Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

কে বিউটি থেকে জে বিউটি! কেন জনপ্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশে

সৌন্দর্য এবং প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে যে দেশটির নাম সবার আগে উঠে আসে সেটি হলো জাপান। আনন্দ এবং হাজার বছরের ঐতিহ্যের মাধ্যমে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকাকে জাপানের মানুষ প্রাধান্য দেয় বেশি। আর তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে তাদের ব্যবহার করা সৌন্দর্যসামগ্রীতে। যেখানে যুক্ত থাকে ‘মিনিমালিজম’-এর চর্চা। 
কে বিউটি থেকে জে বিউটি! কেন জনপ্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশে

ফিচার

সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
07 January, 2025, 02:30 pm
Last modified: 07 January, 2025, 07:17 pm

Related News

  • ৪ হাজার বছরের পুরোনো শিশিতে প্রাচীন লাল লিপস্টিক, বলছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা
  • ক্যান্সারের আশঙ্কায় শ্যাম্পু তুলে নিচ্ছে ইউনিলিভার
  • গোঁফকেই নিজের সৌন্দর্য মনে করেন কেরালার যে নারী
  • শেভিং, প্রসাধনী, টয়লেট্রিজ ও জীবাণুনাশক পণ্যের উপর কর বাড়ছে ১০ শতাংশ  
  • যে আট কারণে রূপচর্চায় গাঁজা ব্যবহার করতে বলা হয়!

কে বিউটি থেকে জে বিউটি! কেন জনপ্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশে

সৌন্দর্য এবং প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে যে দেশটির নাম সবার আগে উঠে আসে সেটি হলো জাপান। আনন্দ এবং হাজার বছরের ঐতিহ্যের মাধ্যমে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকাকে জাপানের মানুষ প্রাধান্য দেয় বেশি। আর তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে তাদের ব্যবহার করা সৌন্দর্যসামগ্রীতে। যেখানে যুক্ত থাকে ‘মিনিমালিজম’-এর চর্চা। 
সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
07 January, 2025, 02:30 pm
Last modified: 07 January, 2025, 07:17 pm
ছবি: সামিনা নূর ট্রেসি

প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে জাপানি সৌন্দর্য সামগ্রীর সাথে সখ্য ত্রিশোর্ধ্ব সামিনা নূর ট্রেসির। নানান দেশের পণ্য ব্যবহারের পর থিতু হয়েছেন জাপানি সৌন্দর্যে। কথায় আছে না, 'দামে কম মানে ভালো'; সামিনার কাছে জাপানি সৌন্দর্য সামগ্রী কিংবা জে বিউটি ঠিক তেমনটাই। 

তাই দুর্মূল্যের বাজারে যখন অল্প দামে বেশি পরিমাণ পণ্য হাতের নাগালে পাওয়া যায়, তখন তা লুফে নেওয়ার সুযোগ সামিনার মতো অনেক ভোক্তা ছাড়তে চান না। আর এতেই বাংলাদেশে জাপানি পণ্যের জনপ্রিয়তা আকাশ ছুঁয়েছে। ধীরে ধীরে বেড়েছে ব্যবহারকারী।

সৌন্দর্য এবং প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে যে দেশটির নাম সবার আগে উঠে আসে সেটি হলো জাপান। আনন্দ এবং হাজার বছরের ঐতিহ্যের মাধ্যমে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকাকে জাপানের মানুষ প্রাধান্য দেয় বেশি। আর তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে তাদের ব্যবহার করা সৌন্দর্যসামগ্রীতে। যেখানে যুক্ত থাকে 'মিনিমালিজম'-এর চর্চা। 

এই চর্চাই তাদের জনপ্রিয়তা ছড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী। সহজ ভাষায়, মিনিমালিজম হলো এক ধরণের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, যা জীবনের সরলতা, প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ততার বর্জন এবং ভারসাম্য বজায় রাখার প্রতি গুরুত্ব দেয়।

সৌন্দর্য চর্চায়ও মিনিমালিজম এমন একটি ধারণা। এখানে ত্বক ও সৌন্দর্যের যত্নের ক্ষেত্রে কম সংখ্যক, কিন্তু কার্যকর পণ্য এবং পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়। অপ্রয়োজনীয় উপাদান এড়িয়ে সরলতা বজায় রেখে দীর্ঘমেয়াদী এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অর্জনের চেষ্টা করাই মিনিমালিজমের মূল লক্ষ্য। 

জাপানিদের সৌন্দর্য দর্শনের এই চাবিকাঠিটি খ্যাতি পেয়েছে বিশ্বজুড়ে। বাংলাদেশেও চলতি দশকের শুরু থেকে জাপানি সৌন্দর্য সামগ্রীর ব্যবহার বেড়েছে। 'কে বিউটি' অর্থাৎ কোরিয়ান বিউটি এবং আমেরিকার সৌন্দর্য সামগ্রীর সাথে সাথে একই কাতারে জায়গা করে নিয়েছে জে বিউটি বা 'জাপানিজ বিউটি'।

মধ্যবিত্তের নাগালে 'স্কিনকেয়ার'

বাংলাদেশে জাপানি পণ্যের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রথম কারণ হচ্ছে এর দাম। পরিমাণের তুলনায় দামে কিছুটা সাশ্রয়ী হওয়ায় শিক্ষার্থী, গৃহিণী থেকে চাকরিজীবী নারী-পুরুষ সকলের পছন্দের তালিকাতেই রয়েছে জে বিউটি। 

শিক্ষার্থী জুয়াইরা রহমান বিগত কয়েকবছর ধরেই জাপানিজ পণ্য ব্যবহার করে যাচ্ছেন। দাম নাগালে থাকায় কোরিয়ান পণ্যে চলতে থাকা রূপচর্চা থেকে ঝুঁকেছেন জাপানিজ পণ্যে।

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

জুয়াইরা বলেন, "কোরিয়ান স্কিনকেয়ারের ক্ষেত্রে পরিমাণের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি লাগে। এজন্য আমি ভালো, কিন্তু সাশ্রয়ী স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট খুঁজছিলাম। কোরিয়ান স্কিনকেয়ারে ১,৫০০-১,৭০০ টাকা দিয়ে কেনা ৫০ মিলি. সানস্ক্রিন একমাসও যায় না। সেটার বিকল্প খুঁজতেই আমি জাপানিজ স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট খুঁজে পাই।" 

"মূলত সানস্ক্রিন দিয়ে আমি শুরু করি। খুঁজতে গিয়ে দেখি জাপানিজ সানস্ক্রিন ১,৪০০-১,৫০০ টাকায় ১০০ গ্রাম বা ১৪০ গ্রাম পাওয়া যায়। পরিমাণ হিসেবেও বেশিদিন যায় আর টাকা হিসেবেও মানানসই মনে হয়," যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশে জাপানিজ পণ্যের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর পেছনে রয়েছে কিরেই, কাওয়াই কিংবা মিয়াকে বিডির মতো প্রতিষ্ঠান। যারা কম খরচে মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে দিচ্ছে জাপানি পণ্য। ২০১৯ সালে কিরেই-এর যাত্রা শুরু হয় মিথুন রাহা এবং তাসনিম চৌধুরীর হাত ধরে। ত্বকের যত্নে বিদেশি সৌন্দর্যসামগ্রীর ব্যবহার যে কেবল উচ্চবিত্তরাই নয়, মধ্যবিত্তরাও করতে পারেন— তা প্রতিষ্ঠা করতেই তারা কাজ শুরু করেন। আর জাপান যেহেতু 'মিনিমালিজম'-এর প্রতিচ্ছবি, তাই জাপানিজ সৌন্দর্যসামগ্রী নিয়েই কাজ করার উদ্যোগ নেন তারা।

কিরেই-এর প্রতিষ্ঠাতা মিথুন রাহা বলেন, "বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত কমিউনিটি বাড়ছে। ওদের লাইফস্টাইলের জন্য যে ধরনের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস দরকার, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশে এগুলো কম। এই জায়গাটাতেই কিছু একটা করতে চাচ্ছিলাম আমরা।" এক্ষেত্রে এগিয়ে আসেন কিরেই-র সহপ্রতিষ্ঠাতা তসলিম চৌধুরী। তাসনিমের অবস্থান জাপানে হওয়ায় তিনিই সেখানকার ব্র্যান্ডের সমস্ত কাজকর্ম সামলান।

এরপর মিথুন আর তসলিমের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয় জাপানি সৌন্দর্যসামগ্রী নিয়ে যাত্রা। ভেবেচিন্তে তারা প্রতিষ্ঠানের নাম দেন 'কিরেই'। 'কিরেই' মানে হচ্ছে বিউটিফুল, সুন্দর। 

"আমরা যেহেতু বিউটি সেক্টর নিয়ে কাজ করবো চিন্তা করেছি এবং জাপানিজ সামগ্রীই সেখানে আছে, সেজন্য মনে হয়েছে জাপানিজ এই নামটি আমাদের ব্যবসাকে প্রতিনিধিত্ব করে", যোগ করেন মিথুন। 

শুরু থেকেই বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে ত্বকের যত্নকে গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছে কিরেই— যেখানে ত্বক 'ফর্সাকারী' কোনো উপাদান নয়, বরং সুস্থ এবং উজ্জ্বল ত্বকই মূল কথা।

এই ত্বকের সুস্থতার বিষয়টি জাপানিক সৌন্দর্যসামগ্রী ব্যবহারকারী শিক্ষার্থী আলাইনা রহমানেরর কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, "আমার কাছে মনে হয়েছে, জাপানিজ পণ্য কার্যকরী এবং স্কিনের জন্য ভালো। তাছাড়া, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ব্রাউন স্কিনের। তাই জাপানিজ বা কোরিয়ান মানুষ স্কিনে কী ব্যবহার করছে, সেটা নিয়ে মানুষের আগ্রহ বেশি থাকে। আর সেগুলো মানুষ ব্যবহার করে ভালো ফিডব্যাক দিচ্ছে বলেই জাপানিজ প্রোডাক্ট বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে।"

কম পণ্যে রূপচর্চা

বাংলাদেশে জাপানিজ রূপচর্চা জনপ্রিয় হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে এখানে কম পণ্য ব্যবহার করে অধিক সুবিধা পাওয়া যায়। জাপানিজ ট্রেন্ডের আগে কোরিয়ান স্কিন ট্রেন্ডের বেশ রমরমা ছিল বাংলাদেশে। গ্লাস স্কিন, ফ্ললেস স্কিনসহ নতুন নতুন শব্দে মুখর ছিল বাংলাদেশের বিউটি ইন্ডাস্ট্রি। তাই কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্টের পাশাপাশি তাদের স্কিন কেয়ার রুটিনও বেশ জনপ্রিয় ছিল তখন থেকে।

এখানেই উঠে আসে কে বিউটি আর জে বিউটির মূল ফারাক। কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রুটিনে দাগহীন, টানটান, উজ্জ্বল ত্বকের জন্য অনুসরণ করতে হয় দশটি ধাপ। যার জন্য পণ্য লাগে বেশি। এই দশ ধাপের মধ্যে আছে মেকআপ রিমুভার ও অয়েল ক্লিনজার, ওয়াটার বেজড ক্লিনজার, এক্সফোলিয়েশন, টোনার, অ্যাসেন্স, ট্রিটমেন্ট, শিটমাস্ক, আইক্রিম, ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন। এই ধাপগুলো অনুসরণ করেই তারা পেয়ে থাকেন তারুণ্যময় ত্বক।

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

অপরদিকে, এই তুলনাতেই কোরিয়াকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছে মানের বিষয়ে আপসহীন জাপান। জাপানিজ স্কিনকেয়ারে আছে মোট পাঁচটি ধাপ। আধুনিক যুগে জাপানিরা যেহেতু মিনিমালিজম অর্থাৎ 'কম কিন্তু কার্যকর' ধারণায় বিশ্বাসী, তাই তারা ত্বকের কমনীয়তার জন্যও কম পণ্য ব্যবহার করেন। 

জাপানিজ সৌন্দর্যচর্চায় সাধারণত তেলভিত্তিক ক্লিঞ্জার, ফোম ক্লিনজার, সানস্ক্রিন, লোশন এবং ময়েশ্চারাইজার— এই পাঁচটি জিনিস বেশি প্রাধান্য পায়। ত্বকে যাতে পানির উপাদান বজায় থাকে সেটা খেয়াল রাখেন তারা সবচেয়ে বেশি। তাদের রূপচর্চায় 'ডাবল ক্লিঞ্জিং' অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। 

