সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় সাবেক এমপি মুক্তি ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি ৬ দিনের রিমান্ডে

রাজধানীর গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার নড়াইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএম কবিরুল হক মুক্তি ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. মোজাম্মেল হককে ছয় দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন আসামিদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক মো. আব্দুস সালাম ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। অপরদিকে আসামিদের পক্ষে আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম ও মো. কায়েস আহমেদ অর্নব রিমান্ড বাতিল ও জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে প্রত্যেক আসামির ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে রাজধানীর নিকেতন এলাকা থেকে গুলশান থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
আদালতে দাখিল করা আবেদনে বলা হয়, আসামিরা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিলে দেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তারা সরকার ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা বিঘ্নিত ও ক্ষতিসাধনের ষড়যন্ত্র এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছে।
এছাড়া রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করতে আসামিরা নিজেদের মোবাইল ব্যবহার করে ১২টি গ্রুপে প্রচারণা চালান। এর মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে—'ধানমন্ডি ৩এ', 'ইউকে আওয়ামী লীগ', 'অল গ্রুপ এডমিন', 'জলন্ত ধানমন্ডি ৩২ বলছি', 'ধানমন্ডি ৩২ থেকে বলছি', 'বঙ্গবন্ধু রিজার্ভ ফোর্স', 'শেখ হাসিনা সাইবার ফোর্স'- এবং ফেসবুক মেসেঞ্জারে- 'অনলাইন যোদ্ধা আওয়ামী সৈনিক', 'বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন', 'লন্ডন মহানগর শ্রমিক লীগ', 'বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ছাতক উপজেলা' ও 'বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যশোর জেলা'- গ্রুপে তারা উসকানিমূলক প্রচার চালান। মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন বলে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে গুলশান থানাধীন ডা. ফজলে রাব্বী পার্কের দক্ষিণ পাশের সেতুর ওপর নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে। মিছিলে তারা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে উসকানিমূলক স্লোগান দেয়। এ সময় তারা রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা চালিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় গুলশান থানার উপপরিদর্শক মো. মাহবুব হোসাইন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি দায়ের করেন।
এছাড়াও, আসামিদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, কবিরুল হক মুক্তি ২০০৯ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে কলস প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন। পরে তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত তিনটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।