আন্দোলন ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই: মির্জা ফখরুল

"খালেদা জিয়ার জন্য আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। সরকার সকল অধিকার হরণ করছে, পথ একটাই খোলা আছে সেটা আন্দোলন, আন্দোলন এবং আন্দোলনের পথ", এ বক্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এসময় মির্জা ফখরুল দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, "বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে কেউ হঠকারিতা করবেন না, অতীতে এ ধরনের বহু আন্দোলনে আমাদের মূল্য দিতে হয়েছে।"
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে আগামী ২৪ নভেম্বর সারাদেশে জেলা প্রশাসক বরাবর বিএনপি স্মারকলিপি দেবে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশ সকাল ১০টায় শুরু হওয়ায় কথা থাকলে ৯টার আগেই দলীয় নেতাকর্মী উপস্থিত হয়ে যায়। সমাবেশ শেষ হয় ১১টা ২০ মিনিটে।
মির্জা ফখরুল বলেন, "বক্তব্য দেয়ার কোন অবকাশ নেই। এই সরকার সবদিক থেকে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে।"
এসময় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, "আমরা খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই, মুক্তি দিলেই আমরা তার চিকিৎসা করাতে পারবো। আমরা এই সরকারকে বলবো আপনাদের আইনগত ভিত্তি নেই, আপনাদের মুখে আইনের ভাষা মানায় না, অবিলম্বে আপনার খালেদা জিয়ার মুক্তি দেন, অন্যথায় খালেদা জিয়ার নেতাকর্মীরা তার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত।"
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, "যেখানে ডাক্তার বলছে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা ছাড়া কোন উপায় নেই, যেখানে বিদেশি যেতে আইনি বাধা নেই, তাহলে সরকারের এতো প্রতিহিংসা কেন?"
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, "সরকার কারাগারের বন্দি খুনিদেরও বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে অথচ বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না।"
আজকের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। এছাড়াও সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক সহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর ৬দিন আগেই তিনি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন।
তার চিকিৎসকরা জানান, খালেদা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চক্ষু ও দাঁতের জটিলতায় ভুগছেন।
এছাড়া, তিনি গুরুতর কার্ডিয়াক এবং কিডনি সমস্যায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন তারা। এমনকি তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও কমে গেছে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন জমা দেন খালেদার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার।