ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে বোলারদের কৃতিত্ব দিলেন সাকিব

সাকিব আল হাসানের দিন কি শেষ? কিংবা, কবে অবসর নিচ্ছেন তিনি? চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে বিবর্ণ সাকিবকে দেখার পর এমনই প্রশ্ন উঠেছিল। এই দুই ম্যাচের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হচ্ছিল তার গত এক-দেড় বছরের টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্সও। কিন্তু একদিন পরই ভিন্ন দৃশ্যপট। নায়কের ভূমিকায় সেই সাকিবই। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বল হাতে কিছু করতে না পারলেও দুর্বার এক ইনিংস খেলে অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার হয়েছেন ম্যাচসেরা।
চাপে পড়া দলকে পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে যান সাকিব, ব্যাটিং করেন ইনিংসের শেষ পর্যন্ত। মাঝে ৩৮ বলে পূর্ণ করেন হাফ সেঞ্চুরি। যা তার ক্যারিয়ারের ১৩তম ও বিশ্বকাপের চতুর্থ। টি-টোয়েন্টিতে এক বছর আট মাস পরে সাকিবের করা এই হাফ সেঞ্চুরিতেই ৫ উইকেটে ১৫৯ রানের সংগ্রহ মেলে বাংলাদেশের। ৪৬ বলে ৯টি চারে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বাংলাদেশের জয়ে তার ইনিংসটা অন্যতম সহায়ক, এ কারণেই মেল সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। কিন্তু ম্যাচের পরই তিনি প্রায় সব কৃতিত্ব দিলেন বোলারদের।
১৫৯ রান তুলে ২৫ রানে জিতলেও সাকিব মনে করেন জেতার মতো সংগ্রহ ছিল না এটা। টপ অর্ডারের চার জনের মধ্যে কাউকে ইনিংসজুড়ে ব্যাটিং করতে হতো জানিয়ে তিনি বলেন, 'টপ অর্ডারের চারজনের মধ্যে কারও ইনিংসজুড়ে ব্যাটিং করাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অবদান রাখতে পেরে ভালো লাগছে। শুরুর দিকে উইকেট কঠিন ছিল, কিন্তু আমরা খেই হারাইনি।'
'আমাদের সংগ্রহ লড়ার মতো ছিল, জেতার মতো ছিল না। তবে বোলাররা নিখুঁতভাবে কাজটা করেছে। রিশাদ এবং ফিজ (মুস্তাফিজ) নেদারল্যান্ডসের কাছ থেকে ম্যাচটি কেড়ে নিয়েছে। গত ৪-৫ বছরে এই মাঠে খুবই কম খেলা হয়েছে। আমরা জানতাম না এখানে কোনটা ভালো সংগ্রহ হবে। তাই ১৪-১৫ ওভার পর্যন্ত আমাদের উইকেট বাঁচিয়ে রাখতে হতো, তারপর ওখান থেকে এগিয়ে নেওয়া যাবে।'
বাংলাদেশের গড়া সংগ্রহ বিশ্বকাপের ম্যাচে সহজ লক্ষ্য নয় জানিয়ে সাকিব বলেন, '১৬০ রান বিশ্বকাপে সব সময়ই কঠিন লক্ষ্য। নেদারর্যান্ডস ভালো অবস্থায় ছিল, ম্যাচ বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু বোলারদের কৃতিত্ব দিতে হয়, তারা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।' মাথা সোজা রাখতে অনুশীলনে ঘাড় বন্ধনী পরে ব্যাটিং করেন সাকিব, যা তাকে সাহায্য করেছে বলে জানান তিনি। তার ভাষায়, 'ব্যাটিংয়ের জন্য ওটা পরেছিলাম এবং এটা সাহায্য করেছে।'
বোলারদের কৃতিত্ব দেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সবাই দারুণ লড়েছে। আমরা জানতাম না উইকেট কেমন আচরণ করবে এবং কোনটা ভালো সংগ্রহ। তবে ব্যাটসম্যান-বোলাররা সবাই ভালো করেছে। উইকেট ভালো ছিল, শুরুতে অসমান বাউন্স থাকলেও ব্যাটিং করার জন্য ভালো। মুস্তাফিজ, আমরা জানি সে কতোটা ভালো। সে তার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দেখিয়েছে। সব বোলারের মতো রিশাদও দারুণ ছিল।'