Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

ঝিনুক প্রাচীরে সুরক্ষা পাবে কুতুবদিয়া

২০১২ সালে যখন মোহম্মদ শাহ নেওয়াজ চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেসের সহযোগী গবেষক ছিলেন, তখন কুতুবদিয়া দ্বীপের ঝিনুক রিফ বা ঝিনুক প্রাচীরের ধারণাটির উদ্ভাবন করেন। তার যুক্তি ছিল সহজ – সমুদ্রের ঢেউ তীরে পৌঁছানোর আগেই ঝিনুক প্রাচীরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে শান্ত হয়ে যাবে। এভাবে এটি উপকূলীয় ভাঙনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করবে।
ঝিনুক প্রাচীরে সুরক্ষা পাবে কুতুবদিয়া

ফিচার

টিবিএস ডেস্ক
01 September, 2021, 10:25 pm
Last modified: 01 September, 2021, 10:23 pm

Related News

  • বাজেট ২০২৫-২৬: জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ
  • বিছারা ‘দখল করে নিচ্ছে’ ব্রাজিলের শহরগুলো, হুল ফোটানো বেড়েছে ২৫০% পর্যন্ত
  • প্রজাপতিবিহীন পৃথিবী: যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রজাতি
  • ২০২৪ সালে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাবে
  • ১৯৮০-এর দশকের পর থেকে বিশ্বজুড়ে তীব্র খরাপ্রবণ এলাকা বেড়েছে ৩ গুণ: গবেষণা

ঝিনুক প্রাচীরে সুরক্ষা পাবে কুতুবদিয়া

২০১২ সালে যখন মোহম্মদ শাহ নেওয়াজ চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেসের সহযোগী গবেষক ছিলেন, তখন কুতুবদিয়া দ্বীপের ঝিনুক রিফ বা ঝিনুক প্রাচীরের ধারণাটির উদ্ভাবন করেন। তার যুক্তি ছিল সহজ – সমুদ্রের ঢেউ তীরে পৌঁছানোর আগেই ঝিনুক প্রাচীরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে শান্ত হয়ে যাবে। এভাবে এটি উপকূলীয় ভাঙনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করবে।
টিবিএস ডেস্ক
01 September, 2021, 10:25 pm
Last modified: 01 September, 2021, 10:23 pm

কুতুবদিয়া দ্বীপের নির্মম বাস্তবতা মেনে নিতে মোহম্মদ শাহ নেওয়াজ চৌধুরী মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না। বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত এই দ্বীপটি দ্রুতই সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাচ্ছিল। মানুষের জীবন ধারণ হয়ে পড়ছিল এখানে সংকটাপন্ন। অনেকেই সংকটের মুখে দ্বীপ থেকে নিজেদের বসতি সরিয়ে নিয়েছেন; আবার অনেকেই পারেননি। যারা পারেননি, তারা এখানেই রয়ে গেলেন; কারণ প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে তারা জেনে এসেছেন এই দ্বীপই তাদের ঘর, তাদের স্থায়ী বসত ভিটা।

তিনি বলেন, "এই পরিবারগুলোকে আমি জেনেছি; তাদেরকে আমি বিশ্বাস এবং সম্মান করি। তাদের এই পরিস্থিতি বরাবরই আমাকে অশ্রুসিক্ত করে।"
 
শাহ নেওয়াজ চৌধুরী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে জলবায়ু অভিবাসী সংকট খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন। ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ১৩.৩ মিলিয়ন বাংলাদেশী বাস্তুচ্যুত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
 
তবুও, কুতুবদিয়া দ্বীপের ভাঙন ঢেউয়ে কিছুটা আশার আলো দেখেছেন জনাব চৌধুরী। এই দ্বীপে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ঝিনুক। এই ঝিনুক প্রাচীর স্থানীয় মানুষের আয়ের একটি সম্ভাব্য উৎস হতে পারে, এবং চৌধুরী মনে করেন, এটি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা থেকেও কুতুবদিয়া দ্বীপকে রক্ষা করতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে।
 
২০১২ সালে যখন জনাব চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেসের সহযোগী গবেষক ছিলেন, তখন কুতুবদিয়া দ্বীপের ঝিনুক রিফ বা ঝিনুক প্রাচীরের ধারণাটির উদ্ভাবন করেন। তার যুক্তি ছিল সহজ – সমুদ্রের ঢেউ তীরে পৌঁছানোর আগেই ঝিনুক প্রাচীরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে শান্ত হয়ে যাবে। তাই  এটি উপকূলীয় ভাঙনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করবে।

