Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

সমুদ্রে ভয় দুর্যোগের, তীরে ফিরে মহাজনের দাদনে জিম্মি উপকূলের জেলেরা

বহুকাল ধরে চলে আসা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে দারিদ্র্যের শেকলে বাঁধা উপকূলের জেলেদের জীবন। সমুদ্রে গিয়ে দুর্যোগের আতঙ্ক কাটিয়ে কিনারে ফিরতে না ফিরতেই পড়তে হয় দাদনদারদের রোষানলে। হিসাব বুঝিয়ে দিতে হয় কড়ায়-গণ্ডায়। অনেককেই ঘরে ফিরতে হয় শূন্য হাতে। এর সাথে রয়েছে জীবনের ঝুঁকি। গভীর সাগরে থাকলে পুরোপুরি প্রকৃতি দেখে গতিপথ চিহ্নিত করতে হয় জেলেদেরকে।
সমুদ্রে ভয় দুর্যোগের, তীরে ফিরে মহাজনের দাদনে জিম্মি উপকূলের জেলেরা

বাংলাদেশ

মো. জাহিদুল ইসলাম
08 December, 2022, 10:10 am
Last modified: 08 December, 2022, 10:22 am

Related News

  • ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে যাচ্ছেন জেলেরা
  • সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা, দুর্ভোগে বনজীবীরা
  • মোংলায় জাহাজের ডাকাতির মালামাল আংশিক উদ্ধার, আটক ৩
  • সাগরের মাছ নিয়ে কাটছে দিন, জাহাজে বসবাসও রোমাঞ্চকর!
  • চট্টগ্রামে প্লাস্টিক বর্জ্যের ৭৩ শতাংশ রিসাইক্লিং হচ্ছে: কর্মশালায় বক্তারা 

সমুদ্রে ভয় দুর্যোগের, তীরে ফিরে মহাজনের দাদনে জিম্মি উপকূলের জেলেরা

বহুকাল ধরে চলে আসা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে দারিদ্র্যের শেকলে বাঁধা উপকূলের জেলেদের জীবন। সমুদ্রে গিয়ে দুর্যোগের আতঙ্ক কাটিয়ে কিনারে ফিরতে না ফিরতেই পড়তে হয় দাদনদারদের রোষানলে। হিসাব বুঝিয়ে দিতে হয় কড়ায়-গণ্ডায়। অনেককেই ঘরে ফিরতে হয় শূন্য হাতে। এর সাথে রয়েছে জীবনের ঝুঁকি। গভীর সাগরে থাকলে পুরোপুরি প্রকৃতি দেখে গতিপথ চিহ্নিত করতে হয় জেলেদেরকে।
মো. জাহিদুল ইসলাম
08 December, 2022, 10:10 am
Last modified: 08 December, 2022, 10:22 am

উপকূলবর্তী জেলা কক্সবাজারের মহেশখালীর ৩৫ বছর বয়সী জেলে বশির আহমেদ প্রায় ২০ বছর ধরে গভীর সাগরে গিয়ে মাছ শিকার করে আসছেন। 

বশিরের পূর্বপুরুষ থেকেই জেলে পেশায় সম্পৃক্ত। 

আঠারো শতকে বাংলায় ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চালু করা 'দাদন' পদ্ধতিতেই চলছে তাদের জীবিকা। মাছ শিকারে গিয়ে ৮/১০ বার ঝড়ের কবলেও পড়েছেন বশির। 

বশির আহমেদ দ্য বিজনেজ স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমি মহাজনের কাছে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে শ্রমিক হিসেবে এক বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। প্রতি মাসে দুইবার গভীর সমুদ্রে যাওয়া হয় মাছ শিকার করতে।" 

চুক্তির প্রথমে বশিরকে একবার ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে এবং বাকি টাকা প্রতি মাসে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। 

তাছাড়া, মহাজনের সাথে চুক্তি করায় তাদের মাছ বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। আবার অসুস্থতার কারণে সাগরে যেতে না পারলে কেটে রাখা হয় টাকা।

ছবি- মো. জাহিদুল ইসলাম/ টিবিএস

৫ম শ্রেণির পড়াশুনা শেষ করার আগেই অভাবী সংসারের হাল ধরতে মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকে বশির তার পিতার সাথে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যায়। ৫ বছর ধরে তার পিতা অসুস্থ থাকায় একমাত্র বশিরের উপার্জনে ভর করেই চলছে পরিবার। 

