নির্বাচনে কোন দল এল, না এল তা দেখার দায়িত্ব সরকারের না: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার উল্লেখ করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, এই নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দল এল বা না এল তা দেখার দায়িত্ব সরকারের না।
আজ শনিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন প্রণীত সাংবাদিকদের জন্য নীতিমালা ২০২৫ পর্যালোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের সহযোগিতায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার সেন্টারে এ সভার আয়োজন করে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) ও রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমক্রেসি (আরএফইডি)।
উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা একটা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন পেতে চাই, সেটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অঙ্গীকার। আমরা মানুষকে বলতে চাই, বাংলাদেশে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার সমাজের সূচনা হবে একটা ভালো নির্বাচন দিয়ে। এ নির্বাচনে কোন দল এল, না এল, তা আমাদের দেখার বিষয় না। সেটা নির্বাচন কমিশন দেখবে। একটা ভালো নির্বাচন দিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে আমরা বদ্ধপরিকর।'
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা সহায়তা করব, নির্বাচন কমিশন যেভাবে যা সহায়তা চাইবে, সরকারকে সেভাবেই সহায়তা করতে হবে।'
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের পর বহু ভোটার ভোট দিতে পারেননি। অনেক তরুণ জানে না ভোট কীভাবে দিতে হয়, ভোটকেন্দ্র কেমন। মেজোরিটি ভোটার বাদ দিয়ে একজন দেশ পরিচালনা করেছেন। এতে শুধু আওয়ামী লীগ নয়, দেশের সবারই দায় রয়েছে।
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে নির্বাচন কমিশনকে সংবাদকর্মীদের সহয়তা নিতে হবে বলে মনে করেন শ্রম উপদেষ্টা। তিনি নির্বাচনে সাংবাদিকদের জন্য নীতিমালা সম্পর্কে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরতে ইসির সঙ্গে আলোচনা করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'নীতিমালায় ছোট ছোট সংস্কার আনা দরকার। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, সরকারের নয়। ইসি যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়, যতটুকু সম্ভব উদার হতে হবে। অ্যাক্রিডিটেশন দেওয়ার পর সাংবাদিকদের ভোটকক্ষে প্রবেশে বাধা দেওয়া উচিত নয়। কতক্ষণ থাকবে সেটাতেও বাধা দেওয়া উচিত নয়। ভোটকক্ষে যেতে অনুমতির বিধান থাকা উচিত নয়। এটা বাদ দেওয়া উচিত। কিন্তু গোপন কক্ষে যেতে পারবেন না।'
নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, 'আপনারা সাংবাদিকদের সঙ্গে বসুন। এমন কিছু নেই যে আলোচনা করে সমাধান বের করা যায় না। মেইক ইট ট্রান্সপারেন্ট। লাইভ টেলিকাস্ট করতে দেন। …আশা করব অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন করবে ইসি। এজন্য অবশ্যই মিডিয়ার সহায়তা নিতে হবে।
ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) সভাপতি রেজোয়ানুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংবাদকর্মীরা নির্বাচনে সাংবাদিকদের জন্য নীতিমালা নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের অবাধে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচারের অনুমতি এবং ভোটকক্ষের ভেতরে ১০ মিনিটের বেশি সময় অবস্থানের সুযোগ রেখে বিদ্যমান সাংবাদিক নীতিমালা সংশোধনের দাবি জানানো হয় সভা থেকে।