ভিসির পদত্যাগের দাবিতে অনড় কুয়েট শিক্ষার্থীরা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় উপাচার্য, প্রো-ভিসি ও ছাত্র পরিচালকের পদত্যাগের দাবিতে অনড় অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তারা তাদের দাবি তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীরা জানান, বর্তমান প্রশাসনের অধীনে তারা কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না, কারণ তারা নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন না।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এখনো উপাচার্যের মুখ থেকে স্পষ্টভাবে জানতে পারিনি, ছাত্রদল এই হামলার সঙ্গে জড়িত কি না। প্রশাসনের নীরবতা আমাদের শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।
তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান সরকার ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতায় রয়েছে। তিন দিন পার হয়ে গেলেও সরকারের কোনো উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
উল্লেখ্য, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা প্রচারণা কার্যক্রম চালায়। এর প্রতিবাদে একদল শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। তারা 'ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না', 'রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই' বলে স্লোগান দেন। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সেই সংঘর্ষ চলমান ছিল। পরে যৌথ বাহিনীর উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে থাকে।
শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে খানজাহান আলী থানায় কুয়েটের নিরাপত্তা পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান লিটন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখ বলেন, 'মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসী কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে'।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (নর্থ) আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, 'মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে'।