Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
June 05, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, JUNE 05, 2025
কুম্ভ মেলা: সুপারস্প্রেডার যে ধর্মীয় উৎসব ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গের বীজ বুনে দেয়

ফিচার

টিবিএস ডেস্ক
31 May, 2021, 06:20 pm
Last modified: 31 May, 2021, 06:28 pm

Related News

  • নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে পদদলিত হয়ে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু
  • ভারতে কুম্ভ মেলায় পদপিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ৭ জনের মৃত্যু
  • 'স্যালাইন' দিয়ে ভারতের হাজারো মানুষকে করোনার ভুয়া টিকা
  • কোভিড তাণ্ডবে পুরো পরিবার উজাড় হচ্ছে ভারতের গ্রামীণ জনপদে
  • যেখানে নেই হাসপাতাল ও চিকিৎসক, ভারতের সেই গাঁওগঞ্জেই এবার কোভিডের তাণ্ডব 

কুম্ভ মেলা: সুপারস্প্রেডার যে ধর্মীয় উৎসব ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গের বীজ বুনে দেয়

গত ২১ মার্চ ভারতীয় দৈনিকগুলোতে পুরো এক পাতা জুড়ে দেওয়া বিজ্ঞাপনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং পূণ্যার্থীদের কুম্ভ মেলায় আসার আমন্ত্রণ জানান। আয়োজনটি ‘পরিচ্ছন্ন’ ও ‘নিরাপদ’ বলেও তিনি সকলকে আশ্বস্ত করেন
টিবিএস ডেস্ক
31 May, 2021, 06:20 pm
Last modified: 31 May, 2021, 06:28 pm
ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

গত ১২ এপ্রিল ভারতে যেদিন কোভিড-১৯ সংক্রমিতের দৈনিক সংখ্যা ১,৬৯,০০০ হাজার শনাক্ত হয়, যেদিন ভারত দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলকে টপকে বিশ্বের দ্বিতীয় প্রভাবিত দেশ হয়ে ওঠে, ঠিক সেদিনই গঙ্গার তীরে সমবেত হয়েছিলেন ৩০ লাখের বেশি মানুষ।

তারা ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের প্রাচীন শহর হরিদ্বারের কাছ দিয়ে প্রবাহিত পবিত্র গঙ্গা নদীতে ধর্মীয় আচার পালন করে ডুব দেওয়ার জন্যই জড়ো হন। লাখ লাখ মানুষ নদীতে নেমে নিষ্ঠা ও উৎসাহের এভাবে ধর্মীয় আচার পালনের কালে ভিড়ের মধ্যে ছিল না কোভিড স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার কোনো চেষ্টা।

আসলে ওই দিনটি ছিল কুম্ভ মেলার সবচেয়ে পবিত্র দিন, হিন্দু ধর্মের বর্ষপুঞ্জি অনুসারে কুম্ভ মেলা এক যুগ পর পর হওয়ায়, এবারের উৎসবে যোগ দিতে সাড়া ভারত থেকে ধর্মযাত্রী, সাধু, পুরোহিত ও পর্যটকেরা আসে। 

হরিদ্বার ঘাটে গঙ্গায় ডুব দিয়ে উঠে ছবি তুলছেন নাগা সাধুরা। ছবি: প্রকাশ সিং/ এএফপিঁ/ গেটি ইমেজেস

১২ এপ্রিলের কয়েক সপ্তাহ আগেই ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ বিস্তার লাভ করছিল। ওই সময় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞসহ দেশটির নাগরিক সমাজের বিশিষ্টজনেরা কুম্ভ মেলা বন্ধ রাখার আহবান জানান। কিন্তু, কেন্দ্র এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্য সরকার উভয় পক্ষই এসব শঙ্কাকে বারবার তাচ্ছিল্যভরে নাকচ করে দেন। উভয় স্থানেই হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় থাকায় পবিত্র উৎসবটি 'সুপারস্প্রেডার ইভেন্ট' বা সংক্রমণ ছড়ানোর বিশাল আয়োজনে পরিণত হবে, একথা তারা মানতেই চাননি।

এরমধ্যে, গত ২১ মার্চ ভারতীয় দৈনিকগুলোতে পুরো এক পাতা জুড়ে দেওয়া বিজ্ঞাপনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং পূণ্যার্থীদের কুম্ভ মেলায় আসার আমন্ত্রণ জানান। আয়োজনটি 'পরিচ্ছন্ন' ও 'নিরাপদ' বলেও তিনি সকলকে আশ্বস্ত করেন।

তথ্যচিত্র: দ্য গার্ডিয়ান

মার্চ থেকেই কুম্ভ মেলার উৎসব পুরোদমে চলতে থাকলেও, সেখানে কোভিড পরীক্ষা অপর্যাপ্ত হওয়ার অভিযোগ উঠছিল। ভারতে মহামারির মধ্যে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক হলেও, কুম্ভ মেলায় যোগদানকারীদের বেশিরভাগ তা পরেননি। উত্তরাখণ্ডে বিজেপি দলীয় মুখ্যমন্ত্রী পূণ্যার্থীদের বলেন, "ঈশ্বরে বিশ্বাস ভাইরাসের ভয়কে জয় করবে," লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে তাকেও মাস্ক ছাড়া কুম্ভ মেলায় ধর্মীয় আচারে অংশ নিতে দেখা গেছে। মেলার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা জানান, তারা যদি সামাজিক দূরত্ব আরোপ করার চেষ্টা করতেন, তাহলে ভিড়ের মধ্যে হুড়োহুড়ি বাঁধার ঝুঁকি ছিল।  

১২ এপ্রিল সন্ধ্যায় গঙ্গার ঘাটে প্রার্থণায় অংশ নেওয়া ভক্তকূল। ছবি: কারমা সোনাম/ এপি

গত ১৫ এপ্রিল নাগাদ কুম্ভ মেলায় যোগ দেওয়া দুই হাজার জনের মধ্যে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। তার দুই দিন পর নিজের আগের অবস্থান থেকে সরে এসে কুম্ভ মেলাকে শুধুমাত্র প্রতীকী রূপে পালনের আহবান জানান মোদি। কিন্তু, ততোদিনে অনেক দেরী হয়ে যায়। গত ২৮ এপ্রিল যখন ধর্মীয় উৎসবটি শেষ হয়, তারমধ্যেই এতে প্রায় ৯০ লাখের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন বলে জানা যায়। 

কুম্ভ মেলায় গিয়ে কতজন সংক্রমিত হয়েছেন বা কতজন মেলা ফেরতদের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন, তা হয়তো কোনোদিনই জানা যাবে না। সরকারের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ বন্ধ করে দেওয়াই যার প্রধান কারণ। কোনো প্রকার টেস্ট বা কোয়ারেন্টিন ছাড়াই বাড়ি ফিরে আসেন লাখ লাখ পূণ্যার্থী, সরকারের তরফ থেকেও তাদের ওপর আলাদা করে নজর রাখা বা চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়নি।

এই অবস্থায় দেরীতে হলেও কিছু রাজ্যের সরকার মেলা ফেরতদের শনাক্ত করে কোয়ারেন্টিনে রাখার চেষ্টা শুরু করে।

মধ্যপ্রদেশ সরকার আটটি জেলায় এমন ৭৮৯ জন ফেরত আসা পূণ্যার্থীকে খুঁজে পায়, এদের ১১৮ জন কোভিড টেস্টে পজিটিভ শনাক্ত হন। ভারতীয় গণমাধ্যম যখন কুম্ভ মেলা ফেরতদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানোর কথা জানাচ্ছিল, তখনই কর্মকর্তাদের মেলা ফেরতদের চিহ্নিত এবং টেস্ট করা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। মধ্য প্রদেশ ও রাজস্থানের চারটি পৃথক জেলার কর্মকর্তারা দ্য গার্ডিয়ানকে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের রাজনৈতিক কারণে এই নির্দেশ দেন।

সরকারি প্রতিক্রিয়ার ভয়ে নাম গোপন রাখার শর্তে রাজস্থানের এক শীর্ষ জেলা কর্মকর্তা বলেন, "কুম্ভ মেলা থেকে আসা লোকজনের ওপর জরিপ বাদ দিয়ে আমাদের সার্বিক কোভিড পরিস্থিতির ওপর গুরুত্ব দিতে বলা হয়।" 

উত্তরাখণ্ড, মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, বিহার, কাশ্মীর ও কর্ণাটকের আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের ভাষ্যেও একই রকম সিদ্ধান্তের কথা জানতে পারে প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিকটি। এর ফলে মেলা ফেরতদের সাথে সাথে স্বাস্থ্য সেবা ও কোভিড পরীক্ষার সুবিধা অনুপস্থিত ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বিনা-বাধায় ছড়িয়ে পড়ে কোভিড- ১৯। জন্ম দেয় বিপর্যয়ের।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ- এর ভাইরোলজি শাখার সাবেক পরিচালক টি. জ্যাকব জন বলেন, "প্রায় সব রাজ্যেই পূণ্যার্থীরা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট সঙ্গে করে আনেন এবং স্থানীয় প্রাদুর্ভাবের বীজ বুনে দেন।" 

সংক্রমণের ব্যাপক আকার ধারণ করার সময়েই যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিভাগের ডিন আশিস ঝা বলেন, "এবারের কুম্ভ মেলা খুব সম্ভবত মহামারির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সংক্রমণ ছড়ানোর আয়োজন (সুপারেস্প্রেডার ইভেন্ট) ছিল।"

১৩ এপ্রিল, ২০২১; কুম্ভ মেলা চলাকালীন সান্ধ্যকালীন প্রার্থনায় যোগ দিতে গঙ্গার তীরে আসছেন ভক্তরা। ছবি: আনুস্রী ফদনভিস/ রয়টার্স

এতকিছুর পরও কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কুম্ভ মেলা চলতে দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকে। বিজেপির ভাইস প্রেসিডেন্ট বাইজয়ন্ত পাণ্ডে বলেন, সম্পূর্ণ 'অজ্ঞানতা' ও 'হিন্দু-বিদ্বেষী' মনোভাব থেকেই একে সুপারেস্প্রেডার ইভেন্ট হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।  

কিন্তু, তার মন্তব্য প্রকৃত অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না একেবারেই, কারণ কুম্ভ মেলা চলাকালীন সপ্তাহগুলোতে আয়োজক রাজ্য উত্তরাখণ্ডে কোভিড আক্রান্তদের সংখ্যা সরকারি হিসেবেই ১,৮০০ শতাংশ বাড়ে। অনেক সংক্রমণের সঙ্গে কুম্ভ মেলার সরাসরি যোগসূত্রও পাওয়া যায়।

তাছাড়া, মেলা ফেরতদের অনেকেরই গল্প ভয়ঙ্কর পরিণামের চিত্র প্রকাশ করছে। তেমনই দুজনের ঘটনা গার্ডিয়ান সূত্রে তুলে ধরা হলো:

কাশ্মীরের রাজনীতিক:

শেষনিঃশ্বাস ত্যাগের সময়েও তিনি কুম্ভ মেলায় ফিয়ে সংক্রমিত হয়েছেন একথা মানতে অস্বীকার করেন কাশ্মীরের সাবেক মন্ত্রী এবং ৭৯ বছরের বিজেপি নেতা ঠাকুর পুরাণ সিং।

গত ৯ এপ্রিল তিনি সপরিবারে কুম্ভ মেলায় যোগ দেন। সঙ্গে ছিল তার দুই সন্তান, তাদের স্ত্রীসহ তিন নাতি-নাতনী। ভিআইপি এই রাজনীতিকের পরিবার দুটি এসইউভি করে পুলিশি প্রহড়ায় ৩৭০ মাইল দূরে হরিদ্বারে আসেন। ওইদিন বিকেলে তারা মেলার মূল স্থানে পৌঁছান। এর পরের পাঁচদিন পরিবারটি একাধিকবার গঙ্গায় স্নান করে। 

কাশ্মীরে ফিরে আসার একদিন পর ১৬ এপ্রিল পরিবারের কর্তা পুরাণ সিংয়ের মধ্যে রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। তিনি প্রথমে লক্ষণগুলো নাকচ করে দিলেও, ২১ এপ্রিল নাগাদ তার অবস্থার অবনতি হয়। তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান ছেলে দীনেশ সিং ঠাকুর।

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য পরীক্ষায় দেখেন তার ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত। পুরাণ কোভিড আক্রান্ত বলেই তারা মত দেন। কিন্তু, তার ছেলে এই রায় মানতে চাননি, দীনেশ ধরে নেন চিকিৎসকরা সম্ভবত ভুল করছেন। তাই বাবাকে আরও ভালো একটি হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

দীনেশ বলেন, "আমি চিকিৎসকদের রায় এবং কোভিড আক্রান্ত হওয়ার তত্ত্বটি বিশ্বাস করতে পারিনি। তাই বাবাকে নিয়ে গাড়ি চালানোর সময় নিজেও কোনো মাস্ক পড়িনি।"

মাঝখানে হলুদ ধুতি পরিহিত ঠাকুর পুরান সিংকে তার পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে গঙ্গার তীরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

কিন্তু, রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কথা বিশ্বাস না করলে, কোনো লাভ আদতেই হয় না। পুরাণ সিং আরেক হাসপাতালে যাওয়ার পথে গাড়িতেই মারা যান। তার আটদিন পর উপসর্গসহ মারা যান পুরাণের ভাই বলবন্ত সিং। পুরাণ তার পরিবারসহ কুম্ভ মেলা থেকে ফিরে আসার পর বলবন্ত সকলের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।

জেলার শীর্ষ জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবাল মালিক বলেন, "পুরাণ সিংয়ের মৃত্যুর পরও পরিবারটির সদস্যরা তাদের কুম্ভ মেলায় যাওয়ার ঘটনা গোপন রাখার চেষ্টা করেছেন।" আরেকজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ওই পরিবারের আরও চারজন কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন।

সিং পরিবারের সদস্যদের সংস্পর্শে আসা আরও দুই ডজন মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মেলা থেকে ফিরে পরিবারটি চারটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয় বলে জানান সংক্রমণ পরীক্ষা ও উৎস শনাক্তকরণে যুক্ত এক কর্মকর্তা।

নাম না প্রকাশের শর্তে তিনি বলেন, "কিছু সংক্রমণ আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি, কিন্তু তারা যতো মানুষের সংক্রমণের কারণ হয়েছে খুব সম্ভবত তাদের সকলকে আমরা শনাক্ত করতে পারিনি।"

কুম্ভ মেলা চলাকালীন গঙ্গায় স্নানরত পুরাণ সিংয়ের পরিবারের সদস্যরা। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

পুরাণ সিংয়ের শব কোভিড-১৯ বিধি মেনেই দাহ করা হয়। কিন্তু, মৃতের মতোই পরিবারের সদস্যরা বিশ্বাস করেন তিনি ভাইরাসের কারণে মারা যাননি। দীনেশ বলেন, "সেখানে আমরা ১১ জন গিয়েছিলাম, বাকিরা কেন মারা যায়নি। ভাইরাসের কারণে মৃত্যু হয় না, ঈশ্বর নির্ধারিত সময়েই মানুষকে চলে যেতে হয়। মেলায় যোগ দেওয়া নিয়ে তাই আমার কোনো আক্ষেপ নেই।"

ব্যারিকেডের ওপাড়ে ভিড় করেছে ভক্তরা। তারা শাহী স্নান সেরে নগ্ন নাগা সাধুদের উঠে আসার অপেক্ষা করছেন। ছবি: কারমা সোনাম/ এপি

মধ্য প্রদেশের কৃষক:

কুম্ভ মেলা থেকে গোপাল সিংকে ফিরতে দেখে তার পরিবার ও পাড়া-প্রতিবেশীরা খুবই উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। মধ্য প্রদেশের বিদিশা জেলার মাধী চৌবিসা গ্রামের সকলেই তাকে স্বাগত জানাতে আসেন এবং পা ছুঁয়ে প্রথা মোতাবিক আশীর্বাদও নেন। কিন্তু, ৫৬ বছরের এই কৃষক কিন্তু মনে মনে ভীষণ ভয় পাচ্ছিলেন।

আসলে গোপালসহ আশেপাশের গ্রামের প্রায় একশ মানুষ দুটি বাস ভাড়া নিয়ে চাপাচাপি করে বসে কুম্ভ মেলার তীর্থস্থলে পৌঁছান। সেখানে গিয়ে তারা অনেক মানুষকে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখেন। আবার বাড়ি ফেরার পথেও বাস যাত্রীদের অনেকেই জ্বর ও ডাইরিয়ায় ভুগেছেন। সমস্ত যাত্রা পথের কোথাও তাদের বাস দুটিকে দাড় করিয়ে যাত্রীদের কোভিড টেস্টের ব্যবস্থা করেনি কেউ। এমনকি তাপমাত্রা মাপার মতো সাধারণ সতর্কতাও নেয়নি কর্তৃপক্ষ। 

"এর আগেও আমি দুই বার কুম্ভ মেলায় গেছি, কিন্তু কোনোবার এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়িনি। এবার অনেক জনকে চোখের সামনে অসুস্থ হতে দেখেছি," গোপাল সিং বলেন।

স্থানীয় চিকিৎসক গোপালের ভয়কে নাকচ করে দিলেও তিনি কোভিড টেস্ট করান। তারপর গোপালের শঙ্কাকে বাস্তবে পরিণত করে চারদিন পর তার টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ আসে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফল আসার আগেই তার সংস্পর্শে এসেছে গ্রামের শত শত মানুষ।

