Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
June 03, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JUNE 03, 2025
মওলা বখশের হারিয়ে যাওয়া মুড়ির টিন

ফিচার

সালেহ শফিক
29 June, 2023, 10:30 pm
Last modified: 02 January, 2024, 01:25 pm

Related News

  • বৈরী আবহাওয়া: ঢাকামুখী চার ফ্লাইট শাহ আমানতে জরুরি অবতরণ
  • ছিনতাইকারী সন্দেহে রাজধানীর দারুসসালামে ২ যুবককে পিটিয়ে হত্যা
  • রাজধানীতে আজ একাধিক কর্মসূচি, এড়িয়ে চলবেন যেসব সড়ক 
  • ঢাকাসহ ৯ জেলায় বজ্রঝড়ের সতর্কবার্তা: বিএমডি
  • রাজধানীতে অহেতুক সড়ক অবরোধ না করতে ডিএমপির অনুরোধ

মওলা বখশের হারিয়ে যাওয়া মুড়ির টিন

মওলা বখশ দূরদর্শী ছিলেন আর ছিলেন দক্ষ মেকানিক। তিনি একটি অকেজো বুইক গাড়ির ইঞ্জিন দিয়ে বানিয়ে নিয়েছিলেন শখের লঞ্চ। কেরোসিন তেলে চলা ওই লঞ্চে করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শিকারে যেতেন তিনি। আজিম বখশ বলছিলেন, ‘ত্রিশের দশকে বাবার (মওলা বখশ) একটি মোটর সাইকেল ছিল। এটি ছিল ঢাকার দুটি মোটর সাইকেলের একটি। অন্যটি ছিল ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেটের। বাবা কলকাতা যাওয়ার সময় মোটর সাইকেলের বিভিন্ন অংশ খুলে একটি বস্তায় ভরে ট্রেনে উঠতেন। শিয়ালদহে নেমে কাছের একটি মাঠে বসে আবার যন্ত্রাংশগুলো জুড়ে নিতেন। কলকাতায় যতদিন থাকতেন ওই মোটর সাইকেলে করেই ঘুরতেন।’
সালেহ শফিক
29 June, 2023, 10:30 pm
Last modified: 02 January, 2024, 01:25 pm
ছবি: আব্দুল্লাহ আল শাফি/ফেইসবুক

বোঁচা নাকের বাসগুলোকে আশির দশকের শেষেও দেখে থাকবেন অনেকে। মুড়ির টিন বলে ডাকত লোকে। কারণ এগুলোর কাঠের দেহকাঠামো টিন দিয়ে মোড়ানো থাকত। চারধারে পাতা কাঠের বেঞ্চিতে বসতে পারত ২০–২২ জন। আর মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় ঝাঁকি খেতে খেতে দাঁড়িয়ে যেত ৪০–৫০ জনের মতো। ঢাকার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের পরিচালক আজিম বখশ যোগ করলেন, 'শুরুর দিকে বাসগুলোয় ছোটখাটো কেবিনও থাকত, ব্যবসায়ীরাই মূলত কেবিনে চলাচল করতেন — কারণ তাদের সঙ্গে টাকা-পয়সা থাকত, অতএব নিরাপত্তার ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।'

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ছিল প্রথম গণপরিবহন রুট। নারায়ণগঞ্জকে বলা হতো বাংলাদেশের ডান্ডি। সেখানে কাপড়ের মিল, পাটের গুদাম, কয়লার ডিপো ইত্যাদি অনেক কিছু ছিল।  সেই ১৮৮৫ সালেই ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ ট্রেন চলাচল শুরুর মধ্য দিয়ে এর গুরুত্ব বোঝা যা।  তবে মুড়ির টিনের চলাচল শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে, ১৯৪৬ কি '৪৭ সালে।

আর শুরুটা হয়েছিল যাদের হাত ধরে তাদের একজন আজিম বখশের বাবা মওলা বখশ সরদার। তিনি ছিলেন পূর্ববঙ্গের প্রথম বাঙালি মালিকানার অটোমোবাইল ওয়ার্কশপের কর্ণধার। ছিলেন একজন দক্ষ মেকানিকও। ১৯৪৪ সালে তিনি সরদার খেতাব লাভ করেন। নওয়াব হাবিবুল্লাহ সূত্রাপুর জামে মসজিদে এসে তাকে দস্তারবন্দির পাগড়ি পরিয়ে দেন। সেদিনকার ভোজে ব্যবহৃত চিনেমাটির থালা-বাটি ঢাকা কেন্দ্রে আজও সংরক্ষিত আছে।

কলকাতা থেকে শিখে এসেছিলেন

ছবি: ইসলাম উদ্দিন বাবুল/ফেইসবুক

মওলা বখশের বাবা লোহার পুলের নিচে মুলিবাঁশের ব্যবসা করতেন। ব্যবসাটি তিনি পেয়েছিলেন নানা মুনিরুদ্দিন বেপারীর কাছ থেকে। কিন্তু মওলা বখশ পৈতৃক ব্যবসায় থাকতে চাইলেন না। নতুন কিছু করতে ইচ্ছা করল তার। ঢাকায় তখন ব্যক্তিমালিকানায় যেসব গাড়ি ছিল — যেগুলোকে আমরা এখন ভিন্টেজ কার বলি — সেগুলোর ছাউনি হতো ত্রিপলের। গাড়িগুলো দিত নতুন যুগের বার্তা, প্রবল আকর্ষণ করত মওলা বখশকে।

তখন তিনি নবম বা দশম শ্রেণির ছাত্র ইস্ট বেঙ্গল স্কুলে। সময়টা ১৯২৭ সাল। বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে গেলেন কলকাতায়। বেঙ্গল মোটর ওয়ার্কস ছিল কলকাতার নামী এক ওয়ার্কশপ। সেখানে কাজ শেখার সুযোগ পান তিনি। তিন বছর কাজ শিখে দেশে ফিরলেন মওলা বখশ। সে আমলে এক্সেল মোটর নামক একটি ওয়ার্কশপ ছিল নবাবপুরে। এর মালিক ছিলেন ব্রিটিশ সাহেব পুশপান। মওলা বখশ সেখানে ফোরম্যানের কাজ পান।

আরও বছর দুই কাটল। ১৯৩২ সালে পুশপান সাহেব দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য বাক্সপ্যাটরা গুছিয়ে ফেললেন। মওলা বখশকে বললেন, এতদিন আমার জন্য কাজ করলে, তোমাকে তো কিছুই দিতে পারলাম না। মওলা বখশ বলেছিলেন, তোমার যন্ত্রপাতিগুলো আমাকে দিয়ে যাও, তাতেই অনেক কাজ হবে আমার। পুশপান খুশি মনেই ওয়ার্কশপের যন্ত্রপাতি তাকে দিয়ে গিয়েছিলেন।

মওলা বখশ সর্দার

সেগুলো দিয়ে মওলা বখশ লালকুঠির কাছের এক ভাড়া বাড়িতে, ৬৭ ফরাশগঞ্জ রোডে, নিজের ওয়ার্কশপ গড়ে তুলেছিলেন। নাম রেখেছিলেন, ইন্ডিয়া মোটর ওয়ার্কস। সাকল্যে ১২–১৫টি প্রাইভেট কার ছিল তখনকার ঢাকায়-নওয়াবদের — কয়েকজন জমিদারের আর গুটিকয় ব্রিটিশ সাহেবের। সেগুলো সারাইয়ের কাজ হতো ইন্ডিয়া মোটর ওয়ার্কসেই।  মওলা বখশের নিজেরও দুটি গাড়ি ছিল, ভাড়ায় খাটত গাড়ি দুটি। মূলত ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ রুটে ছিল এ ট্যাক্সি সার্ভিস। এছাড়া সম্ভ্রান্ত কোনো বাড়ির দাওয়াতে গেলে বা অসুখ-বিসুখে ডাক্তার ডেকে আনতে অথবা নিজের বাড়ির অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট কাউকে আনতে এসব গাড়ি ভাড়া করা হতো।

