ধূমপান করায় স্থানীয়দের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা, ২ তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় আনল পুলিশ

রাজধানীতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই নারী শিক্ষার্থীর 'ধূমপান করাকে' কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১ মার্চ) রাতে আসাদ গেইট-সংলগ্ন আড়ংয়ের আউটলেটের পাশে একটি চায়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে মোহাম্মদপুর থানায় নিয়ে যায়।
পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ওই দুই শিক্ষার্থীকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান টিবিএসকে বলেন, আসাদগেটের কাছে এক তরুণীর ধূমপান করা কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটমাট করে দেওয়া হয়।
শনিবার (১ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে দিকে রাজধানীর লালমাটিয়ায় এনএইচএ টাওয়ারের কাছে এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ রয়েছে, ৬০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি ফুটপাতের একটি চা দোকানের চেয়ারে বসে থাকা বিশ বছর বয়সি ওই দুই তরুণীকে উঠে যেতে বলেন। দুজন কারণ জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হয়ে চা দোকানের মালিককে সব চেয়ার সরিয়ে ফেলতে বলেন।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার দাবি, ওই ব্যক্তির রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, এরপর তিনি দুই তরুণীর উদ্দেশে অশালীন ভাষায় চিৎকার করেন। অভিযোগ রয়েছে, এক পর্যায়ে এক তরুণী ক্ষুব্ধ হয়ে তার দিকে চা ছুঁড়ে মারেন। তখন ওই ব্যক্তি তার চুল ধরে মারধর শুরু করেন।
ঘটনার সময় আশপাশের কিছু পুরুষও দুই তরুণীকে গালিগালাজ করতে শুরু করে। পথচারীদের মধ্যে দুজন তাদের সাহায্যের চেষ্টা করলে জড়ো হওয়া জনতার একটি অংশ তাদেরও মারধর করে বলে জানা গেছে।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
ওই ব্যক্তি দাবি করেন, তরুণীরা গাঁজা সেবন করছিলেন। যদিও তারা তা অস্বীকার করে বলেছেন, তারা শুধু সিগারেট খাচ্ছিলেন।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তেজগাঁও বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মো. ইবনে মিজান জানান, 'ধূমপানকে কেন্দ্র করে দুই তরুণীকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে মোহাম্মদপুর থানায় নিয়ে যায়।'
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হয় এবং দুই তরুণীকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ভুক্তভোগীদের এক বন্ধুর ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী, মব দুই তরুণীকে ঘিরে রাখার পর তাদের হয়রানি অব্যাহত ছিল। পোস্টে আরও বলা হয়, '১০-১২ জন পুরুষ তাদের চড় ও ঘুষি মারে এবং সেই দৃশ্য ভিডিও করে।'
এছাড়া, ফেসবুকে লাইভ করার সময় মব তাদের ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও মুছে ফেলে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের এক বন্ধু জানান, 'আমরা ৯৯৯-এ ফোন করি। এরপর পুলিশ আসে... কিন্তু তাদের উপস্থিতিতেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। মবের আক্রমণের মুখে পুলিশ আমাদের হেফাজতে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানায় নিয়ে যায়।'