হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেলেন ধানমন্ডিতে ফুল দিতে এসে মারধরের শিকার সেই রিকশাচালক

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২- এ শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে গণপিটুনি শিকারের ঘটনায় সেই রিকশা চালক মো. আজিজুর রহমানকে জুলাই আন্দোলনের হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (১৭ আগস্ট) শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ আজহারুল ইসলামের আদালত আসামির এক হাজার টাকার মুচলেকায় জামিনের আদেশ দেন।
আজিজুরকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা ঝড় ওঠে। কারাগারে পাঠানোর একদিন পরই সমালোচনার মুখে জামিন পেলেন আজিজুর।
এদিন সকালেই ১০ মাসের একমাত্র সন্তানকে নিয়ে আদালতে আসেন আজিজুর স্ত্রী চুমকি খাতুন। শুনানিকালে আদালতে বসে ছিলেন তিনি।
চুমকি বলেন, 'আমার স্বামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। আবেগের বশে সেখানে গিয়েছিলেন। জামিন পেয়েছেন, আমি খুশি।'
আজিজুরের পক্ষে ফারজানা ইয়াসমিন রাখী জামিন শুনানি করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, 'আসামি একজন রিকশাচালক। ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মারধরের শিকার হন। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পূর্বের একটা পেন্ডিং মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আজিজুর দিন আনে, দিন খায়। তার রিকশাটাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।'
শুনানি শেষে আদালত এক হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত তার জামিনের আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২- এ ফুল দিতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন রিকশাচালক আজিজুর রহমান। পরে তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওই দিন রিকশা চালক আজিজুর বলেন, 'আমি কোনো দল করি না। শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসি। তাই এখানে এসেছিলাম।'
আজিজুর আরও বলেন, 'আমি আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আসিনি। আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি। তাই আমার হালাল টাকা দিয়ে কেনা ফুল নিয়ে এসেছি।'
গত শনিবার জুলাই আন্দোলনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন ঢাকার একটি আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি থানাধীন নিউমার্কেট থেকে সাইন্সল্যাব এলাকার মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী মো. আরিফুল ইসলাম। ঘটনার দিন দুপুর আড়াই টায় আসামিরা গুলি, পেট্রোল বোমা ও হাতবোমা নিক্ষেপ করে। গুলি ভুক্তভোগীর পিঠ দিয়ে ঢুকে গেলে তাৎক্ষণিক পড়ে যান।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ২ মাস চিকিৎসা শেষ সুস্থ হন। এ ঘটনায় রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।