টিবিএসে সংবাদ প্রচার: নিখোঁজের আড়াই মাস পর পরিবারের কাছে ফিরল আয়েশা, ৩ অপহরণকারী গ্রেপ্তার
রাজধানীতে শিশু নিখোঁজের বেশ কয়েকটি ঘটনা নিয়ে গত ২০ আগস্ট একটি প্রতিবেদন প্রচার করে টিবিএস মাল্টিমিডিয়া। সেই প্রতিবেদনে দেখানো হয় কীভাবে ১১ বছর বয়সী ৫ম শ্রেণির ছাত্রী আয়েশা আক্তার রামিসা নিখোঁজ হয়েছে।
গত ১০ আগস্ট সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার নবীনগর হাউজিংয়ে নিজ বাসা থেকে স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ হয় শিশুটি।
টিবিএসের সেই সংবাদের পর আয়েশা নিখোঁজের ঘটনা নিয়ে কাজ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক ইউনিট। প্রায় আড়াই মাস পর নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে উদ্ধার হয় নিখোঁজ আয়েশা। শিশুটিকে অপহরণের সঙ্গে যুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। গত ২৭ অক্টোবর আদালতের মাধ্যমে আয়েশাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দীর্ঘ আড়াই মাস পর সন্তানকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা আয়েশার পরিবারের সদস্যরা। আয়েশাকে দেখতে ছুটে এসেছেন তার আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি সবাই।
আয়েশার মা মাকসুদা বেগম বলেন, 'মেয়ে নিখোঁজের পর থেকে শোকে পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। দিনের পর দিন শুধু কান্নাকাটি করছি। আপনারা টিবিএসে রিপোর্ট করেছেন। এরপর থানা পুলিশের সবাই এটা নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। তাই আমার মেয়েকে ফিরে পাইছি। যারা এই অপহরণে জড়িত তাদের যেন কঠিন শাস্তি হয়।'
আয়েশার বাবা আলমগীর হোসেন তার মেয়ের নিখোঁজ সংবাদ প্রচারের জন্য টিবিএস মাল্টিমিডিয়া ধন্যবাদ জানান।
আয়েশার বাবা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, 'টিবিএসে এই সংবাদ প্রচার না করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন এত কাজ করত না। বহু মানুষ এই খবর দেখেছে। প্রশাসনের সবাইকে ধন্যবাদ তারা আমার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছে।'
তিনি বলেন, এই চক্র যেন আর কারো ক্ষতি করতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের কঠিন শাস্তি হোক, এটাই চাওয়া।'
আয়েশার পরিবার ও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, এই অপহরণের নেপথ্যে ছিলেন আয়েশার নিজ বাসার পঞ্চম তলার রাশিদা বেগম নাম। তিনি পরিকল্পিতভাবে আয়েশাকে অপহরণ করে নিয়ে যান নারায়ণগঞ্জে। তার সাথে ছিলেন খাদিজা নামের আরও এক নারী। তাদের পরিকল্পনা ছিল আয়েশাকে বিদেশে পাচার করা।
আয়েশার স্বজনরা বলছেন, অপহরণকারী ওই নারীকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন তারা। তিনি দাইয়ের কাজ করেন ওই এলাকায়। থাকতেন তাদের বাসাতেই।
জানতে চাইলে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের উপ পরিদর্শক (এসআই) মোছা. মাছুমা জানান, এই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত আয়েশাকে তার বাবার জিম্মায় দিয়েছেন।
