চতুর্থ দিনের মতো সেবাদান বন্ধ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে, ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা

ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইওএইচ) 'জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের' একটি গ্রুপ এবং হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর টানা চতুর্থ দিনের মতো সেবাদান বন্ধ রয়েছে। আজ শনিবার (৩১ মে) হাসপাতালের গেট বন্ধ থাকায় চিকিৎসা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতাল কবে চালু হবে, তা এখনো জানায়নি কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম বলেন, 'পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক ও কর্মীরা কাজে ফিরতে অনিচ্ছুক। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয় উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনও কোনো আশ্বাস পাইনি।'
তিনি আরও জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত চিকিৎসাসেবা চালু করার চেষ্টা করছে। তবে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যেন আবার না ঘটে, সে বিষয়েও সজাগ থাকতে হচ্ছে।
বুধবার (২৯ মে) সকালে নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবিতে হাসপাতালের কর্মীরা প্রতিবাদ করছিলেন। সেই সময় জুলাই আন্দোলনের আহতদের একটি দল কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এই সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মী আহত হন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী।
তিনি অভিযোগ করেন, আহতদের একটি দল যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই মারধর করেছে।
তবে জুলাই আন্দোলনের আহতরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা লাঠি ও রড দিয়ে হাসপাতালের কর্মীদের আবাসিক কোয়ার্টারের জানালা ভেঙে ফেলে। অপারেশন থিয়েটার এবং অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগও ভাঙচুরের শিকার হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত: পরিচালকের কক্ষে উত্তেজনা
হাসপাতাল পরিচালক ডা. খায়ের চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার (২৮ মে) থেকেই উত্তেজনা বাড়ছিল। ওইদিন বিকেলে একটি দল তার কক্ষে আসে, যাদের মধ্যে গত রোববার আত্মহত্যার চেষ্টা করা চারজনও ছিলেন।
তিনি বলেন, 'তারা একে অপরকে দোষারোপ করছিলেন দাতাদের দেওয়া অর্থ ভাগ না করার অভিযোগে। একপর্যায়ে একজন জানান, তার কাছে পেট্রোল আছে। আমি দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাই। এরপর সেনাবাহিনী আসে এবং তারা চলে যান।'
পরদিন সকালে হাসপাতালের কর্মীরা নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন। তখন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয় যখন অন্য রোগীদের স্বজনরাও সংঘর্ষে যুক্ত হন।
দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে, হাসপাতালে ভর্তি থাকা একজন আন্দোলনকারী হিল্লোল বলেন, 'বুধবার আমরা কেউ নিচে নামিনি। মঙ্গলবার কিছু আহত ব্যক্তি পরিচালকের কক্ষে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, তবে বুধবার আমরা কেউ নিচে যাইনি—এর ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে।'