বশিরের মতো ২৩ জন জেলে এক মাঝির আওতায় বোটে মাছ ধরতে যায় গভীর সমুদ্রে। 

এদের মধ্যে বয়স ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয় বেতন। কেউ বছরে ১ লাখ টাকা আবার কেউ ২.৫ লাখ টাকা মজুরি পায়।

মাছ ধরার বড় বোটে একজন মাঝি (লিডার), একজন মিস্ত্রী, একজন শেফসহ ২২ থেকে ২৮ জন জেলে গভীর সমুদ্রে যায় মাছ শিকার করতে। 

প্রতিবার মাছ শিকারে গিয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত সাগরে অবস্থান করে জেলেরা। প্রতি ট্রিপে প্রায় দুই হাজার লিটার তেল, খাবার খরচসহ প্রায় ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়। যা সম্পূর্ণ মালিক বহন করে। 

প্রতি ট্রিপে ৫ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত মাছ বিক্রি হয়।

ছবি- মো. জাহিদুল ইসলাম/ টিবিএস

বশির বলেন, "পাঁচ জনের পরিবার একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমি। সাগরে গিয়ে মাছ ধরতে পারলে সংসারের চাকা ঘুরে, অন্যথায় না খেয়ে কাটাতে হয়। তিন বছরের বাচ্চাকে খাওয়াতে পারি না পুষ্টিকর কোনো খাবার। অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলেও সুযোগ হয় না শহরের ডাক্তারের কাছে যাওয়ার। বাড়ির পাশের ফার্মেসিই ভরসা। মাছ ধরা বন্ধকালীন সময়ে কোনো কাজ থাকে না। অন্য কিছু করারও সুযোগ নেই। মাঝে মাঝে দিনে এক বেলা খেয়েও কাটাতে হয়।"

মাছ ধরা শুরু করার পর এ পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ বার ঝড়ের কবলে পড়েছেন বশির।

তার জীবদ্দশায় মাছ শিকারের পদ্ধতি এবং গভীর সাগরে থেকে পানির প্রবাহ ও রং দেখে দুর্যোগের সময় চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ার তেমন কোনো উন্নতি দেখতে পাননি। 

এছাড়া বছরের ৮৭ দিনই মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকা সময়ে ধার-দেনায় চলতে হয় তাকে। তিনি পান না সরকারি কোনো সহযোগিতাও।

উপকূলবর্তী জেলা বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার জিনতলা এলাকার জেলে আব্দুল মঈন টিবিএসকে বলেন, "আমরা যখন মাছ ধরে তীরে আসি তখন রেডিও কিংবা কোস্ট গার্ডের মাধ্যমে আবহাওয়ার সংকেত সম্পর্কে জানতে পারি।"

ছবি- মো. জাহিদুল ইসলাম/ টিবিএস

"কিন্তু গভীর সাগরে থাকলে পুরোপুরি প্রকৃতি দেখে গতিপথ চিহ্নিত করতে হয়। প্রকৃতির উপর নির্ভর করেই সাগরে যেতে হয়। বেশ কয়েকবার ঝড়ের কবলেও পড়তে হয়েছে," বলেন তিনি।

মহেশখালীর আর এক জেলে ওমর ফারুক টিবিএসকে বলেন, "দুর্যোগে পূর্বাভাসের জন্য আমাদের একমাত্র রেডিও ব্যতীত অন্য কোনো পন্থা নেই। সেটাও গভীর সমুদ্রে পাওয়া যায় না।"

পড়তে হয় দাদনদারদের রোষানলে

দাদন একটি নগদ ঋণ যা সাধারণত কৃষকদেরকে দেওয়া হয়। এই ঋণ শোধ করতে হয় পণ্যের আকারে, যার মূল্য থাকে পূর্বনির্ধারিত। এই মূল্য সাধারণত বাজারের স্বাভাবিক হারের চেয়ে কম হয়ে থাকে।

মঈন বলেন, "অবরোধের সময় অন্য কোনো কাজের সুযোগ নেই। তাই বাধ্য হয়ে মহাজন থেকে টাকা ধার এনে চলতে হয়। আমি এ বছর ১ লাখ টাকা দাদন নিয়েছি মহাজন থেকে এবং মাছ ধরে এনে তার কাছেই বিক্রি করতে হচ্ছে।"

ছবি- মো. জাহিদুল ইসলাম/ টিবিএস

তিনি জানান, মাছ বিক্রির টাকা থেকে শতকরা ৮ টাকা মহাজনকে দিতে হয়। 

"কারো বোটে গেলেও টাকা তেমন পাই না, তেমনি কয়েকজন জেলে মিলে নিজেরা সাগরে গিয়ে মাছ ধরে নিয়ে আসলেও মহাজনের নির্দিষ্ট আড়তে বিক্রি করতে হয়," যোগ করেন তিনি।

