হাসিনার শাসনের ‘অপূরণীয় ক্ষতি’র পরে বাংলাদেশকে যেভাবে ধরে রাখার সংগ্রাম করছেন ড. ইউনূস

গত বছরের আগস্ট মাসে ড. ইউনূস যখন বাংলাদেশে ফেরেন, তখন এক অরাজক, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। রাজপথে তখনও লেগে আছে রক্তের দাগ, মর্গে মর্গে তখনও হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী নারী, পুরুষ, শিশুর মরদেহ। যাদের দেহ ঝাঁঝরা হয়েছিল পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর নির্বিচার বুলেটে।
তখন ১৫ বছরের বেশি সময়ের পর সদ্যই ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। আর হেলিকপ্টারে চেপে দেশ ছেড়ে পালান। বিক্ষোভকারী জনতা তখন তার অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে উন্মত্ত; ভাঙচুর চালিয়েছিল গণভবনে।
ড. ইউনূস যখন ক্ষমতার ভার নেন, তখন তাঁর বয়স ৮৪ বছর। বিশ্বখ্যাত এই অর্থনীতিবিদ দরিদ্রদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণের প্রবক্তা ও উদ্ভাবক হিসেবে সমাদৃত। রাজনৈতিক কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা অনেক আগেই তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবু বছরের পর বছর ধরে তাঁকে খলনায়ক বানিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যান হাসিনা। তিনি ড. ইউনূসকে রাজনৈতিক হুমকি বলে মনে করতেন এবং নানান মামলায় তাঁকে হয়রানি আর ভোগান্তির চূড়ান্ত করা হয় দেশের বিচারব্যবস্থায়।
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরুণ নেতৃত্ব যখন তাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে – বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে পুনরুদ্ধারের অনুরোধ করেন – তখন সম্মতি দেন ড. ইউনূস।
ঠিক সেই মূহুর্তে বাংলাদেশের অবস্থা কতটা বিপর্যস্ত ছিল তা নিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন। এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ, আরেকটি গাজার মতো। তবে এতে কোনও ভবন ধ্বংস হয়নি, ধ্বংস হয়েছে প্রতিষ্ঠান, নীতি-নৈতিকতা, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।'
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন উল্লেখ করে, হাসিনার আমল ছিল চরম দুঃশাসন, সহিংসতা ও দুর্নীতির ঘেরাটোপে বন্দি। কিন্তু, জুলাই ও আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় তা রূপ নেয় ভয়াবহ রক্তাক্ত এক অধ্যায়ে। যখন ১,৪০০'র বেশি মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাতিসংঘের মতে, এই হত্যাযজ্ঞকে আন্তর্জাতিক আইনের সংজ্ঞা অনুসারে, 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ' হিসেবে গণ্য হতে পারে। কিন্তু, হাসিনা এখনও ভারতের আশ্রয়ে থেকে এর সব দায় অস্বীকার করে চলেছেন।

এই অবস্থায়, ড. ইউনূসের দেশে ফিরে রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেওয়াকে নতুন যুগের সূচনা হিসেবে দেখেছিল দেশবাসী। তিনি অনেক প্রত্যাশা পূরণও করেছেন। গত ছয় মাসের বেশি সময়ে তাঁর অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তাদেরকে বিচারের সম্মুখীনও করছে— যারা হাসিনার নির্দেশে বিচারবহির্ভুত হত্যার মতো অপরাধের সাথে যুক্ত ছিলেন। হাসিনার গোপন বন্দিশালাগুলোকে খালি করা হয়েছে, এবং মানবাধিকার বিষয়ে কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে, যারা হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শত শত অভিযোগ গঠন করেছে। তবে এসবই হাসিনা অস্বীকার করেছেন।
ড. ইউনূস এরমধ্যেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে বা আগামী বছরের মার্চের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্য দিয়ে দেড় দশকের বেশি সময় পরে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এবং তারপরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন তিনি।
তবে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদক ঢাকায় এসে, বিভিন্নজনের সাথে আলাপ করে গভীর প্রত্যাশা ও হতাশার চিত্রও পান। জনগণের কাছে ইউনূস সম্মানিত হলেও, তাঁর শাসনক্ষমতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রতিশ্রুত সংস্কারগুলোর বাস্তবায়নের গতি না থাকা নিয়েও হতাশাও লক্ষ্য করা যায়।
এদিকে রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ক্ষমতায় আসতে ব্যগ্র, এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তাঁরা ড. ইউনূসের ওপর নির্বাচন আয়োজনের জন্য ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে। অন্যদিকে, গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণরাও নিজেদের রাজনৈতিক দল– জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠন করেছেন, যারা সংস্কারকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।
বিএনপির শীর্ষ একজন নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মনে করেন, দ্রুত (জাতীয়) নির্বাচন হওয়াটাই আগে দরকার। তিনি বলেন, 'এই সরকার শুধুমাত্র অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য গঠন হয়েছিল। এখন কেউই জবাবদিহির সম্মুখীন হচ্ছে না। সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক শক্তি, ম্যান্ডেট বা সক্ষমতাও নেই তাদের (অন্তর্বর্তী সরকারের)।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি
এদিকে হাসিনার শাসনামলের ভূমিকার জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে একটা ক্ষোভ রয়েছে, অনেক পুলিশ সদস্যই আর কাজে ফেরেননি এবং দুর্বল পুলিশিং ব্যবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে থেকে থেকেই। ঢাকার অনেক রাস্তায় কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপরাধী চক্রের উৎপাত বাড়তে দেখা যায়। সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলো হয়রানির শিকার হয়েছে বলেও উল্লেখ করে গার্ডিয়ান।
এরমধ্যে দেশব্যাপী অপরাধীদের দৌরাত্ম ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায়— স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে ঢাকায়। এসময় তাঁর কুশপুত্তলিকাও পোড়ানো হয়েছিল।
হাসিনার শাসনের চেয়ে তার সময়ে রাস্তাঘাট আগের চেয়ে কম নিরাপদ— এমন দাবি অস্বীকার করেছেন ড. ইউনূস। তবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার হুমকি দেখা দিয়েছে বলে অনেকেই মতপ্রকাশ করেন গার্ডিয়ানের কাছে। ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল–এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গার্ডিয়ানকে বলেন, 'আইনশৃঙ্খলার বিদ্যমান পরিস্থিতিতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা অসম্ভব।'
হাসিনার সহযোগী ও ঘনিষ্ঠরা বাংলাদেশের ব্যাংকখাত থেকে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছেন, যা ফেরত আনতে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ডের আর্থিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। তবে খুব শিগগিরই এসব অর্থ ফেরত আসবে এমন সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, দেশে একটি অরাজকতা বিরাজ করছে, এবং সবাই রাজনৈতিক বিভেদ অস্থিরতাকে উস্কে দিচ্ছে। 'নিজেদের মধ্যে হানাহানি বন্ধ না করলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে' বলে এসময় তিনি সতর্ক করেছেন।
তবে সেনাবাহিনীর সাথে তাঁর 'খুব ভালো সম্পর্ক' আছে এবং সেনাপ্রধান তাঁকে কোনো চাপ দিচ্ছেন না বলেও গার্ডিয়ানকে জানান ড. ইউনূস। তবে অন্যরা সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থার প্রতীক হিসেবে দেখছেন, এবং দেশের শাসনক্ষমতা সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করবে বলেও তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
ড. ইউনূস অবশ্য হাসিনার ভয়াল দুঃশাসনের বিপর্যয় থেকে দেশ পুনর্গঠনের বিষয়েই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। হাসিনার শাসনামল সম্পর্কে তিনি বলেন, 'হাসিনার শাসনামলে কোনো সরকার ছিল না, ছিল একটি দস্যু পরিবারের শাসন। সরকারপ্রধানের যেকোনো আদেশই তখন পালিত হতো। কেউ সমস্যা তৈরি করছে? আমরা তাদের উধাও করে দেব। নির্বাচন করতে চান? আমরা নিশ্চিত করব যে আপনি যেন সব আসনে জয়ী হন। আপনি টাকা চান? এই ধরেন ব্যাংক থেকে এক মিলিয়ন ডলার ঋণ, যা আপনাকে কখনোই ফেরত দিতে হবে না।'
গার্ডিয়ান বলছে, হাসিনার শাসনামলের সীমাহীন লুটপাট আর ঋণ জালিয়াতিতে বিপর্যস্ত আজ ব্যাংকখাত, অর্থনীতিও ভঙ্গুর অবস্থানে। তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। যারমধ্যে আছেন তার ভাগ্নি এবং যুক্তরাজ্যের লেবার দলের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। হাসিনার সরকারের থেকে সুবিধাভোগীদের থেকে সম্পত্তি উপহার নেওয়ার অভিযোগ ওঠার পরে যাকে দেশটির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতেও হয়েছে। বাংলাদেশেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। টিউলিপ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
হাসিনার সহযোগী ও ঘনিষ্ঠরা বাংলাদেশের ব্যাংকখাত থেকে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছেন, যা ফেরত আনতে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ডের আর্থিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। তবে খুব শিগগিরই এসব অর্থ ফেরত আসবে এমন সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হচ্ছে।
