আ.লীগের অধীনে হওয়া তিন জাতীয় নির্বাচনের অনিয়ম তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে 'বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত এবং ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রণয়ন কমিটি' গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
সাবেক বিচারপতি শামীম হাসনাইনকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটিকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা বলা হয়।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব শামীম আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপণ, ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরাম হোসাইন এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এসব নির্বাচনে নানা কৌশলে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার অভিযোগ উঠেছে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে এসব নির্বাচনের পরিচালকদের বিরুদ্ধে। এতে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মৌলিক মানবাধিকার বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে, ভবিষ্যতে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখা এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনের আশঙ্কা মোকাবিলায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, তিনটি নির্বাচনের বিষয়ে দেশি-বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক, তদারকি প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সংগঠন ও গণমাধ্যমে উত্থাপিত অভিযোগ বিশ্লেষণ করবে কমিটি। একইসঙ্গে এসব নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ সীমিত করার পেছনে তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের ভূমিকা, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কার্যক্রম, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা পর্যালোচনা করবে। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও যাচাই করবে কমিটি।
এই বিশ্লেষণের ভিত্তিতে উল্লিখিত নির্বাচনগুলোর অনিয়মের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতের নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রয়োজনীয় আইন, বিধি, কমিশনের কাঠামো ও প্রশাসনিক রূপরেখা নিয়ে সুপারিশ দেবে কমিটি।
প্রজ্ঞাপনে আরও জানানো হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে এবং নির্বাচন কমিশন তথ্য ও লজিস্টিক সহায়তা দেবে। প্রয়োজন হলে কমিটি বিভিন্ন দপ্তর থেকে দলিল তলব করতে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। তদন্তের প্রয়োজনে কমিটি অতিরিক্ত সদস্যও কো-অপ্ট করতে পারবে।