শুধু মহেশখালীর বশির আহমেদ কিংবা পাথরঘাটার আব্দুল মঈন নন, উপকূলবর্তী সকল জেলেদেরই এই একই পদ্ধতিতে চলতে হয়।

বহুকাল ধরে চলে আসা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে দারিদ্র্যের শেকলে বাঁধা উপকূলের জেলেদের জীবন। সমুদ্রে গিয়ে দুর্যোগের আতঙ্ক কাটিয়ে কিনারে ফিরতে না ফিরতেই পড়তে হয় দাদনদারদের রোষানলে। হিসাব বুঝিয়ে দিতে হয় কড়ায়-গণ্ডায়। অনেককেই ঘরে ফিরতে হয় শূন্য হাতে।

ছবি- মো. জাহিদুল ইসলাম/ টিবিএস

দিন আনা দিন খাওয়া জেলে পরিবারের এ অবস্থা বদলায় না, হয়না নিজস্ব তেমন কোনো সম্পত্তি। সম্প্রতি কক্সবাজারের মহেশখালী ও বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা ঘুরে জেলেদের এ চিত্র সম্পর্কে জানা যায়।

অধিকাংশ মৎস্যজীবী-জেলে দরিদ্র, নিজেদের নৌকা বা জাল নেই। তারা কাজ করেন দৈনিক মজুর হিসাবে। তারা সবসময় নৌকার মালিক বা মহাজনের কাছ থেকে আগাম-ঋণ বা দাদন নিয়ে থাকেন। নৌকার মালিকের সাথে জেলেদের কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তিপত্র থাকে না।

২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৬ লাখ ২০ হাজার। এদের মধ্যে ১৪ লাখ ২০ হাজার জেলের মাঝে পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়েছে। সাগরে মাছ শিকার করতে যাওয়া দেশে বর্তমানে দুশরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার এবং ৬৮ হাজারের মতো দেশীয় ইঞ্জিনচালিত নৌকা রয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ শিকারে আসে ভারতীয় জেলেরা

ছবি- মো. জাহিদুল ইসলাম/ টিবিএস

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, অক্টোবরে মা ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, মার্চ-এপ্রিল মাসে ইলিশের ছয় অভয়াশ্রমে ৬০ দিনের নিষেধাজ্ঞা এবং এরপর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকে।

মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেদের উৎপাত বেড়ে যায় বাংলাদেশি সমুদ্রসীমাতে। এমনকি ভারতীয় জেলেরা সমুদ্র থেকে নদীর মোহনায় এসেও মাছ শিকার করে নিয়ে যায়।

এসময় মাছ ধরতে এসে বাংলাদেশি কোস্টগার্ডের হাতে আটকও হচ্ছেন তারা। তবে তাদের দাবি, সমুদ্রে বাতাসের তোড়ে তারা বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়েন। আর বাংলাদেশি জেলেদের দাবি এটা তাদের অজুহাত। 

মহেশখালীর মাতারবাড়ি এলাকার জেলে মো. তৈয়ব (৬৫) টিবিএসকে বলেন, "গভীর সমুদ্রে আমাদের জলসীমার মধ্যে প্রবেশ করে প্রায় ৫ ধরনের জাল ফেলে ভারতীয় জেলেরা মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। আমাদের যেখানে এক বোট মাছ শিকার করতে ১২ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে সেখানে তারা ২/৩ দিনের মধ্যেই বোট ভর্তি করে মাছ শিকার করে ফিরে যায়।"

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী টিবিএসকে বলেন, বরগুনা জেলায় তিন হাজারের মতো ট্রলার রয়েছে যেগুলো নদীতে ও সাগরে মাছ ধরতে যায়। জেলে, মাঝিসহ তারা আড়ৎদারদের কাছে জিম্মি।

ছবি- মো. জাহিদুল ইসলাম/ টিবিএস

তিনি বলেন, "অবরোধের সময়টাকেই কাজে লাগিয়ে কৌশলে ভারতের জেলেরা আমাদের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে। আমরা বিভিন্ন সময় বিষয়গুলো নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি কিন্তু কোনো সুরহা হয়নি। এমন চলতে থাকলে মাছের এ ব্যবসাই থাকবে না।"

