উপকূলের ২০ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত

সাইক্লোন আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি থেকে জীবনরক্ষা করতে, উপকূলীয় অঞ্চল থেকে মোট ২০ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ও ভারত।
গতকাল সোমবার থেকেই দুই দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা- উপকূলবাসীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেন।
কিন্তু করোনাভাইরাসের চলমান মহামারির প্রেক্ষিতে তারা নির্দিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্র বা সাইক্লোন সেন্টারগুলোতে মানুষের ভিড়ও কমাতে চাইছেন। ফলে নতুন আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করতে গিয়ে তাদের বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের বরাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আম্পান এখন ২৪০-২৬৫ কিলোমিটার ঝড়ো হাওয়ার শক্তি নিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। বুধবারেই আম্পানের আঘাত হানার অনুমান করছে তারা।
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব শাহ কামাল বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, করোনা সংক্রমণের কারণে জন-সমাগম যতটা পারা যায় কম রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য মোট ১২ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৭ হাজার স্কুল ও কলেজ।
আশ্রয়কেন্দ্রে আসা সবাইকে মাস্ক এবং গ্লোভস পড়তে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে বলেও যোগ জানান তিনি।
শাহ কামাল আরও বলেন, উপকূলের নিচু এলাকাগুলো থেকে আজ মঙ্গলবারের মধ্যেই ২০ লাখ লোক সরিয়ে নেওয়া হবে। এমন জরুরি পরিস্থিতিতে মোট ৫০ লাখ মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে।

ঘূর্ণিঝড় আম্পান ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিম উপকূলে আঘাত হানার আগে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তবে এমনটা হলেও তখন বাতাসের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার। ভারতের সাত স্তরের উষ্ণমণ্ডলীয় সামুদ্রিক ঝড়ের ভয়াবহতার তালিকায় এর ফলে আম্পান ৬ নাম্বারে অবস্থান করবে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং উড়িষ্যার উপকূলীয় জেলাগুলোয় প্রবল বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ার সূচনা দিয়েছেন কলকাতা আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জি. কে. দাস।
বাংলাদেশি কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, ২০০৭ সালের সিডরের পর উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় হতে পারে আম্পান। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে সিডর আঘাত হানার পর সরকারি হিসাবে ৩ হাজার মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছিল।