আল-আরাফাহ ব্যাংকের ৫৪৭ কর্মকর্তা পুনর্বহালে বাংলাদেশ ব্যাংককে দ্রুত সিদ্ধান্তের নির্দেশ

আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের অপসারণ করা ৫৪৭ জন কর্মকর্তাকে স্ব স্ব পদে পুনর্বহালের আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের অপসারণ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
রোববার (২৪ আগস্ট) অপসারিত কর্মকর্তাদের দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বলা হয়েছে।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী।
এর আগে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের চাকরি থেকে অপসারিত ৩০০ কর্মকর্তা হাইকোর্টে রিট করেন। রিটকারীরা জানান, গত ২৮ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে এবং কোনো নোটিশ ছাড়াই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঢালাওভাবে ৫৪৭ জন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করে।
রিট আবেদনে উল্লেখ করা হয়, 'আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শাখা ও বিভাগে সুনাম, আন্তরিকতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে ব্যাংকের স্বার্থে কাজ করেছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে গত ২০ জুলাই আমাদের অফিশিয়াল ই-মেইলে লেটার অব টার্মিনেশন পাঠানো হয়। চাকরিচ্যুতির কোনো যৌক্তিক কারণ না থাকা সত্ত্বেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে এবং আইনবিরোধীভাবে আমাদের অপসারণ করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ কিংবা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়নি।'
এতে আরও বলা হয়, 'পরিকল্পিতভাবে আমাদের মূল্যায়ন টেস্টকে চাকরিচ্যুতির কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে এবং আমাদের পদের বিপরীতে নতুন নিয়োগের প্রচেষ্টা চলছে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৫ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে জারি করা বিআরপিডি সার্কুলার নং ০৪ এর ৩.৬ ক্রমিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে না পারা বা অদক্ষতার কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি বঞ্চিত করা যাবে না এবং সুনির্দিষ্ট ও প্রমাণিত অভিযোগ ছাড়া তাদের চাকরিচ্যুত বা পদত্যাগে বাধ্য করা যাবে না।'
রিটকারীরা আরও অভিযোগ করেন, 'আমাদের অপসারণ প্রবিধি ও নীতি অনুযায়ী সম্পূর্ণ বেআইনি। এর ফলে আমরা আর্থিক সংকট ও মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছি। অনেকের চাকরির বয়সসীমা অতিক্রম করায় বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগও নেই। তাই স্ব স্ব পদে পুনর্বহালের আবেদন জানাচ্ছি।'
আইনজীবীরা জানান, আবেদন সাড়া না পাওয়ায় অপসারিত কর্মকর্তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের শরণাপন্ন হন।