গোপাল সিংয়ের মাধী চৌবিসা গ্রাম। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

গোপালের গ্রামটিতে মেলা ফেরত আরও তিনজন পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। আশেপাশের গ্রামেও তারপর অনেকে শনাক্ত হন। ৩২ বছরের গ্রামপ্রধান রঘু রাজ ডাঙ্গি বলেন, "কুম্ভ মেলা থেকে লোকজন ফিরে আসার পর মাত্র কয়েকদিনে পজিটিভ শনাক্তের সংখ্যা ৩০ জনে উন্নীত হয়। তবে, কোভিড রোগীদের সংস্পর্শে আসা এবং উপসর্গ দেখা দেওয়া অনেককেই টেস্ট করা সম্ভব হয়নি।"

আরও কিছুদিন পর গোপালের প্রতিবেশী ও দুই সন্তানের জননী মমতা বাই তীব্র জ্বরে আক্রান্ত হন। প্রথমে তিনি স্থানীয় চিকিৎসকের অধীনে থাকলেও, পর রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা মারাত্মক রকম হ্রাস পেলে তাকে শহরে নিয়ে একটি হাসপাতালের আইসিইউ'তে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি মমতা বাইয়ের। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থাতেই তিনি মারা যান।

গোপাল জানান, তিনি এখন গভীর অনুশোচনা অনুভব করছেন। "আমাদের গোয়ার্তুমি ও অন্ধবিশ্বাস আজ এই দুর্যোগকে গ্রামে ডেকে এনেছে। আমি নিজেও খুব দুর্বল বোধ করি, কিন্তু তার চেয়েও বেশি খারাপ লাগে অনেকেই আমার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন একথা উপলদ্ধি করে।"

১৪ এপ্রিল, ২০২১; কুম্ভ মেলা চলাকালীন হিন্দু ধর্মে পবিত্র সাধক হিসেবে পরিচিত নাগা সাধুরা শাহী স্নানের সময় একসঙ্গে গঙ্গায় নেমে ডুব দেওয়ার জন্য জড়ো হয়েছেন। ছবি: আনুস্রী ফদনভিস/ রয়টার্স

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Related Topics

টপ নিউজ

কুম্ভ মেলা / ভারতে কোভিড-১৯ বিপর্যয়

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি; আহতদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্সরাও পেলেন স্বীকৃতি
  • ডিজিটাল ওয়ালেটের লাইসেন্স পেল গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠান 'সমাধান'
  • আঞ্চলিক পরমাণু জোট নিজ দেশে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করবে ইরান
  • টাকার নতুন নোটের খোলাবাজারে দ্বিগুণ মূল্য, গ্রাহক হয়রানি চরমে
  • কোম্পানির তহবিলের ওপর করের চাপ কমাল সরকার
  • দোকানে হানা দিলো হাতি, খাবার খেয়ে ‘টাকা না দিয়েই’ পালালো!

Related News

  • নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে পদদলিত হয়ে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু
  • ভারতে কুম্ভ মেলায় পদপিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ৭ জনের মৃত্যু
  • 'স্যালাইন' দিয়ে ভারতের হাজারো মানুষকে করোনার ভুয়া টিকা
  • কোভিড তাণ্ডবে পুরো পরিবার উজাড় হচ্ছে ভারতের গ্রামীণ জনপদে
  • যেখানে নেই হাসপাতাল ও চিকিৎসক, ভারতের সেই গাঁওগঞ্জেই এবার কোভিডের তাণ্ডব 

Most Read

1
বাংলাদেশ

বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি; আহতদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্সরাও পেলেন স্বীকৃতি

2
বাংলাদেশ

ডিজিটাল ওয়ালেটের লাইসেন্স পেল গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠান 'সমাধান'

3
আন্তর্জাতিক

আঞ্চলিক পরমাণু জোট নিজ দেশে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করবে ইরান

4
অর্থনীতি

টাকার নতুন নোটের খোলাবাজারে দ্বিগুণ মূল্য, গ্রাহক হয়রানি চরমে

5
অর্থনীতি

কোম্পানির তহবিলের ওপর করের চাপ কমাল সরকার

6
অফবিট

দোকানে হানা দিলো হাতি, খাবার খেয়ে ‘টাকা না দিয়েই’ পালালো!

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net