৫ আগস্ট: ঢাকা যেদিন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছিল

২০২৪ এর আগস্ট মাসের ৫ তারিখ। ৪ তারিখ রাত থেকেই নানা উৎকণ্ঠার মধ্যে পার করতে হয়। কারণ পরের দিন ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা 'মার্চ টু ঢাকা' কর্মসূচি। এমনিতেই তখন ঢাকা শহরটা পরিণত হয়েছিল মৃত্যুকূপের পরিণত হয়েছিল।
৫ আগস্ট সকালে অফিসে এসে তৈরি হচ্ছিলাস অ্যাসাইনমেন্টে বের হওয়ার জন্য। এসময় প্রথমে হঠাৎ করেই চলে গেল ইন্টারনেট। এর কিছুক্ষণ টেলিভিশনের স্ক্রলে দেখতে পেলাম সেনাপ্রধান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। ব্যাস তখনই মনে হলো বড় কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় ঘণ্টা দুয়েক পর ভাষণ দিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান। জানালেন বোন রেহানা কে নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খবরটা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যে। রাস্তায় নেমে দেখতে পাই পুরো ঢাকা শহর যেন পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে। ৩৬ দিনের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর এ বিজয়ে ঘরে বসে থাকতে পারেনি রাজধানীবাসী। জাতীয় পতাকা হাতে ও মাথায় বেধে রাস্তায় নেমে পড়েন তারা। সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাতে থাকেন তাদের ভূমিকার জন্য। রাস্তায় যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর ২টার সময় যখন শাহবাগের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে যাই তখন দেখতে পাই এক বিশাল জনসমুদ্র। প্রত্যেকের চোখে-মুখে বিজয়ের আনন্দ। সবার অভিমত, বাংলাদেশের নতুন সূর্যোদয় হলো আজকে। এর সেখানে আরো ঘণ্টা দুয়েক থাকা হয়। পুরো সময় জুড়ে মানুষের পদচারণা আর স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে শাহবাগ এলাকা।
মানুষের মুখে একটাই কথা, দুঃশাসন থেকে মুক্ত হলো বাংলাদেশ। নতুন বাংলাদেশের সূচনা হল আজকে।