এ ধারণাটি আগে নেদারল্যান্ডসে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইসিয়ানাতে ভালোভাবেই কাজ করেছিল। তাই এখন, ওয়াজেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক চৌধুরী এবং তার সহকর্মীরা একসঙ্গে কাজ করে দেখবেন, এ ধারণার উপর ভিত্তি করে তারা কুতুবদিয়া দ্বীপে পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারেন কিনা।

তবে, বাংলাদেশ থেকে নেদারল্যান্ডস এবং লুইজিয়ানা হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থিত এবং এই জায়গাগুলোর মাঝে যথেষ্ট পরিবেশগত ভিন্নতা রয়েছে। 

কৃত্রিম বাধে বাসা বাঁধছে ঝিনুকসহ অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী। ছবি: মোহম্মদ শাহ নেওয়াজ চৌধুরী

চৌধুরী বলেন, "আমরা নদীর স্রোত, মৌসুমী ঝড়ের প্রভাবসহ আরও অনেক প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছি। তবে, ধারণাটির সফলতা নিয়ে তেমন সন্দেহ না থাকলেও, আমাদের অনেক পরিকল্পনা করে এগোতে হয়েছিল।"
 
পরিবেশগত প্রকৌশলের মাধ্যমে ঝিনুক প্রাচীর কুতুবদিয়া দ্বীপের উপকূল রক্ষা করতে পারে কিনা এই গবেষণার জন্য জনাব চৌধুরী, তার ২৭ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে ছয় বছর ধরে প্রায় ৬০০ দিন এই দ্বীপে কাটিয়েছেন।

নিয়মিত ঝড়, ঘূর্ণিঝড় এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের উপকূল জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবগুলোর ক্ষেত্রে বেশ সংবেদনশীল। 

চৌধুরী বলেন, "ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি সাতজন বাংলাদেশীর মধ্যে একজন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হবে। বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং উত্তপ্ত পানির কারণে সমুদ্রের ঢেউ আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।"

গতানুগতিক কংক্রিট বাঁধ বা ডাইক, উপকূলসীমা রক্ষার জন্য একটি সাধারণ ব্যবস্থা হিসেবেই পরিচিত। বাংলাদেশী এনজিও কোস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর মতে, দেশের কমপক্ষে ৬০ শতাংশ উপকূল, বাঁধ দ্বারা সুরক্ষিত। তবে অনেকেই মনে করেন, কংক্রিটের বাঁধের তুলনায়  প্রাকৃতিক ঝিনুক প্রাচীর প্রতিরক্ষা তৈরিতে আরও কার্যকর হতে পারে।

ঝিনুক বাঁধ

পরিবেশ প্রকৌশল বা ইকো-ইঞ্জিনিয়ারিং মানবজীবন এবং পরিবেশ সুরক্ষায় টেকসই বাস্তুতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত। কঠিন বহিঃআবরণ যুক্ত ঝিনুক, একসঙ্গে জলমগ্ন হয়ে পানির নিচে শক্তিশালী রিফ বা প্রাচীরের মতো তৈরি করে। এছাড়া, পানির পুষ্টি গুণাগুণ ধরে রাখার সঙ্গে সঙ্গে, মাছের আশ্রয়, প্রজননে সহায়তা এবং জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঝিনুক প্রাচীর অন্যান্য প্রাণীদের আবাসস্থল তৈরি করে, পানির গুণমান বাড়ায় এবং সমুদ্রিক শৈবাল বৃদ্ধিতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

জনাব চৌধুরী এবং তার সহযোগীরা ঝিনুক প্রাচীরের এই প্রাকৃতিক শক্তিকেই এমনভাবে ব্যবহারের লক্ষ্যে এগোতে শুরু করেন, যেন এই শক্তি তার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য বজায় রেখেই উপকূলকে সুরক্ষা দিতে পারে।

ওয়াজেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাস্টেইনেবল শেলফিশ কালচার-এর ইমেরিটাস অধ্যাপক আদ স্মাল বলেন, "এটি একটি ক্রমবর্ধমান প্রক্রিয়া - কঠিন কংক্রিটের নয়। এটি আমাদের লক্ষ্য অর্জনে প্রাকৃতিক শক্তি ব্যবহার করার একটি নতুন মাধ্যম।"

