কুড়িগ্রামে চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদী ভাঙন

কুড়িগ্রামে দ্বিতীয় দফায় বন্যা শুরু হওয়ায় নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দেওয়ায় লোকজনের ঘর-বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর, গলদিপাড়া, গারুহারা এবং ওয়াপদার হাট এলাকার প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্র অনুযায়ী- রোববার বিকেল তিনটায় সদর উপজেলার ধরলা ব্রিজ পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং কাউনিয়া উপজেলার কাউনিয়া ঘাট পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, সদর উপজেলার নুনখাওয়া পয়েন্টে দুধকুমারের পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং চিলমারী উপজেলার চিলমারী ঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় মোগলবাসা ইউনিয়নের কিসামত মালভাঙ্গা গ্রামে ধরলা নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রক্ষায় বালুর বস্তা ফেলেছে। হুমকির মুখে পড়েছে, ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, দোকানপাট ও মসজিদ।
মোগলবাসা ইউনিয়নের কিসামত মালভাঙ্গা গ্রামের পল্লীগ্রাম জামে-মসজিদের মুয়াজ্জিন কাশেম আলী জানান, এই জামে-মসজিদে প্রায় ২০০ পরিবারের লোকজন নামাজ পড়ে। ধরলা নদীর ভাঙনে এই মসজিদটি হুমকির মুখে পড়েছে, যেকোন মুহুর্তে নদী গর্ভে চলে যেতে পাড়ে।
মোগলবাসা ইউনিয়নের কিসামত মালভাঙা গ্রামের আবু হোসেন মাস্টার (৭০) জানান, ধরলা নদী ভাঙতে ভাঙতে আমার বাড়ি সংলগ্ন রাস্তা নদী গর্ভে চলে গেছে। এখন আমার বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। হয়তো যেকোনো মুহুর্তে আমার বাড়ি নদী গর্ভে চলে যেতে পাড়ে।
মোগলবাসা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরজামাল বাবলু জানান, আমার ইউনিয়নের কিসামত মালভাঙা ও সিতাইঝাড় এলাকায় কয়েকদিন আগে ধরলার ভাঙন খুব তীব্র ছিল। এখন কমে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ (বালির বস্তা) ফেলার জন্য স্তুপ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের গারুহারা গ্রামের মাইদুল ইসলাম (২৮) জানান, আমার গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে নদের ভাঙনে সাতটি পরিবার ভিটে-মাটি হারিয়েছে। আমার বাড়িও হুমকির মুখে পড়েছে।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, এই ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর, গলদিপাড়া, গারুহারা এবং ওয়াপদার হাট এলাকার প্রায় চার কিলোমিটায় ভাঙন চলছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক মো. মোকতার হোসেনকে ভাঙনের বিষয়টি অবগত করেছিলাম। তিনি জানিয়েছেন, ভাঙ্গনের বিষয়টি তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন, নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে।