সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নেই: প্রেস সচিব শফিকুল

সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশে ব্যবহৃত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত "গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: সাংবাদিক সুরক্ষা ও অভিযোগ নিষ্পত্তিতে আইনি কাঠামোর পর্যালোচনা" শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সভায় প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা ভুল ছিল। কিন্তু কোনো সাংবাদিক বা প্রতিষ্ঠান কি বলতে পারবে, সচিবালয়ে সাংবাদিকের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে?
তিনি বলেন, প্রায় ৬০০ সাংবাদিক সচিবালয়ে প্রবেশের এক্সেস পেয়েছেন । 'তারা যাচ্ছেন, রিপোর্ট করছেন, আমরা তেমন কোনো কমপ্লেইন পাচ্ছি না। তবে এই কাজটা স্লো হয়ে গেছে। সবাইকে খুব দ্রুত অ্যাক্রেডিটেশন দেওয়া উচিত।'
তিনি জানান, এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আমি মনে করি।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নেই এটা ভুল। 'আমি মনে করি, দেশে সাংবাদিকতায় এত ফ্রিডম, যা উন্নত বিশ্বেও নাই।'
তিনি আরও বলেন, 'গত ১০ মাসে বর্তমান সরকার সংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকে কোনো চাপ প্রয়োগ করেনি। কোনো বাধা দেয়নি। যা আওয়ামী লীগ আমলে ছিল।'
অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'গণমাধ্যমে ১৫ বছর ধরে অরাজকতা চলেছে। ফলে অবৈধ নির্বাচনগুলো বৈধতা পেয়েছে। ফ্যাসিজম সেই সুযোগ পেয়েছে।'
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'অনিয়ম ধরার মূল হাতিয়ার গণমাধ্যম। এটা করতে পারলে জালিয়াতির নির্বাচনগুলো ঠেকানো যেত।'
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, 'সংবাদ মাধ্যমের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা পৃথক হতে হবে, নন প্রফিট হতে হবে। নয়তো সেখান থেকে স্বাধীন গণমাধ্যম চর্চা সম্ভব না।'
দ্য ফিন্যান্সিয়াল পোস্টের প্রধান সম্পাদক এম এ আজিজ বলেন, 'সাংবাদিকরাও এখন ট্রমাটাইজ। মালিক ও বাইরের চাপের কারণে মবসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধকতায় ঝুঁকিতে সাংবাদিকরাও।'
সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক ও শিক্ষক পারভেজ করিম আব্বাসী, ফ্যাক্টচেকার ও দ্য ডিসেন্টের প্রতিষ্ঠাতা কদরুদ্দিন শিশির প্রমুখ।