বিশ্বের অন্যান্য ঝিনুক বাঁধের প্রেক্ষাপট আর কুতুবদিয়ার প্রেক্ষাপট ছিল অনেকটাই ভিন্ন। কারণ অন্যান্য জায়গায় ক্ষয় হতে থাকা বাঁধগুলোকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। অন্যদিকে, কুতুবদিয়ায় নতুন করে ঝিনুক বাঁধ তৈরির গবেষণা চালানো হচ্ছিল।

কুতুবদিয়া জেটির পিলারের প্রাচীরে ঝিনুকের আস্তরণ। মোহম্মদ শাহ নেওয়াজ চৌধুরী

সৌভাগ্যবশত, প্রথমিক জরিপেই, কুতুবদিয়ায় ঝিনুক বাঁধ তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন- পানির উপযুক্ত তাপমাত্রা, পানির প্রবাহের বেগ, পিএইচ মাত্রা, লবণাক্ততা এবং দ্রবীভূত অক্সিজেন এসব কিছুর আদর্শ উপস্থিতি পেয়েছিলেন জনাব চৌধুরী। এছাড়া, পানিতে বিদ্যমান ফাইটোপ্লাঙ্কটনও ইঙ্গিত দিয়েছিল, এটি এমন একটি জায়গা যেখানে ঝিনুকের বিকাশ ঘটবে।

উপরুন্ত, জেটির কাছাকাছি একটি জায়গায় প্রাকৃতিকভাবেই ঝিনুকের প্রাচীর গড়ে উঠার বিষয়টিও প্রাথমিক গবেষণায় ধরা পড়ে।
সুতরাং, চৌধুরী এবং তার দল বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করলেন।  
স্থানীয়ভাবে যেসব উপকরণ কমমূল্যে পাওয়া যায় সেগুলোই তারা ব্যবহার করতে শুরু করেন। আর সেই উপকরণের মধ্যে ছিলো স্থানীয়ভাবে টয়লেট বানাতে ব্যবহৃত হওয়ার গোলাকার কংক্রিটের কমোড।
 
পরবর্তী অভিজ্ঞতা

কিন্তু কংক্রিটের উপরে ঝিনুক প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেলেও, তারা তাদের আবাসস্থলের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অত্যন্ত সংবেদনশীল।
 
চৌধুরী বলেন, "বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঝিনুকের অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন। তারা ২০ শতাংশের বেশি সময় বায়ু বা সূর্যের সংস্পর্শে আসতে পারে না।"

চৌধুরী বলেন, কৃত্রিম রিফের জন্য সঠিক জায়গা খুঁজে পেতে সাহায্য করেছিল উপকূলীয় আদিবাসী সম্প্রদায়। কোস্তুরা (ঝিনুকের স্থানীয় নাম) সম্পর্কে স্থানীয় দ্বীপবাসীদের জ্ঞান  তার এবং তার গবেষণা সহযোগীদের জন্য অমূল্য প্রমাণিত হয়েছিল।

চৌধুরী বলেন, "আমি সবসময় আদিবাসী সম্প্রদায়ের জ্ঞানকে সম্মান করি।"

সঠিক স্থান নির্বাচন করে কংক্রিটগুলো যথাযথভাবে বসাতে পারলেই, বাঁধটি উপরের দিকে উঠতে থাকবে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার সঙ্গে গতি বজায় রাখতে সক্ষম হবে। বাঁধটি প্রাকৃতিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হলেও, সেখানে আবার নতুন ঝিনুক জন্ম নেওয়ার মাধ্যমে সে ক্ষতি পূরণ হবে বলে, বিশ্বাস করেন জনাব চৌধুরী।

গবেষকরা আশা করেছিলেন, ঝিনুক স্থানীয় সম্প্রদায়ের  খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে এবং ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রেও ব্যাপাক সম্ভবনা তৈরি করবে। তবে, এটি স্থানীয় খাদ্যাভ্যাসের অন্তর্ভুক্ত নয়।

স্মল বলেন, "ঝিনুক হালাল (ইসলামে বৈধ) হলেও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এটি ব্যাপকভাবে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি।"

চৌধুরীও এ বক্তব্যের সঙ্গে সম্মত হয়ে বলেন, "আমাদের সব মানুষ ঝিনুকের প্রতি আগ্রহী নয়। এটি বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে খাওয়া হয় না। কেউ কেউ জানেও না ঝিনুক আসলে কী।"

কিন্তু বাংলাদেশের সরাসরি ঝিনুক খাওয়ার প্রচলন না থাকলেও, কুতুবদিয়ার মানুষেরা মাছ শিকারের মাধ্যমে জীবন নির্বাহ করে থাকেন। এবং তারা ভালোভাবেই জানেন এই দ্বীপে মাছের প্রাচুর্যতায় ঝিনুক বাঁধের ভূমিকা ব্যাপক।

চৌধুরী বলেন, "আমরা কংক্রিটের রিংগুলিতে কাঁকড়া পেতে শুরু করেছি। কাঁকড়ার রপ্তানি মূল্য অনেক। ১ কেজি কাঁকড়া ১০ ডলারে বিক্রি করা যায়।"

এছাড়া, গবেষক দল অন্যান্য প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণীও খুঁজে পেয়েছে বাঁধগুলোর উপরে, যা রপ্তানিযোগ্য এবং মাছের আনাগোনায় ভূমিকা রাখে।

ছবি: মোহম্মদ শাহ নেওয়াজ চৌধুরী

প্রভাব

যদিও মাছের প্রাচুর্য বেড়েছিল; কিন্তু, বাঁধের পিছনে জমে ওঠা পলি সমস্যা তৈরি করতে শুরু করে।

নেদারল্যান্ডসে যেখানে বছরে ০.৩-২ ইঞ্চি পলি জমতে দেখা যায়, সেখানে কুতুবদিয়ায় এক বছরে জমেছে ১২ ইঞ্চি পলি। হিমালয় থেকে উপকূলীয় এই ব -দ্বীপে প্রচুর পরিমাণে পলি আসে, যা সমস্যা সৃষ্টির কারণ।

চৌধুরী বলেন, "আমরা সম্পদের কথা বলি, কিন্তু আমরা আমাদের পানির নিচে জমতে থাকা পলিজনিত সমস্যাকে উপেক্ষা করে যাই। আমাদের ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা এবং গঙ্গা নদীর বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কোটি কোটি টন পলি প্রবাহিত হচ্ছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা যদি আমাদের উপকূলরেখায় বসতি স্থাপনের উপায় খুঁজে পাই, তাহলে সেটা হবে একটি নতুন দেশ তৈরি করার সমান।"

জনাব চৌধুরী দেখতে পেলেন বর্ষা মৌসুমেও এই বাঁধ অনেকটাই সুরক্ষা নিশ্চিত করছে। বাঁধটি ৫০ সেন্টিমিটার (২০ ইঞ্চি) -এর নীচে পানি প্রবাহ হয়, এমন সমুদ্রিক ঢেউগুলো প্রতিরোধ করতে পারে। এটি তীব্র আবহাওয়াতেও কাজ করে। এর প্রমাণ পাওয়া যায়, ২০১৬ সালে যখন গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু, ৭০-১১০ কিলোমিটার বেগে এই গবেষণার স্থানে আঘাত হানেছিল। এছাড়া, এ অঞ্চলের গাছপালাও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রেখেছিল।

চৌধুরী বলেন, "এই গাছপালা উপকূল পুনরুদ্ধারে সাহায্য করতে পারে, যেমনটি দেশের অন্যান্য অংশে দেখা যায়। সুন্দরবন এলাকার কাছাকাছি (দক্ষিণ-পশ্চিমে), আপনি ক্ষয় দেখতে পাচ্ছেন না (কারণ) ম্যানগ্রোভ বন একটি জীবন্ত দেওয়াল হিসাবে কাজ করে।"

বিশ্বব্যাংকের পরিবেশ অর্থনীতিবিদ সুস্মিতা দাশগুপ্তের গবেষণায়ও এটা পাওয়া যায়।

তিনি লিখেছেন, ম্যানগ্রোভ বনগুলো ঝড়ের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। এর গাছগুলোর শিকড়, কাণ্ড এবং পাতা জলের প্রবাহকে ২০-৯২ শতাংশ বাধাগ্রস্ত করে।