ট্রাক হলো মুড়ির টিন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজল ১৯৩৯ সালে। লক্ষ্মীবাজারের মুসলিম হাই স্কুলে এসে আস্তানা গাড়ল এয়ার রেইড প্রিকশনস ব্রিগেড। আজিম বখশ মনে করিয়ে দিলেন, ঢাকায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিষ্ঠাও একই সময়। খানিক গুছিয়ে ওঠার পর ব্রিগেডের একটি অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ দরকার পড়ল। ফরাশগঞ্জে ছুটল তারা। মওলা বখশ সরদারের সঙ্গে পরামর্শ করে ওয়ার্কশপটি উঠিয়ে নিয়ে এল মুসলিম স্কুলে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে মওলা বখশ মুড়ির টিনের ব্যবসায় নামেন। ছবি: ঢাকা কেন্দ্র

সেখানে ব্রিগেডের গাড়ি সারানোর পর ঢাকার স্থানীয় গাড়িগুলো সারানোরও সুযোগ পেতেন মওলা বখশ। এসব কারণে তার উপার্জন বেড়ে গেল। আজিম বখশ বললেন, 'বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে পঞ্চাশের মন্বন্তরের (১৯৪২ সাল, স্থায়ী ছিল পরের তিন বছরও, সে দুর্ভিক্ষে ত্রিশ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়) প্রভাব পুরান ঢাকাবাসী কমই আঁচ করতে পেরেছিলেন। কারণ মওলা বখশসহ ঢাকার অন্য সরদার ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা ব্যাপক ত্রান তৎপরতা চালিয়েছিলেন।'

বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে মিত্রবাহিনীর ট্রাকগুলো বেকার হয়ে পড়ল। চট্টগ্রামে ছিল সেগুলোর ডিপো। মওলা বখশ নিলামে ৭–৮টি ট্রাক কিনে আনলেন। ওয়ার্কশপে কাঠমিস্ত্রি, কামার ও ইলেকট্রিশিয়ান নিয়োগ দিলেন। তারপর ট্রাকগুলোকে মুড়ির টিন নামে পরিচিত গণপরিবহনে রূপান্তর করলেন।

এসব গাড়ির  চেসিস ছিল ফোর্ড কোম্পানির আর ইঞ্জিন শেভ্রলের। কারণ ফোর্ড কোম্পানির ইঞ্জিনের দাম পড়ত বেশি। গাড়িগুলো ছাড়ত ভিক্টোরিয়া পার্ক (বাহাদুর শাহ পার্ক) থেকে। নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার রাস্তাও ছিল পাকা। হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে গাড়িগুলোকে স্টার্ট দিতে হতো, গোল রাবারের বলে চাপ দিলে হর্ন বাজত আর একটি কাষ্ঠখণ্ড থাকত চালকের কাছে যেটি দিয়ে ডান-বামে সিগনাল দিতেন।

আজিম বখশ। ছবি: ঢাকা কেন্দ্র

এগুলো চলত পেট্রল পুড়িয়ে। যাত্রীর চাপ বাড়ত লাঙ্গলবন্দ স্নানের মৌসুমে (চৈত্রমাসের শেষদিক)। এ মৌসুমে দূরদূরান্ত (ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল বা মানিকগঞ্জ) থেকে পুণ্যার্থীরা ঢাকায় আসতেন। ঢাকায় তাদের রাতে থাকার প্রয়োজন পড়ত। মন্দিরগুলো ছিল আশ্রয়স্থল। পরেরদিন রওনা হতেন তারা। তখন এক–দুটি স্ট্যান্ডবাই ইঞ্জিন রাখা হতো যেন বসে গেলে আবার অল্প সময়ের মধ্যে জুড়ে নেওয়া যায়।

আজিম বখশ জানিয়েছেন, কলতাবাজারের হাবিবুর রহমান খান এবং লক্ষ্মীবাজারের আলী আহমেদ সরদারও এ ব্যবসায় ছিলেন বলতে গেলে শুরু থেকেই। তাদেরও ওয়ার্কশপ ছিল এবং পরিবহন প্রতিষ্ঠানও ছিল। হাবিবুর রহমান খান সাহেবের প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল এইচ. আর. কে.। ততদিনে মওলা বখশ নিজের প্রতিষ্ঠানের নাম রেখেছেন মওলা বখশ অ্যান্ড সন্স — লক্ষ্মীবাজারের নবদ্বীপ বসাক লেনে নিজের কেনা জমিতে ওয়ার্কশপ প্রতিষ্ঠা করেছেন নতুন করে।

বাসগুলোর নাম ছিল পুকার বা কিসমত

ছবি: ইসলাম উদ্দিন বাবুল/ফেইসবুক

বাহাদুর শাহ পার্ক–নারায়ণগঞ্জ রুটের পর চালু হলো চকবাজার–মিরপুর–সাভার রুট। মিরপুরে তখন বসতি বেশি ছিল না, শাহ আলী মাজারকেন্দ্রিক কিছু চলাচল ছিল। তারপর শুরু হলো কালিয়াকৈর–চন্দ্রা রুট। এছাড়া ঢাকার প্রথম বড় পরিবহন সংস্থা মোমিন মোটর ওয়ার্কস নিজেদের গড়া রাস্তায় বাস চালু করেছিল জিনজিরা থেকে রোহিতপুর। সে পথটি ছিল অনেকটা রেললাইনের মতো। গাড়ির চাকার মাপে ইট বসানো হয়েছিল আর মাঝখানের অংশটা ছিল ফাঁকা। রাস্তাটি ছিল বেশ সরু, তাই উল্টোদিক থেকে গাড়ি এলে কোনো একটিকে থেমে অন্যটিকে জায়গা করে দিতে হতো।

তাদের বাস চলত ডেমরা–নরসিংদী রুটেও। এ রুটে মওলা বখশ সরদারের গাড়িও চলত। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝিতে অন্যের গাড়ি মেরামত করা বাদ দিয়ে মওলা বখশ অ্যান্ড সন্স কেবল নিজেদের গাড়িই  প্রস্তুত ও মেরামত করত। একপর্যায়ে তাদের বাসের সংখ্যা দাঁড়ায় ২০–২২টি। বাসগুলোর নাম রাখা হয়েছিল তখনকার জনপ্রিয় হিন্দি ছবির নামানুসারে যেমন পুকার, আজাদ, কিসমত বা তাজমহল। 'আমাদের তিনটি গাড়ি সার্ভিস দিত বাংলাবাজার বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আনা-নেওয়ার জন্য। তবে সেগুলো মুড়ির টিনের মতো অত বড় ছিল না,' বললেন আজিম বখশ।

মওলা বখশ সরদারের ওয়ার্কশপের কিছু যন্ত্রপাতি। ছবি: ঢাকা কেন্দ্র

দুজন সার্জেন্ট পরীক্ষা নিয়েছিলেন

ব্রিটিশ আমলে চালকের লাইসেন্স পেতে যে পরীক্ষা দিতে হতো তাতে বিচারক হিসাবে পুলিশের কর্তাব্যক্তির সঙ্গে মওলা বখশ সরদারকেও রাখা হতো। সঙ্গে থাকতেন একজন ডাক্তারও। আজিম বখশ অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় (১৯৬২ সাল) চালকের লাইসেন্স পেয়েছিলেন। তখন পরীক্ষা নিত পুলিশের দুইজন সার্জেন্ট। আলী নওয়াজ নামের একজন সার্জেন্টের নাম এখনো মনে আছে আজিম বখশের । সদরঘাট থেকে ইসলামপুর হয়ে জিন্দাবাহার লেন ঘুরে লায়ন সিনেমার গলিতে গিয়ে পরীক্ষা শেষ হতো।

এ পথে  বেশ কয়েকটি টার্নিং ছিল বলে জানালেন আজিম বখশ। তিনি নিজে ব্যবসায় যুক্ত হন ১৯৬৭ সালে। আজিম বখশ গাড়িগুলোয় সেল্ফ স্টার্টার এবং ইলেকট্রিক হর্ন যুক্ত করেন, মানে কিছুটা টিপটপ করে তোলেন। কিন্তু পরিস্থিতি বদল হলো না অন্তত আর্থিক দিক থেকে। তখন প্রতি গাড়ি থেকে দিনে ৫০ টাকাও পাওয়া যেত না। অথচ সবমিলিয়ে খরচ ছিল যথেষ্টই। একই বছর মওলা বখশ পাকিস্তান গেলেন, সেখানে গিয়ে দেখলেন গাড়িগুলো চলছে ডিজেলে, আর ইঞ্জিনও বেডফোর্ডের। ফিরে এসে বললেন, এ ব্যবসার সুদিন ফুরিয়ে আসছে। তাই ধীরে ধীরে গাড়িগুলো বিক্রি করে দিয়ে তারা লবণ, ইট ইত্যাদির ব্যবসা শুরু করলেন।

দুই রুটে টাউন সার্ভিস

ছবি: আহমেদ আশিফ/বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবি সমগ্র/ফেইসবুক

আজিম বখশ জানালেন, ঢাকায় ট্রাফিক সিগনাল বাতি প্রথম বসেছিল সূত্রাপুরে। থানার কাছে এখন যেখানে মিলেনিয়াম হাসপাতাল হয়েছে সেখানে তিনদিক খোলা পাকা একটি ঘর ছিল — সেখান থেকে নিয়ন্ত্রিত হতো ট্রাফিক বাতিগুলো। লোহারপুলের মাঝখানটা ছিল উটের কুঁজের মতো। ওপাশ থেকে কোনো গাড়ি এলে এপাশের চালকের দেখা মুশকিল হয়ে যেত। তাই সূত্রাপুরে ট্রাফিক সিগন্যাল বসানো অতি আবশ্যক ছিল। বাতিগুলো বসিয়েছিল কলতাবাজারের ইলেকট্রিক কন্ট্রাক্টর চৌধুরী অ্যান্ড কোং। পরে এটি স্থানান্তরিত হয় সদরঘাটে। ট্রাফিক স্ট্যান্ড ছিল বাংলাবাজার আর বাহাদুর শাহ পার্কে। এখন অবশ্য ওই দুটির কোনোটিই নেই, অথচ জট বেড়েছে কয়েকগুণ।

ষাটের দশকের ঢাকায় টাউন সার্ভিসও শুরু হয়। দুটি রুটে (টু-এ এবং টু-বি) ছিল এ টাউন সার্ভিস। প্রথমটির চলা পোস্তগোলা থেকে শুরু হতো। তারপর লোহারপুল, ফরাশগঞ্জ, ইসলামপুর, চকবাজার হয়ে আবার পোস্তগোলায় এসে শেষ হতো। দ্বিতীয়টিও পোস্তগোলা থেকেই যাত্রা শুরু করত তবে এর যাত্রাপথ ছিল নওয়াবপুর, শাহজাহানপুর, মতিঝিল।

মুড়ির টিন সার্ভিস একসময় সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়ে। আশির দশকের শেষ অবধি ছিল মুড়ির টিনের রাজত্ব। একসময় ডিজেল গাড়ি পথ দখল করে নেয়। হারিয়ে যেতে থাকে মুড়ির টিন। সম্প্রতি কোক স্টুডিও বাংলার একটি গান (হালুগাইট্টে মুড়ির টিন) বাহনটিকে আবার আলোচনায় এনেছে। গানটি দিয়ে অনেক দিন পর স্মৃতির দরজা খুলে বেড়িয়ে এল মুড়ির টিন।

ছবি: আহমেদ আশিফ/বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবি সমগ্র/ফেইসবুক

সচল ঢাকার আশায়

আজিম বখশ আফসোস করলেন ঢাকার পথঘাট, পানির স্তর এবং বুড়িগঙ্গার দূষণ নিয়ে। বাকল্যান্ড বাঁধে বিকেলে দলবেঁধে ঘুরতে যাওয়ার কথা তিনি ভুলবেন না কোনোদিন, অথচ সেদিন কি আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব! ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে গুলশানে তারা যেতেন পিকনিক করতে। '৬৯ সালে গুলশানে মওলা বখশ সরদার একটি বাড়ি তৈয়ার করেন। বাড়ি তৈরিতে যত ইট লেগেছে সব আনা হয়েছিল ফতুল্লা থেকে নৌপথে। বালু নদী হয়ে আফতাবনগর ও বনশ্রীর মাঝখানের খাল দিয়ে হাতিরঝিল হয়ে গুলশান লেকে পৌঁছাতে পারত নৌকাগুলো।

মওলা বখশ দূরদর্শী ছিলেন আর ছিলেন দক্ষ মেকানিক। তিনি একটি অকেজো বুইক গাড়ির ইঞ্জিন দিয়ে বানিয়ে নিয়েছিলেন শখের লঞ্চ। কেরোসিন তেলে চলা ওই লঞ্চে করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শিকারে যেতেন তিনি। আজিম বখশ বলছিলেন, 'ত্রিশের দশকে বাবার (মওলা বখশ) একটি মোটর সাইকেল ছিল। এটি ছিল ঢাকার দুটি মোটর সাইকেলের একটি। অন্যটি ছিল ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেটের। বাবা কলকাতা যাওয়ার সময় মোটর সাইকেলের বিভিন্ন অংশ খুলে একটি বস্তায় ভরে ট্রেনে উঠতেন। শিয়ালদহে নেমে কাছের একটি মাঠে বসে আবার যন্ত্রাংশগুলো জুড়ে নিতেন। কলকাতায় যতদিন থাকতেন ওই মোটর সাইকেলে করেই ঘুরতেন।'

মওলা বখশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ট্রাকগুলোতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, চঞ্চল করেছিলেন ঢাকার পথঘাট। আজিম বখশ স্মৃতিগুলোর সম্ভবত শেষ উত্তরাধিকারী। ঢাকা কেন্দ্রের মহাফেজখানায় সেসব স্মৃতির অনেকটাই সংরক্ষিত আছে। তার আশা, নতুন প্রজন্মে ঢাকার জন্য মমতা সঞ্চারিত হবে এ থেকে। ঢাকা হয়ে উঠবে সবুজ, সচল এক নগরী যেমনটা ছিল পঞ্চাশ বা ষাটের দশকে তথা মুড়ির টিনের আমলে।

Related Topics

টপ নিউজ

মুড়ির টিন / ঢাকা / বাস সার্ভিস / ঢাকার ইতিহাস

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কাল থেকে পাওয়া যাবে নতুন টাকা, সংগ্রহ করবেন যেভাবে
  • দেশের প্রথম মনোরেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে: মেয়র শাহাদাত
  • আগামী বছর থেকে অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে
  • বাস-ট্রাক, ট্যাক্সির অগ্রিম কর বাড়ছে ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত, পরিবহন ব্যয় বাড়ার শঙ্কা
  • মেজর সিনহা হত্যা মামলা: প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল
  • বাজেটে প্রাথমিকে বরাদ্দ কমছে, বাড়ছে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষায়

Related News

  • বৈরী আবহাওয়া: ঢাকামুখী চার ফ্লাইট শাহ আমানতে জরুরি অবতরণ
  • ছিনতাইকারী সন্দেহে রাজধানীর দারুসসালামে ২ যুবককে পিটিয়ে হত্যা
  • রাজধানীতে আজ একাধিক কর্মসূচি, এড়িয়ে চলবেন যেসব সড়ক 
  • ঢাকাসহ ৯ জেলায় বজ্রঝড়ের সতর্কবার্তা: বিএমডি
  • রাজধানীতে অহেতুক সড়ক অবরোধ না করতে ডিএমপির অনুরোধ

Most Read

1
অর্থনীতি

কাল থেকে পাওয়া যাবে নতুন টাকা, সংগ্রহ করবেন যেভাবে

2
বাংলাদেশ

দেশের প্রথম মনোরেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে: মেয়র শাহাদাত

3
অর্থনীতি

আগামী বছর থেকে অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে

4
অর্থনীতি

বাস-ট্রাক, ট্যাক্সির অগ্রিম কর বাড়ছে ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত, পরিবহন ব্যয় বাড়ার শঙ্কা

5
বাংলাদেশ

মেজর সিনহা হত্যা মামলা: প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল

6
অর্থনীতি

বাজেটে প্রাথমিকে বরাদ্দ কমছে, বাড়ছে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষায়

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net