‘১৮ ও ১৯ জুলাই ছিল রক্তাক্ত দিন’: আইসিটিতে অভ্যুত্থানের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনায় চক্ষু বিশেষজ্ঞ

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক যাকিয়া সুলতানা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, '১৮ ও ১৯ জুলাই ছিল রক্তাক্ত দিন।'
তিনি বলেন, 'আমি অপারেশন থিয়েটারে ছিলাম, খবর পেলাম জরুরি বিভাগ উপচে পড়েছে। আমি সেখানে যা দেখলাম তা ভয়াবহ ছিল; ১৪ থেকে ২৫ বছর বয়সী শতাধিক রোগী তাদের রক্তাক্ত চোখ চেপে ধরে আছেন। কেউ কেউ একটি চোখ ধরে রেখেছেন, আবার কেউ কেউ উভয় চোখ ধরে রেখেছেন। ধাতব গুলি ও বুলেট তাদের চোখ ভেদ করেছে, যার ফলে রক্ত ঝরছে।'
আজ (২৫ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)-১ এ দেওয়া সাক্ষ্যে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় ২১তম সাক্ষী হিসেবে যাকিয়া সুলতানা ট্রাইব্যুনালে এই জবানবন্দি দেন।
তিনি বলেন, 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে আহত হয়ে রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ১১ জন দুই চোখের দৃষ্টি চিরতরে হারিয়েছেন। আর ৪৯৩ জন চিরতরে হারিয়েছেন এক চোখের দৃষ্টি।'
জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, 'হাসপাতালটিতে যেসব রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন, তাদের অধিকাংশই মেটালিক পেলেট, কেউ কেউ রিয়েল বুলেটে আহত ছিলেন। রোগীদের আহত হওয়ার ধরন ছিল চোখের কর্নিয়া ছিদ্র হয়ে যাওয়া, চোখের সাদা অংশ ছিদ্র হয়ে যাওয়া, চোখ ফেটে যাওয়া, চোখের রেটিনা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া এবং চোখে রক্তক্ষরণ।'
যাকিয়া সুলতানা বলেন, 'হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নেওয়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ২৮ জন দুই চোখে গুরুতর দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগছেন। ৪৭ জন এক চোখে গুরুতর দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগছেন। আর ৪৩ জন এক চোখে সাধারণ দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগছেন।'
জবানবন্দির সময় যাকিয়া সুলতানার পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায় দেখা যায়, আন্দোলনে আহত ৮৬৪ জন হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছিলেন।
যাকিয়া সুলতানা জবানবন্দিতে বলেন, '১৮ ও ১৯ জুলাই ছিল রক্তাক্ত দিন। আমি যখন অপারেশন থিয়েটারে ছিলাম তখন খবর পেলাম যে জরুরি বিভাগটি উপচে পড়েছে। আমি সেখানে যা দেখলাম তা ভয়াবহ ছিল; ১৪ থেকে ২৫ বছর বয়সী শতাধিক রোগী তাদের রক্তাক্ত চোখ চেপে ধরে আছেন। কেউ কেউ একটি চোখ ধরে রেখেছেন, আবার কেউ কেউ উভয় চোখ ধরে রেখেছেন। ধাতব গুলি এবং গুলি তাদের চোখ ভেদ করেছে, যার ফলে রক্ত ঝরছে।'