সাংবিধানিক আদেশ জারি করার এখতিয়ার সরকারের নেই: সালাহউদ্দিন

জুলাই জাতীয় সনদকে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ইউট্যাব আয়োজিত '২৪ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: তারুণ্যের ভাবনায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থান' শীর্ষক এক আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, 'যদিও কেউ কেউ বলছে যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী এখন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সেই আইনটা, আদেশটা জারি করতে পারেন। সেটা ইমোশনাল কথা, রাষ্ট্র কোনো ইমোশনের ওপরে চলে না। রাষ্ট্র আইনকানুন, বিধিবিধান, নিয়মকানুনের মধ্য দিয়ে চলে।'
গত ১৭ আগস্ট জুলাই সনদ সই হলেও কীভাবে তা বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়ে এখনও সুপারিশ দেয়নি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বুধবার (২২ অক্টোবর) এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কমিশন। বৃহস্পতিবার আবার তাদের পরাশর্ম নেবে কমিশন, তার আগে কমিশন সদস্যরা নিজেরা বৈঠক করবেন।
সুপারিশের প্রাথমিক খসড়ার খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে একটি আদেশ জারি করা হবে। সনদের অধীনে গণভোট নিয়ে একটি অধ্যাদেশ করা হবে।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন বলেন, ''আমি কালকে বলতে শুনলাম যে, এটা 'এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অর্ডার' করে প্রধান উপদেষ্টা এটা জারি করতে পারেন।"
'তবে প্রধান উপদেষ্টার আইন জারির কোনো অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে নেই' বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, 'যার জারি করার কথা, তিনি জারি করলেন না, যথাযথ কর্তৃপক্ষ জারি করল না, সেই বিতর্ক যাতে ভবিষ্যতে না ওঠে, সে জন্য আমরা যেন পলিটিক্যাল ইমোশন থেকে সরে আসি। এ আহ্বান আমি সব পক্ষকে জানাব।'
তিনি বলেন, 'গতকাল একটি রাজনৈতিক দল বলেছে, জনমতের চাপে অবশেষে বিএনপি জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবে একমত হয়েছে। অথচ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব বিএনপির ছিল।'
তিনি আরও বলেন, 'দুটি রাজনৈতিক দল ছাড়া বাকি সবাই এ (গণভোট) প্রস্তাবে একমত হয়। আমি দুটি রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ করছি না। তবে দুটি দলের একটি জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে গিয়েছে। অপর একটি রাজনৈতিক দল এখন জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে। তাদের কিছু দাবিদাওয়া আছে। সে বিষয়ে আলাপ–আলোচনা এখন যে পর্যায়ে হচ্ছে, আমি আশা করি, হয়তো তাদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে একটা যৌক্তিক সমাধানও আসবে।'
প্রসঙ্গত, জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৭ অক্টোবর। তবে ওই অনুষ্ঠানে যায়নি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
সালাহউদ্দিন বলেন, 'সবচেয়ে বেশি দরকার হলো আমাদের মানসিক সংস্কার। আমরা ঐকমত্য কমিশনে আইনি সংস্কার, সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে কথা বলছি। যত সংস্কারই আমরা করি না কেন, জাতীয় ভিত্তিতে যদি আমাদের মানিসক সংস্কার না হয়, সেই আইনি ভিত্তিকে আমরা বাস্তবে রূপ দিতে পারব না। এটা মোদ্দাকথা।'