মৃত্যুর চার বছর পর নির্দোষ প্রমাণিত হলেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র কামাল

মৃত্যুর চার বছর পরে নির্দোষ প্রমাণিত হলেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল। একই সাথে আদালতে জমা দেওয়া জামিনের ৫০ লাখ টাকা কামালের পরিবারকে ফেরত দেওয়ার আদেশ দিয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর একক এই আদেশ দেন। মামলায় অভিযুক্ত অন্য চারজনকেও বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে আহসান হাবিব কামালের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী জানান, সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালসহ বিসিসির তৎকালীন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলনের ঘটনায় মামলা করে দুদক। কিন্তু মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলন করা হলেও তাকে আসামি করা হয়নি।'
তিনি আরও জানান, সড়ক ও জনপদের একজন প্রকৌশলীর তদন্তে আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে বলে দাবি করেছিল দুদক। কিন্তু সেই নির্বাহী প্রকৌশলী উচ্চাদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেননি। স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য বিচার বিশ্লেষণ করে বিচারপতি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। এই কারণে কামালের মৃত্যুর চার বছর পরে ঘোষিত উচ্চাদালতের রায়ে কামালসহ ৫ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালসহ সাত জনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে ২৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন ১৯৯৫ সালে পৌর কোষাগার থেকে এই অর্থ আত্মসাত করার অভিযোগ তোলা হয়। দুদুকের দায়ের করা মামলায় ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর সাত আসামীর মধ্যে দুইজনকে খালাস দিয়ে সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালসহ ৫ জনকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা দেন বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
রায়ের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ০৯ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১৬ জুলাই পর্যন্ত আট মাস কারাগারে থাকেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হলে ৫০ লাখ টাকার জামিননামায় তাকে মুক্তির নির্দেশ দেয় আদালত। নির্দেশনা অনুযায়ী ৫০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার পরও কামালের মুক্তি পেতে তিন মাসেরও বেশি সময় লেগে যায়।
উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ২০২২ সালের ৩০ জুলাই ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আহসান হাবিব কামাল। তিনি বরিশাল দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। কামাল কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯১ সাল থেকে বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান ও প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০০২ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশনে উন্নীত হলে প্রথম ভারপ্রাপ্ত মেয়র মনোনীত হন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শওকত হোসেন হিরণকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।