির শুনানি সম্পন্ন করেন।
এরও আগে, গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে পুনরায় আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে। সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিম উল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারি করে এবং বিশেষ বেঞ্চে চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারীরা আপিল করেন। আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় এবং ৩ জুলাই সংশ্লিষ্ট গেজেট প্রকাশ করা হয়।
পরবর্তীতে, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া ও জাহরা রহমান।
এরপর, আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি আবেদন করেন।
এছাড়া, গত বছরের ২৩ অক্টোবর রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। পরে, নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।
