Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
June 20, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, JUNE 20, 2025
হেরে যেতে চাইছে না গানের ভুবনের বিখ্যাত জি-সিরিজ, নতুন পথ চলায় নতুন ভাবে

ফিচার

মাহবুব চোকদার
19 September, 2022, 12:10 pm
Last modified: 20 September, 2022, 06:00 pm

Related News

  • ক্যাসেটবন্দি পুরোনো স্মৃতিকে নতুন করে দেন তারা!
  • ব্রুস স্প্রিংস্টিনের ‘অপ্রকাশিত’ ৭ অ্যালবাম প্রকাশের ঘোষণা
  • যেভাবে বিখ্যাত ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ রচিত হয়
  • “ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথীরে” … দেখা একবার, কথা বহুবার!
  • বেঙ্গালুরুর রাস্তায় ব্রিটিশ পপ তারকা এড শিরানের গানে পুলিশের বাধা

হেরে যেতে চাইছে না গানের ভুবনের বিখ্যাত জি-সিরিজ, নতুন পথ চলায় নতুন ভাবে

আশির দশকের শুরুতে এম এ শোয়েব নামের এক শিল্পীর গান দিয়ে প্রথম অডিও ক্যাসেট আসে বাজারে। এলভিস, শ্রুতি-অভিশ্রুতি, সাউন্ড গার্ডেন, সারগাম ছিল গোড়ার দিকের রেকর্ডিং লেবেল। ক্রমে এ বাজার বড় হতে থাকে। নব্বইয়ে এসে নতুন ঢাকা আর পুরান ঢাকার রেকর্ডিং লেবেলগুলোর মধ্যে একটা বিভাজন দেখা দিল। জি সিরিজ, একতার, লেজার ভিশন ছিল নতুন ঢাকার রেকর্ডিং লেবেল। এ পর্যন্ত জি-সিরিজ ২ হাজারের অধিক শিল্পীর ৩০ হাজারের অধিক গান প্রকাশ করেছে।
মাহবুব চোকদার
19 September, 2022, 12:10 pm
Last modified: 20 September, 2022, 06:00 pm
ছবি- সংগৃহীত

'দুটি বিষয় খেয়াল করলেই বুঝবেন বাংলাদেশ গান পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে আলাদা। একটি হলো, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে গান ছিল অন্যতম হাতিয়ার আর দ্বিতীয়টি হলো গানের বিপুল বৈচিত্র্য। পশ্চিমের কোনো দেশের কোনো শিল্পী কি বলেন আমি শুধু বাখের (সেবাস্টিয়ান বাখ, ষোল শতকের জার্মান সংগীতকার) গান করি বা মোৎসার্ট ছাড়া অন্য কিছু করি না। আমাদের এখানে দেখেন শুধু রবীন্দ্রনাথের গান করেন এমন শিল্পীর সংখ্যা শতের অধিক হবে, নজরুলগীতির ক্ষেত্রেও সংখ্যাটা কম হবে না। অনেকে আছেন কেবল লোকসংগীতই করেন, পল্লীগীতির বেলাতেও তেমন উদাহরণ আছে। আর লালন তো একটা জীবন ধরণ। এতো অল্প আয়তনের জায়গায় এতো রকমের গান সত্যিই বিস্ময়কর। গানের এতো বৈচিত্র্য অথচ আমাদের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি দীনহীন। এর কারণ খুঁজতে আমাদের কিছুটা পেছনে ফিরতে হবে,' বলছিলেন খাদেমুল জাহান।

পূর্বসূরী গীতাঞ্জলি

এলিফ্যান্ট রোডে জি-সিরিজের পাঁচ তলা অফিস। গানের দোকান গীতাঞ্জলি জি-সিরিজের পূর্বসূরী। একসময় দেশে গানের দোকানও ছিল অনেক যারা পথচলতি মানুষকে গান শোনাত, গানের প্রতি ভালোবাসা জাগাত, গান বাড়ি নিয়ে যেতে উৎসাহিত করত। জাহানের কাছেই জানলাম, ২০০০ সালে সারা দেশে গানের দোকানের সংখ্যা ছিল ২০ হাজারের বেশি আর রেকর্ড লেবেল বা গান প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পাঁচশর কম ছিল। তখন কোনো কোনো শিল্পীর গানের ক্যাসেট কোটির বেশি বিক্রি হয়েছে। শিল্পী মমতাজ এমনকি আসিফ আকবরও আছেন এই তালিকায়। খুব জনপ্রিয় শিল্পী ছিলেন তপন চৌধুরী, কুমার বিশ্বজিৎ, ডলি সায়ন্তনী, শাকিলা জাফর, বেবি নাজনীন, শুভ্র দেব, মনির খান, ইমরান, বারী সিদ্দিকী প্রমুখও। অবাক করা ব্যাপার হলো, চলচ্চিত্রের গানের বাইরে রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, এন্ড্রু কিশোরের গানের অ্যালবাম খুব বেশি  প্রকাশিত হয়নি। প্লে ব্যাক সিঙ্গার হিসেবেই তাদের জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে।

গীতাঞ্জলি ছিল অডিও ক্যাসেটের দোকান। এলিফ্যান্ট রোডের ওই দোকানটি অনেকের কাছেই স্মৃতিজাগানিয়া। নাজমুল হক ভূঁইয়া যিনি খালেদ নামেই বেশি পরিচিত তিনি এর প্রতিষ্ঠাতা। রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি মনে রেখে দোকানের নাম রেখেছিলেন। সেটা ছিল ১৯৮৩ সাল। লং প্লের যুগ পার হয়ে গান প্রবেশ করেছে অডিও ক্যাসেটের যুগে।

ব্ল্যাক সোলো

জাহান দ্য ব্ল্যাকম্যান

জাহান বলছিলেন, 'আসলে এলপি ছিল আরবান ফেনোমেনা। অনেক বেশি লোকের এটি কেনার ক্ষমতা ছিল না। তবে দীর্ঘ সময় জুড়ে এর রাজত্ব ছিল। এলপির আমলে গান বলতে আসলে বুঝতে হবে প্লে ব্যাক সং। কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম ছিল, ও কী গাড়িয়াল ভাই বা রমজানের ওই রোজার শেষে অথবা বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম ইত্যাদি। এগুলো সিনেমার গান না হয়েও এলপি রেকর্ড মারফত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। এলপি প্লেয়ারকে আমরা বলতে পারি গান শোনার দরবারি মাধ্যম। অডিও ক্যাসেট আসার পরই গান শোনা ব্যক্তিগত পর্যায়ে পৌঁছেছিল। আশির দশকে প্রচুর লোক বিদেশে কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। তারা দেশে ফেরার সময় ক্যাসেট প্লেয়ার নিয়ে আসত। ক্যাসেটের আরেকটি সুবিধা ছিল তাতে রিরেকর্ড করা যেত। মূলত যান্ত্রিক উন্নতিই গানের বাজার বড় করে দিয়েছিল।'

তবে তখনো ভালো রেকর্ডিং স্টুডিও ছিল না দেশে। ঢাকার সদরঘাটসংলগ্ন পাটুয়াটুলি ছিল অডিও ব্যবসার প্রধান কেন্দ্র। আশির দশকের শুরুতে এম এ শোয়েব নামের এক শিল্পীর গান দিয়ে প্রথম অডিও ক্যাসেট আসে বাজারে। এলভিস, শ্রুতি-অভিশ্রুতি, সাউন্ড গার্ডেন, সারগাম ছিল গোড়ার দিকের রেকর্ডিং লেবেল। ক্রমে এ বাজার বড় হতে থাকে। পল্টনে গানের ক্যাসেটের কাভার ছাপানোর জন্য কিছু প্রেসও তৈরি হয়েছিল। গীতিকার, সুরকার, শিল্পী, রেকর্ডিস্ট, প্রোডিউসার মিলিয়ে একটা বড় দল তৈরি হয়েছিল যারা লেবেলগুলোতে ভিড় জমাত। নব্বইয়ে এসে নতুন ঢাকা আর পুরান ঢাকার রেকর্ডিং লেবেলগুলোর মধ্যে একটা বিভাজন দেখা দিল। জি সিরিজ, একতার, লেজার ভিশন ছিল নতুন ঢাকার রেকর্ডিং লেবেল।

নিষিদ্ধ

জাহান বেশি পরিচিত ব্ল্যাক ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও গিটারিস্ট হিসাবে। তিনি এখন জি-সিরিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। দুই দশক হতে চলল তিনি জি সিরিজের সঙ্গে আছেন। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা চারুকলায়।

ধর রাজাকার প্রথম ক্যাসেট

জাহান বলছিলেন, 'ক্যাসেট বিজনেসে বেশি ভালো করেছে সঙ্গীতা আর সাউন্ডটেক। ক্যাসেট তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তার রাজ্যপাট টিকিয়ে রেখেছিল। আমাদের এখানে সিডি বা কমপ্যাক্ট ডিস্কের প্রচলন ঘটে '৯২-'৯৩ সালে। ক্যাসেট কিন্তু এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাপট ধরে রেখেছিল ২০১০ সাল পর্যন্তও। আর ক্যাসেট আমলটাকেই অডিও বিজনেসের সোনালী সময় বলা যাবে। নব্বইয়ের মাঝামাঝিতে একেকটা রেকর্ডিং লেবেলে মার্কেটিং বিভাগে কর্মী থাকত ৩০-৪০ জন। ব্যাগভর্তি ক্যাসেট নিয়ে তারা সকালে বেড়িয়ে পড়ত, কোনো কোনো দিন কাজ সারতে রাত গভীর হয়ে যেত, মাসে দু তিনবার  জেলা সফরে বের হতো। খুচরা বিক্রেতাদের পুশ করতো নিজেদের সদ্য প্রকাশিত ক্যাসেটের গান বাজাতে।

দৈনিক পত্রিকা বা সাপ্তাহিকগুলোতে নতুন ক্যাসেটের বিজ্ঞাপন বের হতো তখন। ছাপা হতো পোস্টারও। ঈদের আগে আগে রেকর্ডিং লেবেলগুলোর অফিসে পা ফেলার জায়গা থাকত না। দূর দূর থেকে ক্যাসেট নিতে লোক আসত। একেকটি ক্যাসেট থেকে লাভ পাওয়া যেত ৬ টাকার মতো। তবে এমন অনেক শিল্পীর ক্যাসেটও বের হতো যাদের ৫০০ ক্যাসেটও চলত না। সেগুলো ফিরিয়ে এনে কখনো কখনো রিরেকর্ডিং করা হতো।'

কবিতার ক্যাসেট দিয়ে জি-সিরিজের প্রকাশনা শুরু হয় উননব্বই সালে। সেগুলোর নাম ছিল রাজাকার রাজাকার এবং হৃদয়ে জন্মভূমি। তারপর নিমা রহমান ও অঞ্জন দত্তের যুগল আবৃত্তির ক্যাসেট প্রকাশ করেছিল 'হ্যালো বাংলাদেশ' নামে। মিলার ভিডিও গানের ভিসিডি যাত্রাবালা জিসিরিজের সবচেয়ে বেশি প্রচারিত অ্যালবাম। প্রায় ৩০ লাখ বিক্রি হয়েছিল। ব্ল্যাকের প্রথম অ্যালবাম 'আমার পৃথিবী'ও ভালো বিক্রি হয়েছিল। সংখ্যাটি ৩ লাখ। এ পর্যন্ত জি-সিরিজ ২ হাজারের অধিক শিল্পীর ৩০ হাজারের অধিক গান প্রকাশ করেছে।

সিডির আয়ু দীর্ঘ হলো না

জাহান বলছিলেন, 'সিডি আসার পর অনেকে বলেছিলেন এর রাজত্ব দীর্ঘ হবে। তখনো আমাদের বুঝতে বাকি ছিল সময় দৌড়ের ট্র্যাকে নেমে পড়েছে। ২০০০ সালের পর থেকে আর নিঃশ্বাস ফেলার সময় পায়নি অডিও ইন্ডাস্ট্রি। টিকে থাকার জন্য নিত্য নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হয়েছে। যারা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি তারা হারিয়ে গেছে। জি-সিরিজ অবশ্য অর্জিত মুনাফা পুনরায় ইন্ডাস্ট্রিতেই বিনিয়োগ করেছে। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জি-সিরিজের সঙ্গী প্রতিষ্ঠান হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে অগ্নিবীণা, জি টেকনোলজিস, নিউজজি২৪ডটকম, বিক্রয়বাবাডটকম এবং জি প্রাইম।'

নিষিদ্ধ ও অন্যান্য

জি-সিরিজের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীত। সংগীত ব্যবসায়ীরা ব্যান্ড সংগীত নিয়ে শঙ্কা কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না। এ সংগীতের শ্রোতা যেহেতু বেশি শহরকেন্দ্রিক ছিল তাই বিক্রির দিকটায় নিশ্চিত হতে পারছিল না ব্যবসায়ীরা।

ব্ল্যাক ব্যান্ডের সদস্যদের সঙ্গে জাহান (সামনে বাঁয়ে)/ ছবি- ইমতিয়াজ আলম বেগ

জি-সিরিজ গোড়া থেকেই নতুন কিছু করার ব্যাপারে এবং নতুনদের পরিচিত করতে উৎসাহী ছিল। ব্যান্ড সংগীতকেও তাই জি-সিরিজ সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। একক অ্যালবাম ছাড়াও প্রকাশ করত মিক্সড ব্যান্ড অ্যালবাম। ওই মিক্সড অ্যালবামের সুবিধা ছিল- চারটি সুপরিচিত ব্যান্ডের সঙ্গে দুটি বা তিনটি নতুন ব্যান্ডের গানও প্রকাশ করা যেত। এর ফলশ্রুতিতে সফট রক, হার্ড রক, হিপ হপ, সোল, মেটাল, রকঅ্যান্ডরোল, পপসহ বিভিন্ন ঘরানার গান শুনতে পেয়েছে শ্রোতারা।

'২০০১ সালে ঈশা খান দুরের সমন্বয়ে (কোঅর্ডিনেশন) প্রথম মিক্সড ব্যান্ড অ্যালবাম ছাড়পত্র প্রকাশিত হয়। তারপর গুরু আজম খানের সমন্বয়ে প্রকাশিত হয় প্রজন্ম। এরপর থেকে একে একে অনেক নতুন ব্যান্ডের গান প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যেমন ২০০৭ সালে প্রকাশ করে ভলকানো ব্যান্ডের গান। ভলকানো দি বিডি ব্যান্ড নামে একটি ফেসবুক পোস্টে লেখা হচ্ছে, ভলকানো নামের আমাদের সেই প্রথম অ্যালবামের কথা এখনও কিছু মানুষ মনে রেখেছে। খুব ক্ষুদ্র হলেও এগুলোই তো মূলত জীবনের প্রাপ্তি। রোকনুজ্জামান রাকেশ নামের একজন নিচে কমেন্ট করেছেন, অমূলক ভালোবাসা শিরোনামে আপনাদের একটি গান আমি এখনো গাই। ভলকানো আমার কৈশোরের ভালোবাসা। প্লিজ আপনারা গান নিয়ে থাকুন। ভালোবাসা সবসময় আপনাদের প্রতি। ওই গানগুলো করার সময় আমার চোখের কোণে অশ্রু চলে আসে। ২০০৭-২০০৮ সালে ভাইব আর ভলকানো নিয়ে ছিলাম। প্রথম ঢাকায় এসে ফার্মগেট থেকে কিনেছিলাম আপনাদের অ্যালবাম,' বলছিলেন জাহান।

আজম খানের কোঅর্ডিনেশনে মিক্সড ব্যান্ড অ্যালবাম প্রজন্ম

আবার ২০১৭ সালে এসে দেখি পত্রিকায় লেখা হচ্ছে, চারপাশে দম বন্ধ করা বাস্তবতা। কিন্তু এ থেকে কি মুক্তি নেই জীবনের? গানে গানে একদল তরুণ ছুড়ে দিচ্ছে এ প্রশ্ন, চিৎকার দিয়ে তারা বলছে, জীবনের কাছে আজ, জীবনের মানে জানতে চাই। চিৎকার নামের একটি ব্যান্ড দল তখন যোগ দিয়েছিল মুক্তির মিছিলে। তারা কোলাহল তৈরি করতে বেছে নিয়েছিল গানকে। গানের মাধ্যমে তারা ভালোবাসা, ক্রোধ, ঘৃণার প্রকাশও ঘটাতে চাইত। আর গানের জোরে পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার স্বপ্নও দেখেছে। সেই চিৎকার নামের ব্যান্ড দলের চিৎকার শিরোনামের অ্যালবামটিও প্রকাশ করেছে জি-সিরিজ। আইয়ুব বাচ্চুর শেষ গানও প্রকাশ করেছিল জি-সিরিজ ছায়াশরীরী নামের একটি মিক্সড অ্যালবামে। ২০১৬ সালের ঈদুল ফিতরে বেশ আলোচনা তৈরি করেছিল গানটি।

ক্রিপটিক ফেইটের দানব

সাহসী উদ্যোগও ছিল জিসিরিজের। মাকসুদের অপ্রাপ্ত বয়স্কের নিষিদ্ধ অ্যালবামটি নিয়ে অন্যরা যখন ভীত বা সংকুচিত তখন জি-সিরিজই তা প্রকাশ করতে এগিয়ে এসেছিল। এই অ্যালবাম রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, উগ্রবাদ আর ভঙ্গুর শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে বারুদ ছড়িয়ে দিয়েছিল। অ্যালবামের গীতি ভাষণ (মৃত্যুদণ্ড) গানটি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ব্যান্ড সংগীতকে সারগামও বড় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। অবসকিউর, সোলস, চাইম, আর্ক, ওয়ারফেজ, নোভা, রেনেসাঁ, প্রমিথিউস, মাইলস, এলআরবি, উইনিং, ফিলিংসসহ আরো বেশ কিছু ব্যান্ডের অ্যালবাম তারা বাজারে এনেছে।

ব্যান্ড গান কিন্তু একসময় আরবান বা নাগরিক শিল্পের তকমা থেকে মুক্ত হতে পেরেছিল। আর তার জন্য জাহান তিনজনের নাম করলেন, বিপ্লব, হাসান ও আইয়ুব বাচ্চু। তাদের গান গ্রাম-গঞ্জ, হাট আর মাঠেও শোনা গিয়েছে। নব্বইয়ের দশক থেকে জি-সিরিজ ধারাবাহিকভাবে নিয়মিত ব্যান্ড সংগীতের অ্যালবাম বের করত। যাদের গান তারা প্রকাশ করেছে তাদের মধ্যে আছে জিন স্প্লিট, এয়ার অ্যান্ড এয়ার, পয়জন গ্রিন, আর্টসেল, নেমেসিস, অর্থহীন, লেজেন্ড, স্যাটানিক, স্কেয়ারক্রো, ওয়ারফেজ, রক স্ট্রাটা, ব্ল্যাক, ক্রিপটিক ফেইট, শিরোনামহীন, মেঘদল, আন্ডারগ্রাউড পিস লাভারস ইত্যাদি।

এমপি থ্রি, পাইরেসির দুর্যোগ

প্রযুক্তিও সঙ্গী থেকেছে ওই যাত্রায়। নব্বইয়ের শেষ দিকে ওয়ার্ল্ডকম দেশে সিডি ম্যানুফ্যাকচারিং শুরু করে। এর মধ্যে ভালো কিছু রেকর্ডিং স্টুডিও গড়ে উঠেছিল যেমন আর্ট অব নয়েজ, মিউজিক ম্যান, প্রো মিক্স ইত্যাদি। এ সময়কালে ওয়াকম্যানের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গান শোনার হার বেড়ে যায়।

তবে এমপিথ্রি আসার পর গানের ব্যবসা চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। গান বিনিময় এবং গান সংগ্রহ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে স্থানান্তরিত হয়। তখন একজনের কাছ থেকে কোনো গান সহজেই একাধিক জনের কাছে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ তৈরি হয়। তাতে পুরো অডিও এবং ভিডিও ইন্ডাস্ট্রির জন্য দুর্যোগ তৈরি হয়। সেটা ২০০৭-২০০৮ সালের কথা।

জাহান বলছিলেন, 'তখন গানের যথেচ্ছ প্রসার ঘটে, একজন শিল্পীর সব গান দু-তিনটি সিডিতে পুরে বাজারে চলে আসতে থাকে। ঘরে ঘরে তৈরি হয় স্টুডিও। সংগীত প্রযোজক, পরিবেশক বা শিল্পী গানের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারান। ৪-৫ বছর এ দুর্যোগ চলেছিল। ততদিনে অবশ্য মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে তারা চেষ্টা চালায় পাইরেসি বন্ধের। বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজরদারি জোরদার হয় এবং ফলাফলে পাইরেটেড অ্যালবাম বিক্রি বন্ধ হয়।

৩৫ বছর পূর্তিতে জি-সিরিজ পরিবার

আসলে আমাদের এখানে শিল্পীদের সঙ্গে মৌখিক চুক্তিতেই ক্যাসেট বা সিডি মানে গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়ে আসছিল। রয়্যালটি সিস্টেম চালু হয় ২০০৫ সাল থেকে। তার আগে গানের সঙ্গে যুক্ত শিল্পী ও কলাকুশলীরা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে থোক টাকা পেয়ে থাকতেন। কোনো কোনো শিল্পীর কাছে ক্যাসেট বের হওয়াই বড় কথা ছিল, আর্থিক বিষয়ে তারা উচ্চবাচ্য করত না আর সেটাই রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।'

জাহান আরো বলছিলেন, 'জি-সিরিজে আমার কার্যকালের সবচেয়ে ভালো সময় ২০০৯ সাল কারণ তখন পাইরেসি বন্ধের ফলে নতুন করে অডিও বিজনেস চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল। করোনার পরে ২০২১ সালটাও গুরুত্বপূর্ণ কারণ ধাক্কা সামলে ওঠা গিয়েছিল। তার আগে পুরো দুইটি বছর ছিল নিশ্চুপ, নিথর সময়। অডিও ব্যবসায় উপার্জন বলতে গেলে ছিলই না। আরবিটি মানে রিং ব্যাক টোন ছিল সম্বল। মোবাইল কোম্পানিগুলোর ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বা ভাস এর অন্তর্ভুক্ত ওই আরবিটি। এটি চালু হয়েছিল গেল দশকের শুরুতে। এর মধ্য দিয়ে অডিও ইন্ডাস্ট্রি বা শিল্পীদের কিছু উপার্জন হয়েছে।

এফএম রেডিওর যখন তুঙ্গ সময় মানে ২০১০ সালের দিকেও সঙ্গীত শিল্পী ও মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে একটা জোয়ার এসেছিল। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এখন প্রযুক্তি এতো দ্রুত বদলাচ্ছে যে কোনো মাধ্যমই দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। আমার মনে পড়ছে ২০০৫ সালের দিকে আইপড যখন আমাদের দেশে জনপ্রিয় হলো তখনো গান শোনার হার বেড়ে গিয়েছিল উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। এই যে এখন অ্যাপের দারুণ সময় যাচ্ছে। আপনি ইউটিউব, ফেসবুক বা নেটফ্লিক্স বা স্পটিফাই ডাউনলোড করে ওখানে স্টোর করা সব অডিও বা ভিডিও দেখতে ও শুনতে পারেন। তবে যে অ্যাপগুলোয় পে করতে হয় না সেগুলোয় গান শোনা বা ছবি দেখা সুখকর হয় না যেমন ইউটিউব গান শোনার ভালো মাধ্যম নয় মোটেই অথচ এ থেকেই বেশি লোক গান শোনে, ফেসবুকের ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটছে। আর এগুলো থেকে আয়-উপার্জন যে খুব বেশি তা কিন্তু নয়। ধরুন কোনো গান যদি ৩-৫ মিলিয়ন  ভিউ হয় তবে ৪০০- ৫০০ ডলার উপার্জন হয়। এবার হিসাব করুন অডিও ও ভিডিও রেকর্ডিং, শিল্পী সম্মানী, প্রচারণা ইত্যাদিতে খরচ দিয়ে কতইবা থাকে? আর এটাই যদি আয়ের উৎস হয় তবে অফিস চালানো সত্যি কঠিন। তদুপরি কোটি সংখ্যক ভিউ পাওয়া যায় এমন গান মাসে দুই মাসে হয়তো একটি দুটি হয়। আর এ কারণেই জি-সিরিজ অতি সম্প্রতি জি প্রাইম তৈরি করেছে। এটি গান, নাটক, চলচ্চিত্র ইত্যাদির একটি সমন্বিত প্লাটফর্ম।'

তবু আশা বেঁধে রাখি

ডিজিটাল আমল শুরু হওয়ার পর অডিও ইন্ডাস্ট্রির চিত্রই বদলে গেছে। এখনো জি-সিরিজে শতাধিক কর্মী আছে। তবে পুরোনো কর্মী নেই বেশি। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা সকলেই আইটি ব্যাকগ্রাউন্ডের, যারা সোশাল মিডিয়ায় ব্যস্ত সময় পার করেন। মার্কেটিংও যেহেতু প্রবেশ করেছে ডিজিটাল যুগে তাই সাবেকি আমলের বিপণন কর্মী ও বিপনন ব্যবস্থাপনা আর নেই।

জি-সিরিজে আরো আছে অ্যাপ ডেভেলপার। আগের বড় বড় রেকর্ডিং লেবেলগুলোর অনেকেই নতুন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি। তারা বিনিয়োগ সরিয়ে নিয়েছে গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি বা রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়। ফলে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি বলতে যে বৃহৎ ব্যবসা চক্র বোঝায় তা আর নেই আমাদের দেশে। পুরনো লেবেলগুলো আগের গান ডিজিটালি ট্রান্সফার করে আপলোড দেয়, নতুন অ্যালবাম করে না বললেই চলে।

ব্ল্যাকের অ্যালবাম প্রকাশনা অনুষ্ঠানে নাজমুল হক ভূঁইয়া (মাঝখানে)

তবুও আশাবাদী জাহান। তিনি বলছিলেন, 'আমাদের সাম্প্রতিকতম প্রযোজনা 'ব্যবসার পরিস্থিতি' মাত্র ৩ সপ্তাহে প্রায় দুই কোটি লোক দেখেছে বা শুনেছে। এই সংখ্যাটা যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। তাই বলা যায় গানের প্রতি মানুষ আগ্রহ হারায়নি বরং মানুষ আগের চেয়েও বেশি সংখ্যায় গান শুনছে। আমরা যারা সংগীত নিয়ে কাজ করি তাদের দরকার সময়কে খেয়াল করে চলা। প্রতিটি সময়েরই দাবি থাকে, সেটা ধরতে জানাই মুন্সিয়ানা।' 

Related Topics

টপ নিউজ

ক্যাসেট / জি-সিরিজ / গান / গানের ডালি / অ্যালবাম

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে না জড়ানোর অনুরোধ পাকিস্তান সেনাপ্রধানের
  • সরকারি সেবায় ঘুষবাণিজ্য: শীর্ষে বিআরটিএ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বিতীয়—বিবিএসের জরিপ
  • যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের খামেনিকে হত্যার সম্ভাবনা নিয়ে কথাই বলতে চান না পুতিন
  • ইসরায়েলিদের ‘সামরিক ও গোয়েন্দা এলাকা’ এড়িয়ে চলার আহ্বান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
  • এনবিআরের নীতির হঠাৎ পরিবর্তনের কবলে শিপিং খাত, ৩৫০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ ঝুঁকিতে
  • ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি, ঘোষণা রবিবার: উপদেষ্টা ফারুকী

Related News

  • ক্যাসেটবন্দি পুরোনো স্মৃতিকে নতুন করে দেন তারা!
  • ব্রুস স্প্রিংস্টিনের ‘অপ্রকাশিত’ ৭ অ্যালবাম প্রকাশের ঘোষণা
  • যেভাবে বিখ্যাত ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ রচিত হয়
  • “ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথীরে” … দেখা একবার, কথা বহুবার!
  • বেঙ্গালুরুর রাস্তায় ব্রিটিশ পপ তারকা এড শিরানের গানে পুলিশের বাধা

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে না জড়ানোর অনুরোধ পাকিস্তান সেনাপ্রধানের

2
বাংলাদেশ

সরকারি সেবায় ঘুষবাণিজ্য: শীর্ষে বিআরটিএ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বিতীয়—বিবিএসের জরিপ

3
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের খামেনিকে হত্যার সম্ভাবনা নিয়ে কথাই বলতে চান না পুতিন

4
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলিদের ‘সামরিক ও গোয়েন্দা এলাকা’ এড়িয়ে চলার আহ্বান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

5
অর্থনীতি

এনবিআরের নীতির হঠাৎ পরিবর্তনের কবলে শিপিং খাত, ৩৫০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ ঝুঁকিতে

6
বাংলাদেশ

৫ আগস্ট সরকারি ছুটি, ঘোষণা রবিবার: উপদেষ্টা ফারুকী

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net