নতুন দল নিবন্ধনের পর সেপ্টেম্বরের শেষে সংলাপ আয়োজনের পরিকল্পনা ইসির

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হলে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাসুদ সাংবাদিকদের জানান, নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হলেই সংলাপের আমন্ত্রণপত্র চূড়ান্ত করা হবে।
নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ১৪৩ দলের মধ্যে প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ ২২ দলের মাঠপর্যায়ের তদন্ত ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
উত্তীর্ণ দলগুলোর মধ্যে রয়েছে—জাতীয় নাগরিক পার্টি, ফরওয়ার্ড পার্টি, আমি জনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সোশ্যালিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আমি জনগণ পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ–শাহজাহান সিরাজ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ সলিউশন পার্টি এবং নতুন বাংলাদেশ পার্টি।
জাতীয় পত্রিকায় যোগ্য রাজনৈতিক দলের নাম প্রকাশ ও অভিযোগ (যদি থাকে) নিষ্পত্তির পর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপ শুরু হবে।

ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের আশপাশে সংলাপের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এক থেকে দেড় মাসব্যাপী কয়েক ধাপে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এতে রাজনৈতিক দল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, বিশেষজ্ঞ ও মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেবেন।
বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫০টি। নতুন নিবন্ধিত দলগুলোকেও এই সংলাপে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এদিকে, যাচাই-বাছাই করা ২২ দলের মধ্যে প্রায় ডজনখানেক দল ১৪ সেপ্টেম্বর ইসির আয়োজিত শুনানিতে অংশ নেয়। ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ এই শুনানি পরিচালনা করেন।

আগের মতোই আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহ্বান করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সময় ১৪৩টি নতুন দল আবেদন করে।
এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৮৪টি দলকে তালিকাভুক্ত করা হলেও শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয় ৬২টি। ফলে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ২২টি দল বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যালোচনার আওতায় রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, মাঠপর্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে চলতি মাসেই নিবন্ধন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
ভোটের সামগ্রী পৌঁছাতে শুরু করেছে ইসি সদর দপ্তরে
এদিকে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ধাপে ধাপে ভোটের সামগ্রী পৌঁছাতে শুরু করেছে। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে আসা এসব সামগ্রী ভবনে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ছয় ধরনের সামগ্রী এসে পৌঁছেছে।

এসবের মধ্যে রয়েছে লাল সিলিং ওয়াক্স, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের তালা, অফিসিয়াল সিল, পিতলের সিল এবং বড় ও ছোট হেসিয়ান ব্যাগ। মঙ্গলবার ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সংরক্ষিত সামগ্রী পরিদর্শন করেন।
ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ভোটসামগ্রী সংগ্রহ সম্পন্ন হবে। আর প্রার্থীপত্র, আচরণবিধি ও প্রতীক ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়ালসহ প্রাথমিক সামগ্রী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিতরণ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।