প্রকাশ্যে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা মানবাধিকারের লঙ্ঘন: আসক

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজন ব্যক্তি প্রকাশ্যে এক পথচারীর চুল ও চুলের জট জোরপূর্বক কেটে দিচ্ছেন। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিবৃতিতে আসক জানিয়েছে, এ ধরনের আচরণ সম্পূর্ণ অমানবিক, বেআইনি এবং সংবিধান ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১ প্রতিটি নাগরিককে আইনের আশ্রয়ে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকার দিয়েছে। অনুচ্ছেদ ৩২ নাগরিকের জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করে, আর অনুচ্ছেদ ৩৫ কারও প্রতি নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকাশ্যে জোরপূর্বক চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা কেবল ভুক্তভোগীর মৌলিক অধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতার লঙ্ঘন নয়, এটি তার মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক বৃদ্ধ ফকির রাস্তায় হাঁটছিলেন। হঠাৎ ধূসর রঙের ভেস্ট পরা তিন ব্যক্তি তাকে তাড়া করে ধরে ফেলেন, পাশে টেনে নিয়ে জোরপূর্বক মাটিতে ফেলে দেন। বৃদ্ধের বারবার আকুতি সত্ত্বেও তারা জোর করে তার মাথার দীর্ঘ জটধারী চুল কেটে দেন। এই চুল সাধু-ফকির ও বাউলদের ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের ঘটনা সমাজে ভীতি, আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এটি আইনের শাসন ও মানবাধিকারের পরিপন্থী।
সংস্থাটি দ্রুত দায়ীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রকে আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো নাগরিক এমন অবমাননা ও বেআইনি আচরণের শিকার না হন এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।