জাপানিদের বিশ্বাস কেবল ফোমিং ক্লিঞ্জার ভারী মেকাপ তুলতে পারে না। আগে তেলভিত্তিক ক্লিঞ্জার ব্যবহার করে মেকাপকে হালকা করে তারা ব্যবহার করেন ফোমিং ক্লিঞ্জার। এরপর ব্যবহার করেন হাইড্রেটিং লোশন এবং সবশেষে ময়েশ্চারাইজার। এতেই প্রাণবন্ত থাকে তাদের ত্বক।

এ বিষয়ে কিরেই-এর স্বত্বাধিকারী মিথুন বলেন, "আমাদের মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের কাছে এখনো ৮/১০টা প্রোডাক্ট ব্যবহার বিলাসিতা। তাদের যদি আমরা একই মানের জিনিস ২ থেকে ৩টি প্রোডাক্টের মধ্যে দিতে পারি, সেটা আসলে ভ্যালু ফর মানি হয়। এতে আমাদের গ্রাহকেরাও বুঝতে পারবে মিনিমাল উপায়েই বেশি সুবিধা পাওয়া যায়।"

এ বিষয়ে জাপানিজ সৌন্দর্যসামগ্রী বিক্রিকারী আরেকটি প্রতিষ্ঠান কাওয়াই-এর স্বত্বাধিকারী ইসমাত জাহান ইমু বলেন, "কোরিয়ান প্রোডাক্ট অনেকটা রপ্তানি নির্ভর, আর ওরা মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে 'গ্লাস স্কিন', 'টেন স্টেপ' এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করে। ওদের মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি অনেকটা এরকম। এদিক থেকে জাপানিজ কসমেটিক্স বিজয়ী বলা যায়। জাপানিদের স্কিনকেয়ার এথিক্স 'মিনিমালিজম' হয়। অর্থাৎ কম প্রোডাক্ট ব্যবহার করে আপনি সুবিধা বেশি পাবেন।"

ইসমাত জাহান ইমু এবং মাহমুদুল হাসান রাজিব দম্পতির হাত ধরে ২০২১ সালে শুরু হয় কাওয়াই-এর যাত্রা। শুরু থেকেই তারা সাশ্রয়ীমূল্যে মানুষের হাতে জাপানিজ পণ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

আবহাওয়াগত সামঞ্জস্য

জাপানের সাথে আবহাওয়াগত মিল, বাংলাদেশে জাপানিজ পণ্য জনপ্রিয়তা পাওয়ার আরেকটি কারণ বলে মনে করেন কাওয়াই-এর স্বত্বাধিকারী ইসমাত। দীর্ঘদিন যাবত তার অবস্থান জাপানে হওয়ায় তিনি খুঁজে পেয়েছেন এই সামঞ্জস্য।

ইসমাত বলেন, "বাংলাদেশ আর জাপানের আবহাওয়ার ধরন যদি অনুসরণ করি, তাহলে দেখা যাবে দুই দেশের আবহাওয়া অনেকটা একইরকম। একই সময়ে গরম শুরু হয়, আবার একই সময়ে শীতকাল শুরু হয়। হয়তো গরম বা শীতের তীব্রতা একটু এদিক সেদিক হয়, কিন্তু আমাদের আবহাওয়ার প্যাটার্ন অনেকটা একই।"

"জাপানিরা যেহেতু তাদের আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে প্রোডাক্ট তৈরি করে, সেটা দেখা যায় খুব সহজে বাংলাদেশি ত্বকের ধরনের সাথে মিলে যায়। আরেকটা বিষয় যোগ করতে চাই, সেটা হলো ক্রয়ক্ষমতা। হয়তো এক নজরে মনে হতে পারে জাপানিজ জিনিস ব্যয়বহুল। কিন্তু আপনি যদি কোয়ালিটি এবং কোয়ান্টিটি হিসাব করেন, তাহলে দেখবেন জাপানিজ পণ্য সাশ্রয়ী। এসব কারণেই মনে হয় যে কোরিয়ান প্রোডাক্ট থেকে মানুষ জাপানিজ প্রোডাক্টে বেশি ঝুঁকছেন", যোগ করেন ইসমাত।

