আ.লীগ কর্মী পরিচয়ে এসএমপি কমিশনারকে ফোন: পুলিশ হত্যার বিচার না চেয়ে আমাদের পেছনে লেগে আছেন

আওয়ামী লীগ কর্মী পরিচয়ে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) কমিশনারের সঙ্গে ফোনালাপের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই কল রেকর্ডে শোনা যায়, একজন ব্যক্তি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি নির্দেশনার বিষয়ে পুলিশ কমিশনারকে প্রশ্ন করছেন। নির্দেশনায় বলা হয়েছিল- 'সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকায় আওয়ামী লীগের লোকজন যেন প্রকাশ্যে থাকতে না পারে।'
তবে কল করে নানা প্রশ্ন করা ওই ব্যক্তির পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যদিও ফোনালাপে তিনি নিজেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন।
ফোনে পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরীকে ওই ব্যক্তি বলেন, '১৬ বছর আমরা আপনার কী ক্ষতি করেছি যে, আপনি প্রতিদিন দুইজন করে সিলেটের আওয়ামী লীগ কর্মী ধরার কথা বলেছেন। আপনারা পুলিশ হত্যার বিচার না চেয়ে আমাদের পেছনে লেগে আছেন। আমরা কি ক্ষতি করেছি?'
ওই ব্যক্তিকে আরও বলতে শোনা যায়, 'আপনাদের এতোগুলো পুলিশ হত্যা করল। সেটার বিচার চাচ্ছেন না। উল্টা আমরা বিচার চাইতেছি। কিন্তু আমাদের রাস্তাঘাটে থাকতে দিচ্ছেন না।'
এসময় পুলিশ কমিশনার তাকে প্রশ্ন করেন, 'কে থাকতে দিচ্ছে না, কে এটা বলেছে?'
জবাবে ওই ব্যক্তি কমিশনারের নামে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া নির্দেশনার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তখন কমিশনার তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি আবারও নিজেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগ কর্মী বলে দাবি করেন।
এর আগে গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরীর স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনার অংশবিশেষ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে বলা হয়, 'ডিসেম্বর/২০২৫ এর মধ্যে এসএমপির আওতাধীন এলাকায় কোনো আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের লোকজন প্রকাশ্যে যাতে এলাকায় না থাকতে পারে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সব অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নির্দেশনা প্রদান করা হলো। এসি, এডিসি ও ডিসিরা এ বিষয়ে তদারকি করবেন।'
বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ এক বিজ্ঞপ্তি দেয়। সেখানে বলা হয়, কমিশনারের নির্দেশনা নিয়ে ফেসবুকে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, 'সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যক্তি ফেসবুকে পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের নির্দেশনা বলে একটি বক্তব্য লিখে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন। প্রকৃত তথ্য হলো- পুলিশ কমিশনার অফিসারদের অভ্যন্তরীণ সভায় বলেছেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত দলের কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। তারা প্রকাশ্যে যাতে কোনো মিছিল-মিটিং করতে না পারে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেওয়া হয়।'
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, 'ফোন কলকারী ব্যক্তিকে এখনও সনাক্ত করা যায়নি। আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। আশা করছি, তিনি দেশে থাকলে তাকে দ্রুত আটক করা সম্ভব হবে।'