বকেয়া পরিশোধ: জালালাবাদ ৬৫ মিলিয়ন ডলারের গ্যাস প্রকল্প ফের চালু করতে শেভরনকে অনুরোধ সরকারের

সব বকেয়া গ্যাস বিল পরিশোধের পর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তেল ও জ্বালানি কোম্পানি শেভরন-পরিচালিত সিলেটের জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রে বাতিল হওয়া গ্যাস কমপ্রেশন প্রকল্পটির কাজ ফের শুরু করতে কোম্পানিটিকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস কমপ্রেশনের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল পেট্রোবাংলা। শেভরন এ প্রকল্পে ৬৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
তবে ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল শেভরন জানিয়ে দেয়, সব বকেয়া গ্যাস বিল পরিশোধ না করা পর্যন্ত তারা প্রকল্পটির কাজ নিয়ে এগোবে না। সে সময় বকেয়ার পরিমাণ ছিল ২০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ফলে প্রকল্পটি থমকে যায়।
২০২৫ সালের ২১ এপ্রিল পেট্রোবাংলা সব বকেয়া বিল পরিশোধ করে। এর আগের দিন ২০ এপ্রিল শেভরনকে প্রকল্পটির কাজ ফের শুরু করতে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানায়।
জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অর্থ) একেএম মিজানুর রহমান টিবিএসকে বলেন, 'আমাদের বিল পরিশোধে দেরি হওয়ায় শেভরন বিনিয়োগ স্থগিত করেছিল। এখন আমরা সব বিল পরিশোধ করেছি এবং তারা যেন যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করে সে অনুরোধ করেছি।'
এর আগে শেভরন প্রাক্কলন করেছিল, কমপ্রেশন প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে বাড়তি ৩ লাখ ৫২ হাজার এমএমসিএফ গ্যাস উত্তোলন সম্ভব হতো। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
শেভরন বাংলাদেশের সূত্র জানায়, প্রকল্পে বিনিয়োগ স্থগিতের সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছিল টেক্সাসের হিউস্টনের প্রধান কার্যালয় থেকে। নতুন করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্তও সেখান থেকেই আসবে।
টিবিএস শেভরন বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজার শেখ জাহিদুর রহমান বলেন, 'এ সমস্যার সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকার, জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও পেট্রোবাংলার নেওয়া প্রচেষ্টাকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। এ ফলাফল বর্তমান ও সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন দেয়।'
তিনি আরও বলেন, 'গত ৩০ বছর ধরে আমরা বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির অংশীদার ছিলাম এবং এ যাত্রা একসঙ্গে অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা করছি।'
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকারী শেভরন। প্রতিষ্ঠানটির তিনটি অনশোর গ্যাসক্ষেত্র—বিবিয়ানা, জালালাবাদ ও মৌলভীবাজার থেকে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ এমএমসিএফ গ্যাস উত্তোলন হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেভরনের বকেয়া বিল ছিল ২৩৭.৫৫ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২৫ সালের ২১ এপ্রিল সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্র থেকে দৈনিক গড়ে ১৬০.৮২ এমএমসিএফ গ্যাস উৎপাদন হয়।