তাছাড়া, জাপানি পণ্যের ফর্মুলেশনের কারণে অনেকের পছন্দের তালিকায় এটি রয়েছে। এই বিষয়ে ব্যবহারকারী সামিনা বলেন, "জাপানি সানস্ক্রিনের ফর্মুলেশন বেস্ট। দাম অনুযায়ী পরিমাণও বেশি আর এটা দ্রুত স্কিনের সাথেও মানিয়ে যায়। আমি দেশী পণ্য দিয়ে স্কিনকেয়ার জার্নি শুরু করি। এরপর ইউকে, ইউএস বেসড প্রোডাক্টও ব্যবহার করেছি, কিন্তু ওগুলো আমার কাছে একটু ভারী লাগতো। তাছাড়া, আমি কোরিয়ান প্রোডাক্টও ব্যবহার করেছি। আমার কাছে মনে হতো কোরিয়ান প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে দাম অনুযায়ী পরিমাণ কম। এরপর ধীরে ধীরে জে বিউটির দিকে ঝোঁকা শুরু করি। সানস্ক্রিন দিয়ে আমার জাপানিজ স্কিনকেয়ারের যাত্রা শুরু হয়।"

জাপানিজ পণ্যের মধ্যে সানস্ক্রিন, হাইড্রেটিং লোশন, ময়েশ্চারাইজার এবং ক্লিঞ্জারের জনপ্রিয়তা বাংলাদেশে বেশি। তবে চুলের যত্নে যেসব পণ্য পাওয়া যায় সেগুলোরও আলাদা খ্যাতি আছে। এই বিষয়ে সামিনা বলেন, "আমার মতে, জাপানি স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের মধ্যে হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট সবচেয়ে ভালো। অন্য কোনো দেশ এর সামনে দাঁড়াতে পারবে না।"

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

বাংলাদেশে হোয়াইটেনিং প্রোডাক্টের মার্কেটিং বেশি

বাংলাদেশে যেসব প্রতিষ্ঠান জাপানি পণ্য বিক্রি করে তাদের মধ্যে মিয়াকে বিডি অন্যতম। জাপান থেকে সরাসরি পণ্য নিয়ে এসে বিক্রি করেন তারা

মিয়াকে বিডির অন্যতম কর্ণধার রিয়াজ বলেন, "বাংলাদেশে কোরিয়ান পণ্য কোথাও নকল বিক্রি করে, আবার কোথাও আসল। এটা নিয়ে মানুষের মধ্যে কন্ট্রোভার্সি থাকে। জাপানিজ প্রোডাক্ট সাধারণত নকল হয় না। নিয়মের দিক থেকে জাপান অনেক কড়া। কোরিয়াতে যেমন কেমিক্যাল জাতীয় প্রোডাক্ট বেশি, জাপানে কিন্তু প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি প্রোডাক্ট বেশি।"

তবে ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে প্রাথমিক যত্ন বা 'বেসিক কেয়ার' অনেক বেশি জরুরি বলে মনে করেন জাপানি পণ্য ব্যবহারকারী সামিনা। তিনি বলেন, "আমি মনে করি, বাংলাদেশে স্কিনকেয়ার ইন্ডাস্ট্রি মার্কেটিং এর উপর চলে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওভারমার্কেটিং হয়। মানুষকে বেসিক কেয়ার সম্পর্কে জানানো খুব প্রয়োজন যেটা আমি 'কিরেই'তে দেখেছি। কিন্তু দেখা যায় বেশিরভাগ পেজে কোনো একটা প্রোডাক্টকে বেশি ম্যাজিকাল বানিয়ে ফেলে।" 

তিনি বলেম, "হোয়াইটেনিং এর মার্কেটিং বেশি হয়। এটা আমার ভালো লাগে না। আসলে কোনো প্রোডাক্টই ম্যাজিকাল হয় না যে দুইদিন ব্যবহার করবো, কাজ হয়ে যাবে। সাদা হওয়ার চিন্তা থেকে যদি আমরা বের হতে না পারি তাহলে ভালো কিছুই হবে না।"

গৃহিণী শায়লা সাবরিনেরও একই মত। তিনি ২০২৩ সাল থেকে ব্যবহার করে যাচ্ছেন জাপানিজ পণ্য। তিনি বলেন, "জাপানিজ পণ্য ব্যবহারের পর আমার স্কিন অনেক হেলদি হয়েছে। আর বাজেটফ্রেন্ডলি হওয়ার কারণে প্রোডাক্টও বেশিদিন যায়।"

গ্রাহকদের জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জাপানিজ রূপচর্চা সংক্রান্ত বিভিন্ন ভিডিও তৈরি করে কিরেই। তাছাড়া ত্বকের ডাক্তার অর্থাৎ ডার্মাটোলজিস্ট দেখানোর সুযোগও কিরেইতে রয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও যাতে এই সুবিধা পান সেটা খেয়াল রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য। জাপানিজ সৌন্দর্যসামগ্রীর মধ্যে বাংলাদেশে কাও, হাদালাবো, শিশেইডো, হাতোমুগি, রোহতো, কানেবো প্রভৃতি ব্র্যান্ডের পণ্য বেশি জনপ্রিয়।

'বাংলাদেশের সরকার আমদানিবান্ধব নয়'

বাংলাদেশে জে বিউটির জনপ্রিয়তা থাকলেও তাতে প্রতিনিয়ত বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন আমদানিকারকেরা। মাত্রাতিরিক্ত শুল্কের কারণে চাহিদামতো পণ্য আনতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। 

এ বিষয়ে কাওয়াই-এর অন্যতম স্বত্বাধিকারী মাহমুদুল বলেন, "স্কিনকেয়ারের প্রোডাক্টে ট্যাক্স-ভ্যাটের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। আমাদের দেশে ট্যাক্স নির্ধারণ মনমতো হয়। কোনো নির্দিষ্ট পণ্যের গায়ে লেখা দামের উপর হয় না। যেমন— শ্যাম্পুর জন্য ট্যাক্স-ভ্যাট হিসাব করে ১৮০ শতাংশ চার্জ করা হয়। ধরুন, আপনার প্রোডাক্টের দাম পাঁচ ডলার। ওরা এই দামের উপর ট্যাক্স-ভ্যাট ক্যালকুলেট করবে না। আপনি কত কেজি প্রোডাক্ট এনেছেন, এটা ওদের প্রথম কথা। এরপর কেজিতে তারা তাদের মতো দাম নির্ধারণ করেন। প্রতিকেজিতে তারা ৮ বা ১০ ডলার হিসাব করেন। আমরা যদি ১০ কেজির প্রোডাক্ট আনি, তাহলে ১০ ডলার হিসাব করে ১০ কেজির দাম হয় ১০০ ডলার। এরপর এটার উপর ট্যাক্স ভ্যাট মিলিয়ে ১৮০% দাম পরিশোধ করতে হবে। যেটা একেবারেই ব্যবসায়বান্ধব না।"

"এটা আমাদের দেশের অনেক বড় সমস্যা যে বাংলাদেশের সরকার আমদানিবান্ধব নয়। এটা স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট এবং লাক্সারি প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। তাছাড়া, প্রোডাক্টের প্যাকেজিং ঠিক রাখাও আরেকটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা জাপান থেকে ঠিকঠাক প্যাকেজিং পাঠালেও বাংলাদেশ পর্যন্ত যেতে যেতে ওরা প্যাকেজিং নষ্ট করে ফেলে। প্রচুর প্রোডাক্ট আমাদের নষ্ট হয় এভাবে। বিমানে বা জাহাজে যেভাবেই পাঠানো হোক না কেন, বাংলাদেশে এগুলোকে খুব বাজেভাবে হ্যান্ডেল করা হয়। কোনো রকমের প্রফেশনালিজম এখানে পাই না। এরপর প্রোডাক্ট ডেলিভারি করতে গিয়েও আমরা নানান সমস্যায় পড়ি। অনলাইন ব্যবসায়ের জন্য লজিস্টিক্স এখনো ভালো পর্যায়ে পৌঁছায়নি বাংলাদেশে,"  যোগ করেন মাহমুদুল।

ছবি: আলাইনা রহমান

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কিরেই-এর সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে 'সাপ্লাই চেইন' চ্যালেঞ্জ। ২০১৯ সাল থেকে চালু হওয়া প্রতিষ্ঠানটি ডলারের সমস্যা, করোনা মহামারি থেকে শুরু করে একাধিকবার নানান সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। 

কিরেইয়ের স্বত্বাধিকারী বলেন, "সাপ্লাই চেইন চ্যালেঞ্জের কারণে গ্রাহকের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আমরা যথাসময়ে পণ্য পৌঁছাতে পারিনি। তাছাড়া বাংলাদেশে এ ধরনের প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে ট্যাক্স অনেক বেশি। ট্যাক্স বেশি রেখে কাস্টমারকে তাদের পছন্দনীয় দামে পৌঁছে দেওয়াটা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।"

নানান সমস্যা থাকা সত্ত্বেও যথাসাধ্য চেষ্টা করে সাশ্রয়ী দামে তারা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন জাপানি পণ্য। দিন দিন যেহেতু বাংলাদেশে গ্রাহক বাড়ছে, অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের পণ্যের চাহিদা বাড়তেই থাকবে বলে বিশ্বাস তাদের। 

মিথুন বলেন, "২০১৯ সালে যখন আমরা শুরু করেছিলাম, তখন মানুষের সচেতনতার যে জায়গা ছিল, এখন তা অনেক বেড়েছে। এটা আমরা বুঝতে পারি আমাদের সানস্ক্রিন প্রোডাক্টের দিক থেকে। এগুলোর চাহিদা নিয়মিত বেড়ে চলছে। মানুষ যে তার প্রাত্যাহিক রুটিনে এগুলোকে যুক্ত করছে, সেটা আমরা বুঝতে পারি।"
 

Related Topics

টপ নিউজ

সৌন্দর্যের ধারণা / সৌন্দর্য / বিউটি প্রোডাক্ট / সৌন্দর্যসামগ্রী / জে বিউটি / জাপানি পণ্য / জাপানি প্রসাধনী / প্রসাধনী পণ্য

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কাল থেকে পাওয়া যাবে নতুন টাকা, সংগ্রহ করবেন যেভাবে
  • দেশের প্রথম মনোরেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে: মেয়র শাহাদাত
  • আগামী বছর থেকে অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে
  • বাস-ট্রাক, ট্যাক্সির অগ্রিম কর বাড়ছে ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত, পরিবহন ব্যয় বাড়ার শঙ্কা
  • মেজর সিনহা হত্যা মামলা: প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল
  • বাজেটে প্রাথমিকে বরাদ্দ কমছে, বাড়ছে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষায়

Related News

  • ৪ হাজার বছরের পুরোনো শিশিতে প্রাচীন লাল লিপস্টিক, বলছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা
  • ক্যান্সারের আশঙ্কায় শ্যাম্পু তুলে নিচ্ছে ইউনিলিভার
  • গোঁফকেই নিজের সৌন্দর্য মনে করেন কেরালার যে নারী
  • শেভিং, প্রসাধনী, টয়লেট্রিজ ও জীবাণুনাশক পণ্যের উপর কর বাড়ছে ১০ শতাংশ  
  • যে আট কারণে রূপচর্চায় গাঁজা ব্যবহার করতে বলা হয়!

Most Read

1
অর্থনীতি

কাল থেকে পাওয়া যাবে নতুন টাকা, সংগ্রহ করবেন যেভাবে

2
বাংলাদেশ

দেশের প্রথম মনোরেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে: মেয়র শাহাদাত

3
অর্থনীতি

আগামী বছর থেকে অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে

4
অর্থনীতি

বাস-ট্রাক, ট্যাক্সির অগ্রিম কর বাড়ছে ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত, পরিবহন ব্যয় বাড়ার শঙ্কা

5
বাংলাদেশ

মেজর সিনহা হত্যা মামলা: প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল

6
অর্থনীতি

বাজেটে প্রাথমিকে বরাদ্দ কমছে, বাড়ছে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষায়

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab