কুমিল্লার লাঞ্চিত হওয়া সেই বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্চনার শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ওরফে কানুর বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের লুদিয়ারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় তিনি, তার স্ত্রী, পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনিরা বাড়িতে ছিলেন।
আবদুল হাই কানু অভিযোগ করেন, যারা আগে তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করেছিলেন, তাদের একটি দল সন্ত্রাসী হামলা চালায়।
হামলাকারীরা রামদা, চায়নিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়ির গেট, দরজা ও জানালায় কুপিয়ে ভাঙচুর করে।
তিনি বলেন, 'ঘরে ঢুকতে পারলে ওরা আমাকে মেরে ফেলত।'
আবদুল হাইয়ের ছেলে ও বাতিসা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে তার বাবাকে লাঞ্ছিত ও মারধর করা হয়। ওই ঘটনায় মামলা হলেও মূল হোতাসহ আসামিরা গ্রেপ্তার হননি।
মামলা তুলে না নেওয়ার জেরেই এ হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, লাঞ্ছনার পর তার বাবা ফেনীতে ছিলেন। প্রশাসনের আশ্বাসে ঈদের সময় পরিবারসহ বাড়ি ফেরেন। 'এমন পরিস্থিতিতে রাতে আবারও হামলা হয়।'
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আবুল হাশেম মজুমদারসহ অন্যদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, হামলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
'প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, যুবলীগ নেতা গোলাম মোস্তফা বাড়িতে অবস্থান করছেন—এমন খবর পেয়ে হামলা চালায় অপর পক্ষ,' বলেন ওসি।
'দুর্বৃত্তরা বাড়ির গেট ও দরজা-জানালায় ভাঙচুর করলেও ঘরে প্রবেশ করতে পারেনি। এর আগেই পুলিশ সেখানে পৌঁছে যায়,' তিনি আরও বলেন।
হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, হামলায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ৭৮ বছর বয়সি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়।
এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়। কানু কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
ওই ঘটনায় পুলিশ পরদিন পাঁচজনকে আটক করে। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ২৪ ডিসেম্বর কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।