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের অপারেশন অফিসার লে. কমান্ডার শহিদুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, "বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতীয় কিংবা অন্য কোনো দেশের জেলেরা প্রবেশ করলেই আমরা তাদের ধরে ফেলি। এটি বেশি ঘটছে মংলাতে। আমাদের যা জনবল আছে তা দিয়েই সর্বোচ্চ চেষ্টা করি সমুদ্র সুরক্ষিত রাখতে।"

গভীর সমুদ্রে কোস্ট গার্ডের তৎপরতা নেই এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, "আমাদের জাহাজ গভীর সমুদ্রেও নিয়মিত টহল দেয়। এছাড়া নৌ বাহিনীর জাহাজও বাংলাদেশের জলসীমায় টহল দেয়।"

জেলেরা পান না কোনো সহায়তা

ছবি- মো. জাহিদুল ইসলাম/ টিবিএস

জেলেরা বলছেন, বছরজুড়ে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকার নামমাত্র চাল সহায়তা দিলেও তা অধিকাংশ জেলে পান না। অনেকে জেলে নন, তারাও এ সহায়তা পাওয়ায় প্রকৃত জেলেরা বঞ্চিত হন। এ নিষেধাজ্ঞার জাঁতাকলে তাই ধারদেনায় বছর বছর জর্জরিত উপকূলের জেলেরা।

পাথরঘাটার চরলাঠিমারা ইউনিয়নের জেলে খায়রুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, "বছরের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতেই যদি নদী ও সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকে তাহলে এ পেশায় থেকে লাভ টা কী?"

২২ দিনের অবরোধের সময় সরকার যে ২৫ কেজি চাল দেয় তাতে ১০ দিনই চলে না। তারপরে অন্যসব খরচ তো আছেই, যোগ করেন তিনি।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) ও কোস্ট ফাউন্ডেশন যৌথভাবে ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত একটি গবেষণা অনুযায়ী, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ৮ হাজার ৬৪৪টি পরিবারের মধ্যে ৮০% পরিবারই একজনমাত্র উপার্জনকারীর আয়ের ওপর নির্ভরশীল। 

ছবি- মো. জাহিদুল ইসলাম/ টিবিএস

এসব পরিবারের মোট ১০ হাজার ৮২ জন মৎস্যকেন্দ্রিক পেশায় জড়িত। 

জরিপে অংশ নেওয়া মৎস্যশ্রমিকদের মধ্যে দেখা যায়, সাড়ে ৪২% জেলে কার্ডধারী। তবে এলাকাভেদে এ সংখ্যায় ভিন্নতা রয়েছে।

পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নে সাড়ে ৬৬ শতাংশ জেলে কার্ডধারী হলেও কুতুবজোম ইউনিয়নে তা ৩০ শতাংশ।

কক্সবাজার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন টিবিএসকে বলেন, "আমরা কারো থেকে কোনো লোন পাইনা। তাই বাধ্য হয়ে দাদনদার ও চড়া সুদে বিভিন্ন এনজিও কিংবা ব্যক্তির থেকে লোন নিতে হয়। দাদনের ক্ষেত্রে প্রতি এক লাখ টাকার জন্য প্রতি ট্রিপে (৮ থেকে ১৬ দিন) ৭ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়। এছাড়া মহাজনের নির্ধারিত আড়তেই মাছ বিক্রি করতে হয়। কৃষি ক্ষেত্রে কৃষকরা ঋণ পেলেও জেলে কিংবা বোট মালিকদের জন্য কোনো লোনের ব্যবস্থা নেই।"

তিনি বলেন, "আমাদের কোনো জেলে সমস্যায় পড়লে কিংবা মৃত্যু হলে ট্রলার মালিকরা এককালীন সাহায্যসহ সাধ্যমতো পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। কারো মৃত্যু হলে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয় যদিও এটা খুবই সামান্য তার পরিবারের জন্য। কিন্তু সরকার জেলে কিংবা ট্রলার মালিক কারো পাশেই দাঁড়ায় না।"

ছবি- মো. জাহিদুল ইসলাম/ টিবিএস

কোস্ট ফাউন্ডেশনের যুগ্ম পরিচালক মো. মুজিবুল হক মুনির টিবিএসকে বলেন, "সরকারের উচিত তাদের জন্য আলাদাভাবে সুরক্ষার কর্মসূচি হাতে নেওয়া। জেলেদের জন্য ভ্রাম্যমাণ কিছু হাসপাতালও তৈরি করা উচিত।" 

"পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে সমন্বয় করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিত। নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের যে চাল দেওয়া হয় তা যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে জেলেদের চাল না দিয়ে টাকার অঙ্ক বাড়িয়ে জেলেদের দেওয়া হলে কিছুটা হলেও সংকট কমবে," বলেন তিনি।

মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান টিবিএসকে বলেন, একটি প্রকল্পের মাধ্যমে জেলেদের রোটগুলো ট্রাকিং এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

"অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই প্রাথমিকভাবে আমরা উপকূলের ১ হাজারটি বোটে এ ডিভাইস স্থাপন করবো। এর মাধ্যমে গভীর সমুদ্রেও আমরা বোটের অবস্থান চিহ্নিত করতো পারবো। বিভিন্ন সময় দুর্যোগের পূর্বাভাসও পাবে এ ডিভাইসের মাধ্যমে।"

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এস এম রেজাউল করিম টিবিএসকে বলেন, "উপকূলীয় জেলেদের জন্য দুইবারে ৪০ কেজি ও ২৫ কেজি করে চালের যে সাহায্য প্রদান করা হয়। এর বাহিরে নতুন কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে প্রয়োজন ও পরিস্থিতি আলোকে আমরা ব্যবস্থা নিবো।"

সরকারি অনুদান জেলেদের কাছে না পৌঁছানোর বিষয়ে তিনি বলেন, "আমরা প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়নে জেলেদের কাছে অনুদানের চাল পৌঁছে দিতে কমিটি করে দিয়েছি। তারা সেগুলো নিয়মিত পর্যালোচনা করছে। এখানে কেউ না পেলে অভিযোগ করারও সুযোগ আছে।"

ইলিশসহ মিঠা পানির ফিনফিশ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বিশ্বের বাকি দেশগুলোর তুলনায় দ্বিতীয় অবস্থানে রেখেছে জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) কর্তৃক প্রকাশিত দ্য স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার-২০২২।

বাংলাদেশে উন্মুক্ত জলাশয় থেকে মোট ১.৩ মিলিয়ন টন মাছ আহরণ করা হয়।

এফএও-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদে বাংলাদেশের অবস্থান ২৮তম। সমুদ্র থেকে বাংলাদেশ ৬৭০,০০০ টন মাছ সংগ্রহ করে। আর শীর্ষ অবস্থানে থাকা চীন ১.১৭ কোটি টন সামুদ্রিক মাছ আহরণ করে।

দেশের মোট মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩.৫৭% কৃষি অবদান রাখে এবং কৃষি জিডিপির ২৬.৫০% মৎস্য অবদান রাখে।

মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন হয়েছে ৬ লাখ ৮১ হাজার মেট্রিক টন, যা দেশের মোট মাছ উৎপাদনের ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

 

Related Topics

টপ নিউজ

জেলে / মাছ ধরা / মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা / জেলে উদ্ধার / কোস্ট গার্ড

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে ইরান, আইন প্রণয়ন করছে
  • ইরান কেন রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে
  • চট্টগ্রামে ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে গেস্টহাউসে তল্লাশির ভিডিও ভাইরাল, আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন
  • ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সাবেক হাইকমিশনার মুনা তাসনিম ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু
  • “তেহরানের আকাশ এখন আমাদের দখলে”—ইসরায়েলের দাবি, কিন্তু বাস্তবতা কী?
  • ‘মেয়র’ পরিচয়ে নগর ভবনে সভা করলেন ইশরাক

Related News

  • ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে যাচ্ছেন জেলেরা
  • সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা, দুর্ভোগে বনজীবীরা
  • মোংলায় জাহাজের ডাকাতির মালামাল আংশিক উদ্ধার, আটক ৩
  • সাগরের মাছ নিয়ে কাটছে দিন, জাহাজে বসবাসও রোমাঞ্চকর!
  • চট্টগ্রামে প্লাস্টিক বর্জ্যের ৭৩ শতাংশ রিসাইক্লিং হচ্ছে: কর্মশালায় বক্তারা 

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে ইরান, আইন প্রণয়ন করছে

2
আন্তর্জাতিক

ইরান কেন রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে

3
বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে গেস্টহাউসে তল্লাশির ভিডিও ভাইরাল, আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন

4
বাংলাদেশ

২ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সাবেক হাইকমিশনার মুনা তাসনিম ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু

5
আন্তর্জাতিক

“তেহরানের আকাশ এখন আমাদের দখলে”—ইসরায়েলের দাবি, কিন্তু বাস্তবতা কী?

6
বাংলাদেশ

‘মেয়র’ পরিচয়ে নগর ভবনে সভা করলেন ইশরাক

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab