Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
June 03, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JUNE 03, 2025
ঠাকুরের ১৬০তম জন্মবার্ষিকী

ফিচার

আন্দালিব রাশদী
07 May, 2021, 12:40 pm
Last modified: 07 May, 2021, 01:27 pm

Related News

  • রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অপূর্ব আত্মজীবনী
  • কুষ্টিয়ায় বিশ্বকবির ম্যুরালে কালি, ভাঙচুর
  • প্রাণ ফিরে পেল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৩২ বছরের স্মৃতি বিজড়িত কুষ্টিয়ার কাছারি বাড়ি
  • হিটলারকে হত্যা পরিকল্পনার জন্য যখন রবীন্দ্রনাথের ‘নাতিকে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল
  • রবীন্দ্রনাথ হয়ে পর্দায় আসছেন অনুপম খের

ঠাকুরের ১৬০তম জন্মবার্ষিকী

বাংলার ১৩২৮ এবং ইংরেজির ১৯২১ সালে রবীন্দ্রনাথ কি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন সে কথাই এই লেখাটিতে তুলে ধরা হচ্ছে।
আন্দালিব রাশদী
07 May, 2021, 12:40 pm
Last modified: 07 May, 2021, 01:27 pm

২৫ বৈশাখ ১৪২৮, রবীন্দ্রনাথের ১৬০তম জন্মদিনের সহজ হিসেব শতবর্ষ আগে তিনি ৬০তম জন্মদিবস উদযাপন করেছেন। সে বছর অর্থাৎ বাংলার ১৩২৮ এবং ইংরেজির ১৯২১ সালে রবীন্দ্রনাথ কি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন সে কথাই এই লেখাটিতে তুলে ধরা হচ্ছে।

স্প্যানিশ ফ্লু কি রবীন্দ্রনাথকে ভারতবন্দী করে রেখেছিল?

স্প্যানিশ ফ্লুর কঠোর অবস্থানকাল ২ বছর ২ মাস- ১৯১৮'র ফেব্রুয়ারিতে শুরু, ১৯২০'র এপ্রিলে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে শুরু করে। এর মধ্যে হরণ করে প্রায় ৫ কোটি প্রাণ, আক্রান্ত হয় ৫০ কোটি মানুষ। স্প্যানিশ ফ্লুর কেন্দ্রভূমি ইউরোপ। এপ্রিল ১৯১৭ থেকে এপ্রিল ১৯২০ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতবর্ষের সীমান্ত অতিক্রম করেননি। নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথের মহামারি সচেতনতার বিষয়টি অনালোকিত রয়ে গেছে। 

১১ মে ১৯২০ ঠাকুর বিলেত যাত্রা করেন এবং ৫ জুন, ১৯২০ তারিখে প্লাইমাউথ বন্দরে অবতরণ করেন। এই সফরে তিনি পরের বছরের জুলাই এর অর্ধেকটা সময় পর্যন্ত বিদেশেই ছিলেন।

এই রচনাটি বিশ্বভারতী থেকে প্রকাশিত 'সেন্টেনারি ভলিউম' এবং প্রশান্তকুমার পালের 'রবিজীবন' অনুসরণ করে ঠিক শতবর্ষ আগে ১৯২১-এ রবীন্দ্রনাথ কী করেছেন তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণী তুলে ধরছে। 

২৮ অক্টোবর, ১৯২০ থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। সফরে পুত্র রথীন্দ্রনাথ ও পুত্রবধূ প্রতিমা ছিলেন স্থায়ী সঙ্গী। 

ক্যাটসকিল হিল

নিউ ইয়র্কের কাছাকাছি ক্যাটসকিল হিল-এ খ্রিস্টমাসের সপ্তাহটি কাটিয়ে ১৯২১-এর প্রথম দিন নিউ ইয়র্ক ফিরলেন। পরদিন ২ জানুয়ারি রাতে কমিউনিটি ফোরামের আয়োজনে হাই স্কুল অব কমার্স হলে 'দ্য মিটিং অব ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট' প্রবন্ধ পাঠ করেন। ৪ জানুয়ারি তিনি হেলেন কেলারের বাড়ি যান এবং দু'জনের জন্যই এটি ছিল একটি স্মরণীয় সাক্ষাৎকার। রবীন্দ্র জীবনীকারের মতে তারিখটি ৪ জানুয়ারি হলেও রবীন্দ্রনাথের পুত্র রথীন্দ্রনাথ লিখেছেন এই সাক্ষাৎকারটি খ্রিষ্টমাসের সময়ই হয়েছে। 

হেলেন কিলার জানান তিনি রবীন্দ্রাথের 'গীতাঞ্জলী এবং 'গার্ডেনার' পড়েছেন। কবি অভিভূত হয়ে পড়েন। ৯ জানুয়ারি তিনি বোস্টনে এলেন, থাকলেন হোটেল বেলেভ্যুতে। 

১০ জানুয়ারি ইস্ট এশিয়াটিক সোসাইটির ডিনারে অংশ গ্রহণ করলেন এবং 'এডুকেশন ইন ইন্ডিয়া' শিরোনামের একটি প্রবন্ধ পাঠ করলেন। ১১ জানুয়ারি ট্যাভার্ন ক্লাব মধ্যাহ্ন ভোজনে যোগ দেন এবং কয়েকটি কবিতা পাঠ করেন এবং 'ওগো দখিন হাওয়া' গানটি গেয়ে শোনান। ১২ জানুয়ারি ক্যামব্রিজে হগ মিউজিয়াম ঘুরে দেখেন, সেদিনই হার্ভার্ড নিউ থিয়েটার হলে 'দ্য ফোক পোয়েটস অব বেঙ্গল' প্রবন্ধ পাঠ করেন। পরদিন ১৩ জানুয়ারি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে 'দ্য মিটিং অব দ্য ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট' প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 

অন্ধ হেলেন কেলার স্পর্শ করে রবীন্দ্রনাথকে অনুভব করছেন

১৭ জানুয়ারি রবীন্দ্রনাথের প্রকাশক ম্যাকমিলান কোম্পানির প্রতিনিধি কবির সাথে দেখা করেন এবং তাদের প্রকাশিত কিছু বই শান্তিনিকেতনে দেবার প্রস্তাব করেন।

রবীন্দ্রনাথের সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল তার সৃষ্টি করা শিক্ষাঙ্গনের জন্য সাহায্য প্রাপ্তি। তিনি বহু আশা নিয়ে এসেছেন, কিন্তু তিনি আশাবঞ্জক সাড়া পাননি, কোনো কোনো সাক্ষাতের পর বিরক্ত হয়েছেন ও মন খারাপ করে তাকে ফিরতে হয়েছে।

সেন্টেনারি ভলিউমে উল্লেখ করা হয়েছে ২৫ জানুয়ারি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি হলে ভাষণ দেন; প্রশান্তপালের বইয়ে সেই কর্মসূচীর উল্লেখ নেই। ২৭ জানুয়ারি হোটেল অ্যাস্টর-এ রবীন্দ্রনাথের সম্মানে পোয়েট্রি সোসাইটি ডিনারের আয়োজন করে।  

১ ফেব্রুয়ারি রবীন্দ্রনাথ শিকাগো আসেন এবং মিসেস মুডির আতিথ্য গ্রহণ করেন। এসময় নারী আন্দোলনের নেত্রী জেইন অ্যাডামস-এর সাথে তার পরিচয় হয়। ৯ ফ্রেব্রুয়ারি বের হলেনটেক্সাসের পথে। পথে ১০ ফেব্রুয়ারি ওকলাহামা আর্ডমোর শহরে 'ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট' শীর্ষক বক্তৃতা দেন এবং ২০০ ডলার সম্মানী লাভ করেন। এরপর সেখানকার প্রেসবাইটেরিয়ান চার্চেও বিনে সম্মানীর একটি বক্তৃতা দেন। ১১ ফেব্রুয়ারি ওকলাহামা বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ব নির্ধারিত 'দ্য মিসটেকস অব বেঙ্গল' বক্তৃতা দেন। তার অন্তত ৩০০ ডলার সম্মানী পাবার কথা, কিন্তু আয়োজকরা জানালেন টিকেট বেঁচে সবশুদ্ধ ৩০০ ডলারই এসেছে। 

১২  ফেব্রুয়ারি টেক্সাসের ডালাস শহরের অ্যালফোঁস হোটেলে উঠেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি হিউস্টন শহরের সিটি অডিটেরিয়ামে 'দ্য মিটিং অব ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট' শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন এবং ৫০০ ডলার সম্মানী পান। এরপর ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ প্রতিদিন কোথাও না কোথাও তার একটি ভাষণ নির্ধারিত ছিল এবং এ ভাষণের জন্য যথাক্রমে ৩০০, ৫০০, ২০০, ২০০ ও ৩০০ ডলার সম্মানী গ্রহণ করেছেন। ২০ ফেব্রুয়ারি ডালাসে ইউনিটারিয়ান চার্চে ভাষণ দেন। ২১ ফেব্রুয়ারি ডেল্টনের পার্লস কলেজে কবিতা পাঠ করে সেদিনই শিকাগো রওয়ানা হন। ১৫ মার্চ রাতের ট্রেনে নিউ ইয়র্ক যাত্রা করেন। ১৯ মার্চ রাইনডাস নামের একটি ডাচ জাহাজে ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেন। তার সঙ্গী প্রতিমা পুত্র রবীন্দ্রনাথ ও কেদারনাথ দাশগুপ্ত। দু'একদিন আগে তরুণ লেনার্ড এমহার্স্টের সাথে পরিচয়। পরবর্তীকালে দুজনই দু'জনকে কমবেশি প্রভাবিত করেছেন। 

রবীন্দ্রনাথ ও তার প্রিয়জনদের চিঠিপত্র ডায়েরি টীকা ইত্যাদি স্পষ্ট করে তুলেছে যে আমেরিকা সফরের উদ্দেশ্যে সফল হয়নি এবং কবি ভীষণ হতাশ হয়েছেন। রথীন্দ্রনাথ লিখেছেন এ সময় ডক্টর লুইস এবং চার্লস অ্যান্ড্রুজকে লেখা রবীন্দ্রনাথের চিঠিগুলো তার হতাশাবঞ্জন মনোভাব প্রকাশ করে। অ্যান্ড্রুজকে লিখেছেন বিশ্বভারতীর পরিকল্পনা তার কাব্য পরিকল্পনাকে রুদ্ধ করে দেবে।

রবীন্দ্রনাথ ৫ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহের 'মন্ত্রজপ করতে করতে' আমেরিকা এসেছিলেন। সামান্য প্রতিশ্রুতি ছাড়া তেমন কিছু পাননি। ফলে সফরসঙ্গীদের নিয়ে ভ্রমণের ব্যয় ভার পড়েছে জমিদারির আয়ের উপর।

লর্ড লিভারহিউমের বাড়ি

নিউ ইয়র্ক  থেকে ছেড়ে আসা জাহাজ কবে প্লাইমাউথ পৌঁছেছে এ নিয়ে বিতর্ক আছে। সম্ভবত ৩১ মার্চই হবে,  সেদিন রবীন্দ্রনাথ সপরিবার হোটেল রেজিনাতে উঠেন। ২ এপ্রিল হ্যাম্পস্টিড-এ লর্ড লিভারহিউমের বাড়ির বাগানে রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতিতে তার 'বিদায় অভিশাপ' নাটক মঞ্চস্থ হয়। 

৮ এপ্রিল কেপেল স্ট্রিট-এ ভারতীয় ছাত্রদের হোস্টেলে একটি অনুষ্ঠানে 'ঠাকুর দ্য মিটিং অব দ্য ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট' প্রবন্ধ পাঠ করেন। এ সময় রবীন্দ্রনাথের লেখা পত্রিকায় প্রকাশিত কিছু চিঠিপত্র গান্ধীকে বিরক্ত করে থাকবে- তিনি বলেছেন এসব রবীন্দ্রনাথের ক্রোধ এবং অজ্ঞানতা থেকে উদ্ভুত।

১৪ এপ্রিল ১৯২১, বাংলা নববর্ষের দিন রবীন্দ্রনাথ স্বজনদের নিয়ে লন্ডনে নববর্ষের উপাসনা করেন। ১৫ এপ্রিল হাউস-অব-কমন্সে মধ্যাহ্ন ভোজে কয়েকজন শ্রমিক দলীয় নেতার সাথে মিলিত হন। 

রবীন্দ্রনাথ ও রমা রঁলা

১৬ এপ্রিল একটি ছোট উড়োজাহাজে রবীন্দ্রনাথ ক্রয়ডন বিমানবন্দর থেকে সপরিবার প্যারিসে আসেন। ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় রবীন্দ্রনাথ রিচার্ড বাগনারের গীতিনাট্য দেখতে গ্র্যান্ড অপেরায় যান। পরদিন ১৯ এপ্রিল রবীন্দ্রনাথ এলেন রমা রঁলার বাড়িতে। এটি ছিল দু'জনের জন্যই বহুল প্রত্যাশিত একটি সাক্ষাৎকার। রবীন্দ্রনাথ ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করেছেন। রমা রঁলার বোন দু'জনের মধ্যে দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন। ২১ এপ্রিল রবীন্দ্রনাথ রমা রঁলা ও তার বোনকে একটি রেস্তোরায় মধ্যহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানালেন। দু'জনের দোভাষী মাধ্যমে অনেক কথা হলো। রবীন্দ্রনাথ দুটি গান গেয়েও শোনালেন। ২১ এপ্রিল রবীন্দ্রনাথ গিমে মিউজিয়ামে 'অ্যান ইন্ডিয়ান ফোক রিলিজিয়ন' প্রবন্ধটি পাঠ করলেন।

২৩ এপ্রিল দার্শনিক আঁরি বের্গসঁ রবীন্দ্রনাথের সাথে দেখা করেন, ২৫ এপ্রিল তিনি 'দ্য স্পিরিট অব ইন্ডিয়ান পাবলিক' পাঠ করেন। ২৭ এপ্রিল প্যারিস থেকে জার্মানির স্ট্রাসবুর্গ আসেন। ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে 'দ্য মেসেজ অব দ্য ফরেস্ট' প্রবন্ধ পাঠ করেন। 

**৮

তিনি তখন জার্মানিতে।

১৯২১-এর ২৫ বৈশাখ খ্রিষ্টীয় পঞ্জিকায় ৬ মে রবীন্দ্রনাথের ৬০ বছর পূর্তি দিবসে শুভেচ্ছা জানাতে সেখানে রুডলফ ইউকেন, গেরহার্ত হার্ডপ্তমান, হারমান হেসে, কনরাড হাউসমান, কাউন্ট বার্নস্টোর্ফ কাউন্ট কেয়সারলিং প্রমুখের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়। তারা রবীন্দ্রনাথকে শুভেচ্ছা জানান এবং বিশ্বভারতী গ্রন্থাগারের জন্য ৪০০ মূল্যবান জার্মান বই উপহার দেন।

ষাটতম জন্মদিনে তিনি চার্লস অ্যান্ড্রুজকে লিখলেন, যারা তাকে ভালোবাসেন তারা কাছে না থাকায় তিনি দিনটি অনুভব করতে পারছেন না। এটি তার কাছে হয়ে উঠেছে পঞ্জিকার একটি তারিখ।

কিন্তু ইন্দিরা দেবীকে লিখলেন ভিন্ন কথা :

'মনে হচ্ছে দেশে একদিন জন্মেছিলুম, সে জন্ম বহুদূরে পড়ে গেছে- তার পরে পঞ্চাশ বছর বয়সে আবার পশ্চিম মহাদেশে জন্মলাভ করেচি। এরা আমাকে আপন করে নিয়েচে। এদের প্রীতি যে কত গভীর এদের আত্মীয়তা কত যে সত্য তা মনে করে আমি আশ্চর্য্য হয়ে যাই। য়ুরোপের মহাদেশে আমার ঘর যে এমন করে বাঁধা হয়ে গেছে তা আমি এখানে আসবার আগে কল্পনা করতে পারিনি। আমি বুঝতেই পারিনে এত শ্রদ্ধা ভালোবাসা আমি কেন পেলুম। ৬০ বছর আগে একদিন যখন বাংলাদেশে জন্মছিলুম তখন মর্ত্ত্যজন্মের যে অসীম সম্পদ লাভ করেছিলুম সেও কি হিসাব করে ঠিক বোঝা যায় এও তেমনি। বিদেশীর কাছ থেকে এই যে অজস্র ভালোবাসা পাচ্চি এর কি পুরো দাম কোনো দিন দিয়েছিলুম? দেনার সঙ্গে পাওনার হিসাব আমি ত মেলাতে পারিনে। আমার দ্বিতীয় জন্মের এই যে দান পেলুম জননী ধরিত্রীর এই আশীর্বাদ আমি নত হয়েই গ্রহণ করেছি- এতে আমার কোনো অহংকার নেই। (প্রশান্ত কুমার পালের রবিজীবনী-অষ্টম খন্ড)

এতে কোনো সন্দেহ নেই বাংলা যখন তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল ইউরোপই তাকে নোবেল পুরষ্কার দিয়েছে, নতুন করে জাগিয়েছে। ১৯২০-২১ এর পঞ্চম বিদেশ সফরের আমেরিকা অংশ ছিল ভীষণ হতাশাবঞ্জক। তবুও রবীন্দ্রনাথ এমন করেই লিখবেন- এটাই তো তার কাছে প্রত্যাশিত।

অন্য এক সফরে আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

***
২৬ এপ্রিল স্যার থোমাস বার্লের আমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ মধ্যাহ্নভোজে অংশ গ্রহন করেন। ২৭ এপ্রিল স্ট্রাসবুর্গ পৌঁছেন, ২৯ তারিখে সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে 'দ্য মেসেজ অব দ্য ফরেস্ট' প্রবন্ধটি পাঠ করেন। পরের দিন ৩০ এপ্রিল জেনেভা যাত্রা করেন। ৭ মে তিনি যাচ্ছেন লুসান। ৮ তারিখে নোবেল বিজয়ী কবি কার্ল স্পিটেলারের সাথে সাক্ষাৎ। ১১ মে এলেন জুরিখ, ১২ তারিখ জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবন্ধ 'দ্য পোয়েটস রিলিজিয়ন' পাঠ করেন। ১৩ মে জুুরিখ থেকে এলেন ডার্মস্টাট, কাউন্ট কেয়সারলিঙ হোটেল ট্রব-এ এসে তার সাথে দেখা করলেন; ১৫ মে হামবুর্গ স্টেশনে পৌঁছে দেখলেন তাকে অভ্যর্থনা জানানোর কেউ হাজির নেই (বাবা ও ছেলের পৃথক সমন্বয়হীন টেলিগ্রাম এই অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী)। অবশ্য আমন্ত্রণকারী হেলেন ফ্রাঙ্ক-মেয়ারের আতিথ্যে সব ভুলে যান। তিনি কয়েকটি বক্তৃতা  দেন এবং জার্মান কবি গ্যেটের লেখায় মানুষ ও প্রকৃতি কেমন করে একাত্ম হয়েছে সে ব্যাখ্যা করেন।

২১ মে রওয়ানা হন ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন। ২২ মে ডেনিশ ছাত্রদের কবিতা পাঠ করে শোনান। ২৩ মে দার্শনিক হেরাল্ড হফডিং-এর সাথে দেখা করেন। সেদিন সন্ধ্যায় ট্রেনে কোপেনহেগেন ত্যাগ করে পরদিন ভোরে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম পৌঁছেন। স্টেশনে তাকে যারা অভ্যর্থনা জানান তাদের মধ্যে ছিলেন সুইডিশ একাডেমির সেক্রেটারি এরিখ অ্যাক্সেল কার্লফেল্ট (১৯৩১ সালে নোবেল সাহিত্য পুরষ্কার বিজয়ী)। তিনি গ্র্যান্ড রয়ার হোটেলে অবস্থান করেন। ২৫ মে একাডেমির মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ গ্রহন করেন। খ্যাতিমান সুইডিশ লেখক ও পরে নোবেল জয়ী নারী সেলমা লেগারলফও তার সাথে সাক্ষাৎ করেন। সন্ধ্যায় 'ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট' প্রবন্ধ পাঠ করেন।

২৬ মে বিকেল সাড়ে চারটায় রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরষ্কার পাবার সাড়ে ৭ বছর পর নোবেল ভাষণ দেন।

২৮ মে সন্ধ্যার ট্রেনে বার্লিন যাত্রা করেন, ২৯ মে সন্ধ্যায় পৌঁছেন। ২ জুন বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে 'দ্য মেসেজ অব দ্য ফরেস্ট' উপস্থাপন করেন। ৪ জুন প্রুশিয়ান একাডেমিতে তার কণ্ঠস্বর রেকর্ড করে উপস্থাপিত প্রবন্ধের সাথে একটি গানও রেকর্ড করা হয়। 

৫ জুন ট্রেনে মিউনিখ গেলেন। মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সাথে ডিনার করলেন। ৯ জুন গেলেন ফ্রাঙ্কফুর্ট। তাকে ডিউকের প্রাসাদে অর্ভ্যর্থনা জানানো হয়। ১০ জুন থেকে সপ্তাহব্যাপী 'ট্যাগোর উইক' উদযাপন শুরু হয়। প্রথম রাতে রবীন্দ্রনাথ নিজের কবিতা আবৃত্তি করে ইংরেজি অনুবাদ শোনান এবং কেয়সারলিঙ তা জার্মান-এ ভাষান্তর করে পড়ে শোনান। ১১ জুন 'ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট' প্রবন্ধের উপর ভিত্তি করে বক্তৃতা দেন। ট্যাগোর উইক-এ পুরো সপ্তাহই জার্মানরা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের উপর অধিকার নিয়ে কাউন্ট কেয়সারলিঙ ও ডক্টর ওন্টোর মধ্যে বিরোধও ঘটে।

২২ জুন রবীন্দ্রনাথ স্ট্রাসবুর্গ পৌঁছেন। ২৩ জুন স্ট্রাসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে 'জনগণমন অধিনায়ক' গাওয়া হয়। ২৪ জুন তিনি প্যারিস ফেরেন। ফ্রান্সের মাসেই বন্দর থেকে ২ জুলাই, ১৯২১ রবীন্দ্রনা্‌ রথীন্দ্রনাথ ও প্রতিমা 'মোরিয়া' জাহাজে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ১৬ জুলাই জাহাজে বোম্বাই পৌঁছে তিনি সেখান থেকে সোজা শান্তিনিকেতন চলে আসেন। সেপ্টেম্বর জোড়া সাঁকোতে 'বর্ষামঙ্গল উৎসব' করলেন। ২৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতীর উদ্বোধন করে ক'দিন বিশ্রামের জন্য শিলাইদহ চলে এলেন।   

এইচএমএস মোরিয়া

বছরের প্রথম দিন রবীন্দ্রনাথ ছিলেন নিউ ইয়র্ক আর শেষ দিন বাংলাদেশের শিলাইদহ।

১৯২১ সালে রবীন্দ্রনাথের একটি বাংলা বই প্রকাশিত হয়- ঋণশোধ। ইংরেজি বই বেরোয় সাতটি : গ্রেটার ইন্ডিয়া (প্রবন্ধ), দ্য রেক ( নৌকাডুবি উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ); পোয়েমস অব ট্যাগোর; গ্লিম্পসেস অব বেঙ্গল (ছিন্নপত্র থেকে নেয়া অংশ বিশেষের অনুবাদ); দ্য ফিউজিটিভ (লিপিকা ও কিছু নাটকীয় কথোপকথন অনুবাদ); থট রেলিকস (বিভিন্ন রচনা থেকে নেয়া)। 

Related Topics

টপ নিউজ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ প্রণোদনা, পাবেন জুলাই থেকে
  • সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার
  • যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে
  • নোবেল পুরস্কারসহ ৯ ধরনের পুরস্কারের আয়ে দিতে হবে না কর
  • ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় ৪০০ ইলেকট্রিক বাস যুক্ত করার ঘোষণা
  • এখন থেকে বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনা যাবে না

Related News

  • রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অপূর্ব আত্মজীবনী
  • কুষ্টিয়ায় বিশ্বকবির ম্যুরালে কালি, ভাঙচুর
  • প্রাণ ফিরে পেল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৩২ বছরের স্মৃতি বিজড়িত কুষ্টিয়ার কাছারি বাড়ি
  • হিটলারকে হত্যা পরিকল্পনার জন্য যখন রবীন্দ্রনাথের ‘নাতিকে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল
  • রবীন্দ্রনাথ হয়ে পর্দায় আসছেন অনুপম খের

Most Read

1
অর্থনীতি

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ প্রণোদনা, পাবেন জুলাই থেকে

2
অর্থনীতি

সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার

3
অর্থনীতি

যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে

4
বাংলাদেশ

নোবেল পুরস্কারসহ ৯ ধরনের পুরস্কারের আয়ে দিতে হবে না কর

5
বাংলাদেশ

ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় ৪০০ ইলেকট্রিক বাস যুক্ত করার ঘোষণা

6
অর্থনীতি

এখন থেকে বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনা যাবে না

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net