প্রধান উপদেষ্টার কাছে রাখাইনে ‘মানবিক করিডোর’-এর ব্যাখ্যা জানতে চাইবে বিএনপি

অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য পর্যন্ত একটি 'মানবিক করিডোর' স্থাপনের পরিকল্পনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটি এই পদক্ষেপকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি আখ্যায়িত করে এটি প্রতিহত করার জন্য প্রয়োজনে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়ে উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
বার্তাসংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন যে করিডোর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে তারা সরকারকে একটি চিঠি দেবেন, অথবা প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবেন।
বিএনপি নেতারা জানান, গতকাল (২৮ এপ্রিল) তাদের দলের স্থায়ী কমিটির সভায় গভীর উদ্বেগের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, 'আমরা এখনো বিষয়টি পুরোপুরি জানি না। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি, জনগণ বা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই সরকার একতরফাভাবে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'
মোশাররফ হোসেন জানান, সরকার মানবিক কারণে শর্তসাপেক্ষে এই করিডোর চালু করতে চায় বলে শুনেছেন তারা।
তিনি বলেন, 'কিন্তু সেই শর্তগুলো কী, আমরা জানি না।'
এই সিদ্ধান্ত ও সুনির্দিষ্ট শর্ত সম্পর্কে দেশের মানুষকে স্পষ্টভাবে জানানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
তিনি আরও বলেন, 'আমরাও এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করছি। আমরা বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গেও আলোচনা করব। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, আমাদের দল আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অবস্থান ঘোষণা করবে।'
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তী সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, 'এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে তা বাংলাদেশের নিরাপত্তা, শান্তি, স্থিতিশীলতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও জাতীয় সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করবে।'
সালাহউদ্দিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'মিয়ানমারের কোনো পক্ষের সঙ্গে সামরিক সংঘাত তৈরি করতে পারে, এমন যে কোনো পদক্ষেপই বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হতে পারে।'
তিনি বলেন, 'সুতরাং, এ ধরনের স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে এবং সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ও সর্বসম্মতির ভিত্তিতেই নেওয়া উচিত।
এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, 'আমরা সরকারের কাছে জানতে চাইব—এই মানবিক করিডোর নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো পক্ষের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না। যদি হয়ে থাকে, তাহলে সেই আলোচনার শর্ত কী ছিল? কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো? সরকার যদি এর ব্যাখ্যা দেয়, তাহলে সেই অনুযায়ী আমরা আমাদের পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করব।'