গার্ডিয়ানকে ইউনূস বলেন, জনগণের আমানত লুটপাট করতে ব্যাংকগুলোকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, যেখানে (তৎকালীন) সরকারের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। তারা বন্দুকধারীদের পাঠিয়ে সই করিয়ে নিত।
ইউনূসের বিরুদ্ধে সম্প্রতি কট্টর ইসলামপন্থি ধর্মীয় ডানপন্থার উত্থান রোধে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগও করা হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনামলে জামায়াতে ইসলামীর মতো ইসলামি দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, এবং ইসলামি রাজনৈতিক নেতাদের ব্যাপক নিপীড়ন করা হয়েছিল। তারা এখন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে এবং সমর্থন বেড়েছে, পাশাপাশি নিষিদ্ধ ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় কট্টর ইসলামি গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপের পর কিশোরী মেয়েদের ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করার ঘটনা ঘটেছ্ এবং গত শুক্রবার নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের শত শত সদস্যকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। ঢাকায় ইসলামিক খিলাফত দাবি করে মিছিল করছিল গোষ্ঠীটির সদস্যরা।
ট্রাম্পের আনুকূল্য লাভের চেষ্টা
বাংলাদেশের বাইরে থেকেও ইউনূসের ওপর কিছু চাপ এসেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার সময় ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উপভোগ করতেন এবং এখন দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে, আর তিনি প্রতিবেশী দেশটিতেই আত্মগোপন করে আছেন। ইউনূসের নেতৃত্বে ভারত এই সম্পর্ক মেরামত করতে খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছে না, এবং সম্প্রতি দিল্লি ঢাকাকে 'সন্ত্রাসবাদকে স্বাভাবিকীকরণ' করার অভিযোগ করেছে।
ডিসেম্বরে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতের কাছে একটি আনুষ্ঠানিক প্রত্যর্পণ অনুরোধ করা হয়েছিল, তবে ইউনূস নিশ্চিত করেছেন যে, ভারত সরকারের কাছ থেকে 'কোনও সাড়া' আসেনি। তিনি বলেছেন, হাসিনা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হবেন, এমনকি যদি তা অনুপস্থিতিতেও হয়।
শেখ হাসিনা ইউনূসের সমালোচনায় আরও সোচ্চার হয়ে উঠছেন: তিনি সম্প্রতি তাকে 'গুন্ডা' বলে অভিহিত করেছেন। তার দাবি, ইউনূস দেশে 'সন্ত্রাসবাদীদের' ছেড়ে দিচ্ছেন।
তবে ইউনূস গার্ডিয়ানকে বলেন, 'ভারত তাকে আশ্রয় দিলে তা সহ্য করা হবে, কিন্তু 'আমাদের করা সবকিছু বাতিল করতে তিনি যে চেষ্টা করছেন, সেখানে ভারতকেএকটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া, বিপজ্জনক। এটি দেশটিকে অস্থিতিশীল করে তোলে।'
ভারত সরকারই ইউনুসের একমাত্র চিন্তার কারণ নয়: ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজে ফেরাও তার জন্য খারাপ খবর। রাজনৈতিক ও আর্থিক উভয় দিক থেকেই বাইডেন প্রশাসন ইউনূসের অন্যতম বড় সমর্থক ছিল। তবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ট্রাম্পের অগ্রাধিকার হওয়ার সম্ভাবনা কম।
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএইডের সহায়তা স্থগিতের ঘটনাতেও গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছে বাংলাদেশ। এই সংস্থাটি বছরে ১০০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দিত। ট্রাম্প এক বক্তব্যে অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে রাজনীতি শক্তিশালী করতে একটি এনজিওকে ২৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার হয়েছে, যতে একটি কট্টর বামপন্থী সরকার নির্বাচিত হতে পারে। যদিও এর কোনো প্রমাণ তিনি দেননি।
এই অবস্থায়, যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে রাখার নানান চেষ্টা করছেন ড. ইউনূস, এবং সম্প্রতি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সমর্থক ধনকুবের ইলন মাস্ককে বাংলাদেশে তার স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক নিয়ে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ইউনূসের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, মাস্কের এপ্রিলে বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা রয়েছে।
ইউনূস আশাপ্রকাশ করেন যে, ট্রাম্প বাংলাদেশকে একটি 'ভালো বিনিয়োগের সুযোগ' এবং বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে দেখতে পারেন। মাস্কের সফরের সময় তাঁকে এই প্রস্তাব দেওয়া হবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'ট্রাম্প একজন ডিলমেকার, তাই আমি তাকে বলব: আসুন, আমাদের সঙ্গেও চুক্তি করুন। যদি তিনি তা না করেন, বাংলাদেশ কিছুটা ব্যথিত হবে। তবে এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেমে থাকবে না।'