কার্গো পরিবহন বাড়াতে বিমান ও উজবেকিস্তানের মাই ফ্রেইটারের চুক্তি

দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার মধ্যে আকাশপথে আরও দ্রুত ও কার্যকর পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও উজবেকিস্তানভিত্তিক মাই ফ্রেইটার সম্প্রতি 'ইন্টারলাইন' চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, এ চুক্তির ফলে বাংলাদেশের পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের বিস্তৃত আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক ও দুবাই ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল (ডিডব্লিউসি) থেকে তাসখন্দ পর্যন্ত মাই ফ্রেইটারের বিশেষায়িত কার্গো পরিষেবার মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ স্থাপিত হবে।
বিমানের একজন কর্মকর্তা জানান, এই নতুন অংশীদারত্বের ফলে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো পণ্য দুবাই হয়ে মাই ফ্রেইটারের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন গন্তব্যে নির্বিঘ্নে পৌঁছানো যাবে।
আশা করা হচ্ছে, এই উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য—যেমন তৈরি পোশাক, ওষুধ ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী—মধ্য এশিয়ার বাজারে আরও সহজে প্রবেশ করতে পারবে। একইসঙ্গে ঢাকা থেকে উজবেকিস্তান ও তার আশপাশের দেশগুলোতে পণ্য পৌঁছানোর সময়ও অনেকটা কমে আসবে।
বিমাবের বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নেটওয়ার্ক মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে বিস্তৃত। বিশ্বের অন্যতম প্রধান ট্রানজিট হাব দুবাইয়েও সংস্থাটির নিয়মিত কার্গো ফ্লাইট রয়েছে।
বিমান চলাচলবিষয়ক সংবাদমাধ্যম কার্গো এয়ারপোর্টস অ্যান্ড এয়ারলাইন সার্ভিসেস-এর তথ্যমতে, নতুন চুক্তির ফলে ঢাকা-দুবাই-তাসখন্দ রুটে একক এয়ারওয়ে বিলেই সমন্বিত ও বহুমুখী পণ্য পরিবহনের সুযোগ মিলবে।
মাই ফ্রেইটারের ফার্স্ট ডেপুটি সিইও এবং সিসিও মামুর মামাদালিয়েভ দ্য স্ট্যাট ট্রেড টাইমসকে বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে তাদের বহরের উড়োজাহাজের সংখ্যা ৩০টি থেকে ৫০টিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বর্তমানে মাই ফ্রেইটারের বহরে রয়েছে আটটি বোয়িং ৭৬৭ ফ্রেইটার ও একটি বোয়িং ৭৫৭এফ। সর্বশেষ বোয়িং ৭৬৭এফ যুক্ত হয়েছে চলতি বছরের মে মাসে।
কার্গো পরিবহনের পাশাপাশি মাই ফ্রেইটার সেন্ট্রাম এয়ার ব্র্যান্ডের অধীনে চার্টার ও যাত্রীবাহী উড়োজাহাজও পরিচালনা করে। এ বহরে রয়েছে এয়ারবাস এ৩২০, এ৩২০নিও, এ৩২১নিও ও একটি এ৩৩০ এয়ারক্রাফট।
অন্যদিকে বিমানের বহরে রয়েছে ২০টি উড়োজাহাজ, যার মধ্যে বোয়িং ৭৩৭, ৭৭৭ ও ৭৮৭ ড্রিমলাইনার এবং ডি হ্যাভিল্যান্ড কানাডা ডিএইচসি-৮-৪০০ টার্বোপ্রপ উড়োজাহাজ রয়েছে।
বিমানের সঙ্গে এ চুক্তি এমন সময়ে হলো, যার কিছুদিন আগে মাই ফ্রেইটার আইসল্যান্ডএয়ার কার্গো-র সঙ্গেও অংশীদারত্ব ঘোষণা দিয়েছে।
আইসল্যান্ডএয়ারের সঙ্গে চুক্তির ফলে মাই ফ্রেইটারের কার্যক্রম উত্তর ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ উত্তর আমেরিকায় বিস্তৃত হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা সামুদ্রিক খাবার ও অন্যান্য পচনশীল বা দ্রুত নষ্ট হওয়া পণ্য পরিবহনের জন্য নতুন রুট চালুর সুযোগ পেয়েছে।
মাই ফ্রেইটার বলছে, এসব অংশীদারিত্বের মাধ্যমে মধ্য এশিয়া থেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক বাজারে, বিশেষ করে পোশাক, স্বাস্থ্য, ই-কমার্স ও উচ্চমূল্যের কার্গো পরিবহনে আরও মানসম্মত, আধুনিক ও এন্ড-টু-এন্ড লজিস্টিক্স পরিষেবা গড়ে তোলাই তাদের কৌশল।