৬ বছরে দারিদ্র্যসীমার উপরে উঠেছে ৮০ লাখ বাংলাদেশি: বিশ্বব্যাংক

২০১০ ও ২০১৬ সালের মধ্যে ৬ বছরে ৮০ লাখ বাংলাদেশি দারিদ্র্যসীমার উপরে উঠে এসেছে বলে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ পোভার্টি অ্যাসেসমেন্ট’ র্শীষক প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। তবে দারিদ্র দূরীকরণে গতানুগতিক ধারার সাথে নতুন সমাধান দরকার বলে এতে বলা হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ মানোন্নয়নের বেশিরভাগ শ্রমিকদের আয়ের ফলে হয়েছে বলেও এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে দেখানো হয়, ২০১০ সাল থেকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়লেও দারিদ্র্য দূরীকরণ হার কমেছে। আর দেশে দারিদ্র্য দূরীকরণ হয়েছে অসমভাবে।
অর্থাৎ ২০১০ সাল থেকে পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভাগগুলোর মধ্যে দারিদ্র্যের গতানুগতিক ব্যবধান রয়েই গেছে। পশ্চিমাঞ্চলে, রংপুর বিভাগে দারিদ্র্য বৃদ্ধি পেয়েছে, রাজশাহী ও খুলনায় স্থিতিশীল রয়েছে, পূর্বাঞ্চলে হ্রাস পেয়েছে সহনীয় মাত্রায় এবং বরিশাল, ঢাকা এবং সিলেটে দ্রুত দারিদ্র্য কমেছে।
"বাংলাদেশ গত দশকে দারিদ্র্যের হার হ্রাসে যে অগ্রগতি করেছে তা উল্লেখযোগ্য", বলে উল্লেখ করেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ-ভুটান) মার্সি টেম্বন।
"তবে, প্রতি চারজনের মধ্যে একজন এখনও দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছেন। আর তাই দারিদ্র্যের নতুন সীমাকে মোকাবিলায় বাংলাদেশকে আরও কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, নগরীর দারিদ্র্য মোকাবিলা খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। বর্তমান প্রবণতায় ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্ধেকেরও বেশি দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর বসবাস শহরাঞ্চলে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এব্যাপারে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন।"
এ সময়ের মধ্যে, গ্রামীণ এলাকায় ৯০ ভাগ দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব। অন্যদিকে শহরাঞ্চলে এই হার খুবই কম এবং এ অঞ্চলে অতি দারিদ্র্যের হারের তেমন কোন পরিবর্তন হয় নি। যা দারিদ্র্য দূরীকরণে জাতীয় উন্নয়নকে মন্থর করে দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে দারিদ্র্যের প্রথাগত চলকগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। "তবে অগ্রগতি আনতে এর কয়েকটি চলকের সীমাবদ্ধতার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে", বলেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ও প্রতিবেদনের সহ-লেখক মারিয়া ইউজেনিয়া জেনোনি।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নীতি নির্ধারক, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাত ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।