এ সপ্তাহেই গুমের কয়েকটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হবে: চিফ প্রসিকিউটর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সংঘটিত আলোচিত কয়েকটি গুমের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এ সপ্তাহের মধ্যেই দাখিল করা হবে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
গুমের মামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, 'গুমের মামলা তো অনেক, সবগুলো শেষ না হলেও প্রধান কয়েকটি মামলার তদন্ত রিপোর্ট এই সপ্তাহে দাখিল হবে। এটা যেহেতু কমপ্লেক্স [জটিল] মামলা, সেই জন্য খুব খুঁটিনাটি বিষয় চেক করছি। তদন্তের রিপোর্ট এই সপ্তাহে পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।'
বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশকারীদের আশ্বস্ত করে মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, 'এগুলো [বিভিন্ন মামলায় দেওয়া ফরমাল চার্জ] হচ্ছে তাদের জন্য জবাব। তদন্ত চলাকালে যে সময় দরকার ছিল, সে সময় পার হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টগুলো হাতে আসার পর একটার পর একটার ফরমাল চার্জ দাখিল হচ্ছে। বিচারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'অনেকগুলো মামলা চূড়ান্ত পর্বে রয়েছে। সুতরাং জাতির যে প্রত্যাশা ছিল যে—এই নিকৃষ্টতম হত্যাকারীদের, গণহত্যাকারীদের, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনকারীদের বিচার এই বাংলাদেশে যাতে হয়, সেটা হওয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যনাল সঠিক পথে আছে। আশা করছি মানুষের প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে এ বিচার কাজ সম্পন্ন হবে।'
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মামলা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, 'আমরা যেটা বারবার বলেছি, সব তো আর একবারে হবে না। ক্রমান্বয়ে একটার পর একটা হতে থাকবে। এগুলো মেচিউর স্টেজে [পরিপক্ব পর্যায়ে] আছে। যথাসময়ে তার ফলাফল আপনারা দেখতে পাবেন।'
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'প্রত্যেককে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। কেউ পার পেয়ে যাবেন, কাউকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে, কেউ পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করবেন — এই ধরনের দুরাশা করে লাভ নেই। ন্যায়বিচার সব সময় তার নিজ গতিতে চলবে।'
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত খুন, হত্যাচেষ্টা, গুম, নির্যাতন ও অপহরণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত ৩৫৭টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১৪০টিই গুমের অভিযোগ। এসব অভিযোগের অধিকাংশই ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় পাঠানো হয়েছে। কর্মকর্তারা অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই শেষে প্রসিকিউশনে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।