সংখ্যালঘু ও সুফি সম্প্রদায়ের ওপর অব্যাহত হামলার প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ

দেশব্যাপী মাজার, খানকাহ, বাড়িঘর ও ধর্মীয় স্থাপনার ওপর হামলা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার 'মন্তব্যের'-প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণ।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি আয়োজিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নতুন বাংলাদেশে এখনও ধর্মীয় সংখ্যালঘু, নারী ও সুফি সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর ধারাবাহিক হামলা চলছে, যা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
তারা অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতায় 'মব সন্ত্রাস' সমাজে বৈধতা পাচ্ছে।
সমাবেশে সাংবাদিক ও লেখক এহসান মাহমুদ বলেন, '৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমাদের স্বপ্ন ছিল বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। অথচ এখনও আমাদের ব্যানার হাতে রাস্তায় নামতে হচ্ছে, এটা লজ্জার। প্রতিটি নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে সরকারকে বিদায় নিতে হবে।'
তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন কারণে নিরীহ মানুষকে মব আখ্যা দিয়ে টার্গেট করা হচ্ছে, একে কেউ 'মব জাস্টিস' বললেও বাস্তবে এটি মব সন্ত্রাস।
এতে সংহতি জানিয়ে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, শুরুর কিছু ঘটনাকে দাঙ্গাবাজি বলে সাধারণীকরণ করা গেলেও, এখন তা 'সংগঠিত অপরাধ' আকার ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্দিষ্ট স্বার্থসাধনের জন্য পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রোঅ্যাকটিভ নয়।'
তিনি দ্রুত প্রশাসনিক সংস্কার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ফিরোজ আহমেদ বলেন, মব সন্ত্রাসের লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে সংখ্যালঘু, নারীরা ও ফকির-মাজার সম্প্রদায়; একে প্রশ্রয় দেওয়া দুশ্চিন্তার বিষয়।
তিনি সতর্ক করে বলেন, নৈরাজ্য সৃষ্টির এই কৌশল গৃহীত হলে দেশে গণতন্ত্র দুর্বল হবে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হবে।
তিনি পুলিশ সংস্কার, নিরপেক্ষ তদন্ত ও প্রশাসনিক জবাবদিহিতার জোর দাবি করেন।
শিল্পী ও গবেষক অরূপ রাহী বলেন, 'সরকার বিভিন্নভাবে এই ধরনের গোষ্ঠীকে আশ্রয় দিচ্ছে; এটি ধর্মীয়-সামাজিক ফ্যাসিবাদকে উস্কে দেয়।'
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, সব ঘটনার সমানভাবে বিচার করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলকভাবে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং দেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।