মূল্যস্ফীতি সহনীয়, আগামীতে আরও কমবে: গভর্নর

মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে সরকার মুদ্রানীতিতে কাজ করছে এবং ইতিমধ্যে তা সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, 'আগামী মাসে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে।'
তিনি আরও বলেন, 'রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এলে স্বাভাবিকভাবেই বিনিয়োগ বাড়বে।'
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে রাজশাহীর কাজীহাটায় এক হোটেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ষান্মাসিক মুদ্রানীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনাসভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনায় রাজশাহী অঞ্চলের ব্যবসায়ী, ব্যাংকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক ও চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজশাহী অফিসের পরিচালক মেজবাউল হক দেশের বর্তমান অর্থনীতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। পরে উন্মুক্ত আলোচনায় সবাই অংশ নেন।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার আলোচনায় ব্যাংক ঋণ, কৃষকের ফসলের দাম ও ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন অসংগতির বিষয় তুলে ধরেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, 'যেখানে ২.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হওয়ার কথা, সেখানে খরচ হয়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলার। অতিরিক্ত খরচের কারণে প্রকল্পটিকে লাভজনক করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। একইসঙ্গে অপ্রয়োজনীয় ও অপরিকল্পিত ব্যয় নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।'
তিনি বলেন, 'ব্যাংকগুলোকে সচল রাখতে তারল্য না দিলে ব্যাংক খাত ধ্বংস হয়ে যেত। ইতিমধ্যে অনেক ব্যাংক ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যেসব ব্যাংক সক্ষমতা দেখাতে পারছে না, তাদের একীভূত করা হবে।'
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সরকারের উদ্যোগ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, 'ইতোমধ্যে অনেকের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে।'
সভায় রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা স্থানীয় ব্যবসা, উদ্যোগ ও রপ্তানি খাতের বিকাশে ব্যাংকিং সুবিধা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ বৃদ্ধির দাবি জানান।
জবাবে গভর্নর জানান, মৎস্য খাতে ঋণ প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম সুবিধা চালু করা হয়েছে।
আলোচনায় উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা চালের দাম, উৎপাদন, মজুতসহ কৃষিভিত্তিক অঞ্চলের নানা সমস্যার কথাও তুলে ধরেন।