তবে গবেষকরা বলছেন, ঝিনুক বাঁধ শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্তই সুরক্ষা দিতে পারে। বাংলাদেশের মতো নিম্ন-উপকূলীয় দেশগুলোর ভূমি দ্রুতই ডুবে যেতে পারে এমন উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তারা। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ৫-২০ সেন্টিমিটার (২-৮ ইঞ্চি) হারে ভূমি ডুবে যাচ্ছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও কঠিন করে তুলছে। এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়া, মানুষের অযাচিত কর্মকাণ্ডও পরিবেশকে অপূরণীয় ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

কুতুবদিয়া দ্বীপে ঝিনুকের বাঁধ প্রাকৃতিকভবে এখনও টিকে আছে। তবে, এই প্রাচীর রক্ষণাবেক্ষণে মানুষের প্রয়োজনীয় করণীয় ও দায়িত্ব অনেকটাই অবহেলিত হয়েছে। বাঁধটি প্রাকৃতিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে; কিন্তু এর কিছু অংশ উচ্চ জোয়ারে নৌকা চলাচলের সময় ভেঙে গেছে।

চৌধুরী বলেন, "এটি এড়াতে আমরা যে সাইন পোলটি বা চিহ্ন স্থাপন করেছিলাম তা হারিয়ে গেছে। এটি পুনরায় স্থাপনের এবং আরও পর্যবেক্ষণ করার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় তহবিলও আর নেই।"

তারপরেও, স্মল আশাবাদী। তিনি বলেন, "আমরা জীবন্ত ঝিনুক বাঁধের দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন। এবং ঝিনুক যথেষ্ট শক্তিশালী।"

তাই তিনি আশা করেন এই ঝিনুক প্রাচীর আমাদের উপকূলীয়সীমা রক্ষা করবে। তিনি বলেন, "যদি যথাযথভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করা হয় এবং প্রকৃতির সঙ্গে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়,তবে এই কাজ সহজ হবে। কারণ প্রকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করা এখন আর সম্ভব নয়।"

  • সূত্র: বিবিসি

  
 

Related Topics

টপ নিউজ / বাংলাদেশ

শামুক-ঝিনুক / ঝিনুক প্রাচীর / জলবায়ু পরিবর্তন / কুতুবদিয়া / জলবায়ু অভিবাসী

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, ফোরদো ‘ধ্বংস’
  • ইরানে মার্কিন হামলায় যেভাবে বি-২ বোমারু বিমান অংশ নিল
  • মার্কিন হামলায় ‘একরকম নিশ্চিত’ হয়ে গেল এক দশকের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হবে: বিশ্লেষক
  • যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাংকার-বাস্টার’-এ 'ধ্বংস' ইরানের ফোরদো, কতটা ভয়ানক এই বোমা?
  • ফোরদো আগেই খালি করে ফেলা হয়েছে, আশপাশের বাসিন্দাদের কোনো ‘বিপদ নেই’: ইরান
  • সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনজনের নাম জানিয়েছেন খামেনি: নিউইয়র্ক টাইমস

Related News

  • বাজেট ২০২৫-২৬: জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ
  • বিছারা ‘দখল করে নিচ্ছে’ ব্রাজিলের শহরগুলো, হুল ফোটানো বেড়েছে ২৫০% পর্যন্ত
  • প্রজাপতিবিহীন পৃথিবী: যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রজাতি
  • ২০২৪ সালে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাবে
  • ১৯৮০-এর দশকের পর থেকে বিশ্বজুড়ে তীব্র খরাপ্রবণ এলাকা বেড়েছে ৩ গুণ: গবেষণা

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, ফোরদো ‘ধ্বংস’

2
আন্তর্জাতিক

ইরানে মার্কিন হামলায় যেভাবে বি-২ বোমারু বিমান অংশ নিল

3
আন্তর্জাতিক

মার্কিন হামলায় ‘একরকম নিশ্চিত’ হয়ে গেল এক দশকের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হবে: বিশ্লেষক

4
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাংকার-বাস্টার’-এ 'ধ্বংস' ইরানের ফোরদো, কতটা ভয়ানক এই বোমা?

5
আন্তর্জাতিক

ফোরদো আগেই খালি করে ফেলা হয়েছে, আশপাশের বাসিন্দাদের কোনো ‘বিপদ নেই’: ইরান

6
আন্তর্জাতিক

সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনজনের নাম জানিয়েছেন খামেনি: নিউইয়র্ক টাইমস

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab