এস আলমের 'অবৈধ' নিয়োগ বাতিলের দাবিতে দেশজুড়ে ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারস ফোরামের মানববন্ধন

এস আলমের 'অবৈধভাবে নিয়োগকৃত অদক্ষ' কর্মকর্তা কর্মচারিদের ইসলামী ব্যাংক থেকে অপসারনের দাবীতে ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারস ফোরাম রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশাপাশি দেশের অধিকাংশ এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
আজ ৬ অক্টোবর ২০২৫ সোমবার রাজধানীর দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারস ফোরাম। একই সাথে তারা ঢাকার প্রতিটি শাখার সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক থেকে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের অপসারণের আহ্বান জানান।
আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে অবৈধ এসব কর্মকর্তাদের অপসারণ করা না হলে শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকরা বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবে বলে জানিয়েছেন।
ইসলামী ব্যাংকের একজন উধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টিবিএসকে বলেন, ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারস ফোরাম প্রত্যেকটি জেলায় ও বিভাগীয় শহরে মানববন্ধন করেছন। এছাড়া ঢাকার প্রতিটি ব্রাঞ্চের সামনে মানববন্ধন হয়েছে।
প্রধান কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মো. মোহতাছিম বিল্লাহ, হাফিজুর রহমান, ইমাম হোসাইন, মাহমুদুল হাসান, এটিএম সিরাজুল হক, ড.হারুনুর রশিদ, মো. মুস্তাফিজুর রহমান ও মো. রতন সহ আরো অনেকে।
এসময় ইসলামী ব্যংক গ্রাহক ফোরাম, সচেতন ব্যবসায়ী ফোরাম, ইসলামী ব্যাংক প্রাক্তন ব্যাংকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী চাকুরী প্রত্যাশী পরিষদ, সচেতন পেশাজীবী গ্রুপ, ইসলামী ব্যাংক সিবিএ এবং সচেতন ব্যাংকার সমাজ একই দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এস আলম রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যংক জবরদখল করে নেয়। এ ব্যাংক থেকে বৈধ মালিকদের ভয় দেখিয়ে বিদায় করে। পাশাপাশি বিদেশী শেয়ারহোল্ডারদেরও নানাবিধ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাড়িয়ে দেয়। এ ব্যাংককে নিজের কব্জায় নিয়ে তারা ইচ্ছামত নিয়োগ দিয়ে মোটা অংকের টাকা আয় করেছেন।
তারা আরো বলেন, অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের অপসারণকে কোন ভাবেই মানবাধিকার লঙ্ঘন বলা যাবে না। ৬৩ টি জেলার মানুষকে বঞ্চিত করে শুধু পটিয়া এবং চট্টগ্রামের লোকদের রাতের আঁধারে বাক্স বসিয়ে চাকরি দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলের পর ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পদমর্যাদায় শুধু চট্টগ্রামেরই ৭২২৪ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে ৪৫০০ জনের বেশি শুধু পটিয়া উপজেলার।
উল্লেখ্য, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব কর্মকর্তার যোগ্যতা ও দক্ষতা মূল্যায়নের জন্য ব্যাংক ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের (আইবিএ) মাধ্যমে মূল্যায়ন পরীক্ষার আয়োজন করে। সেদিন ওই নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্যে থেকে ৫৩৮৫ জনকে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বলা হয়। তবে ব্যাংকের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে এদের মধ্যে ৪৯৭১ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে। এর মধ্যে ৪১৪ জন কর্মকর্তা মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেন।
যারা পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ব্যাংক তাদের ওএসডি করেছে এবং বিদ্রোহী ৪০০ জনকে চাকুরিচ্যুত করেছে। পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত তাদেরকে অপারেশনাল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে ব্যাংক।