Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
June 05, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, JUNE 05, 2025
শাহ মাৎ থেকে চেকমেট আর ববি ফিশার

ইজেল

আন্দালিব রাশদী
15 October, 2022, 09:00 pm
Last modified: 15 October, 2022, 09:02 pm

Related News

  • চেসবক্সিং: যে খেলায় শুধু বক্সিং নয়, দাবাতেও হতে হবে তুখোড়
  • ঋত্বিক ঘটকের কন্যা: এক অসমাপ্ত আলাপ
  • শোক হতে শ্লোক
  • আমার স্নিকার্স
  • জুয়ার আশঙ্কা থেকে দাবা খেলা নিষিদ্ধ করল তালেবান

শাহ মাৎ থেকে চেকমেট আর ববি ফিশার

দেড় হাজার বছর আগে ভারতবর্ষ গুপ্ত সম্রাটদের শাসনামলে দাবার উদ্ভব। শুরুতে অষ্টপদ নামের একটি বোর্ডে খেলা হতো। ঊনবিংশ শতকে প্রতিযোগিতামূলক দাবা টুর্নামেন্ট শুরু হয়, প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয় ১৮৮৬ সালে। দাবা খেলোয়াড়রা বিভিন্ন সময় সামরিক কোড ডিসাইফার করতে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় দাবাড়ু হ্যারি গোলোমবেক, এইচ ও ডি আলেকজান্ডার এবং স্টুয়ার্ট মিলবার ব্যারি নাৎসি কোড ভেঙে দিতেন।
আন্দালিব রাশদী
15 October, 2022, 09:00 pm
Last modified: 15 October, 2022, 09:02 pm
স্নায়ুযুদ্ধ, ববি ফিশার ও বরিস স্পাসকি

রাজা বাঁচাবার যখন আর কোনো উপায়ই নেই, তখনই 'দ্য কিং ইজ ডেড'—রাজা মৃত। তাকে আর প্রাণে  মেরে অসৌজন্য দেখানোর দরকার নেই। ফার্সি ভাষায় এটাই হচ্ছে শাহ মাৎ। কাল ক্রমে শাহ মাৎই হয়ে উঠেছে চেকমেট।

প্রাচীন ভারতীয় দাবায় রাজাকে কুপোকাত করার সুযোগ ছিল। কিন্তু ৭০০ থেকে ৮০০ খ্রিষ্টাব্দে পারস্যের অভিজাতরা এমনকি পরাজিত রাজাকেও মর্যাদায় বসাতে চান। তারা মনে করেন রাজাকে অবরোধ করে অপদস্ত করা ঠিক হবে না, তার চেয়ে তাকে সতর্ক সংকেত দেওয়াই উত্তম। আর তাই হচ্ছে শাহ মাৎ। মহারাজ আপনি যাবেন কোথায়? শাহ মাৎ পরিস্থিতিতে প্রতিপক্ষ পরাজয় মেনে নেয়। এটাই দাবার সৌন্দর্য। ফার্সি শব্দ যুগল শাহ মাৎ থেকে চেকমেট উদ্ভূত বলে ভাষা বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন। 

আর একটি জটিল দাবাশব্দ তঁমুধিহম মানে ডানে-বাঁয়ে, সামনে-পেছনে কোনাকুণি যে দিকেই যাবে মৃত্যু অনিবার্য। এর বাংলাই কি  'মাইনকার চিপা' নাকি?

দেড় হাজার বছর আগে ভারতবর্ষ গুপ্ত সম্রাটদের শাসনামলে দাবার উদ্ভব। শুরুতে অষ্টপদ নামের একটি বোর্ডে খেলা হতো।

ঊনবিংশ শতকে প্রতিযোগিতামূলক দাবা টুর্নামেন্ট শুরু হয়, প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয় ১৮৮৬ সালে। বিংশ শতকে দাবার আধুনিকায়ন হয়, একবিংশ শতকে অনলাইন দাবা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। দাবা খেলোয়াড়রা বিভিন্ন সময় সামরিক কোড ডিসাইফার করতে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় দাবাড়ু হ্যারি গোলোমবেক, এইচ ও ডি আলেকজান্ডার এবং স্টুয়ার্ট মিলবার ব্যারি নাৎসি কোড ভেঙে দিতেন।

আধুনিক দাবা বোর্ডের উৎস ইউরোপে, ১০৯০ সালের একটি বোর্ড। ১১২৫ সালে একজন ধর্মযাজক ভাঁজ করা যায় এমন দাবা বোর্ড তৈরি করেন।

জায়ান্ট চেজবোর্ড

বিখ্যাত দাবা গবেষক ও ঐতিহাসিক এইচ জে আর মারে ১৯১৩ সালে ৯০০ পৃষ্ঠার 'আ হিস্ট্রি অব চেজ' প্রকাশ করেন। মুসলমান শাসক, চীনা অভিজাত এবং রুশ জাররা দাবা খেলতেন এমনকি জারদের বিরুদ্ধাচারী তাদের বলশেভিকরাও দাবাভক্ত ছিলেন। লেনিন ও স্ট্যালিনের আমলে দাবার প্রসারে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গড়া হয় এবং সহায়তা দেওয়া হয়। সে দেশেরই গ্যারি কাসপারভ সবচেয়ে কম বয়সে (১২ বছর ২১০ দিন) বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হন।

ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থটি বাইবেল, দ্বিতীয়টি দাবা খেলার বই। মানুষের মেমোরি ফাংশন বাড়াতে এবং আলঝেইমার্স রোগের প্রকোপ কমাতে দাবা খেলার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। পৃথিবীতে আনুমানিক ৬০ কোটি মানুষ দাবা খেলতে জানে।

দাবার টাইটেলগুলো যথাক্রমে ওপরের দিকে: ১. ক্যান্ডিডেট মাস্টার; ২. ফিদে মাস্টার; ৩. ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার, ৪. গ্র্যান্ডমাস্টার। নারীর বেলায় ওমেন ক্যান্ডিডেট মাস্টার ২. ওমেন ফিদে মাস্টার, ৩. ওমেন ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার ৪. ওমেন গ্রান্ড মাস্টার।

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দশজন দাবা খেলোয়াড় হচ্ছেন: আলেকজান্ডার আলেখাইন, মিখাইল তাল, এমানুয়েল লাস্কির, ভ্লাদিমির ক্র্যামনিক, মিখাইল বটভিনিক, আনাতলি কারপভ, হোসে রাউল ক্যাপাব্ল্যাঙ্কা, ববি ফিশার, মাগনুস কার্লসেন এবং গ্যারি কাসপারভ।

আমেরিকান হবার কারণেই হয়তো ববি ফিশারকে নিয়ে লেখালেখি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। 

ববি ফিশারের জন্ম ৯ মার্চ ১৯৪৩ আমেরিকার শিকাগোর ইলিনয় শহরে। তাকে প্রদত্ত খ্রিষ্টীয় নাম রবার্ট জেমস ফিশার। তার বাবা হ্যান্স গেরহার্ড ফিশার একজন জার্মান বায়োফিজিসিস্ট এবং তার মা রেজিনা ওয়েন্ডার ফিশার শুরুতে একজন শিক্ষক, পরে রেজিস্টার্ড নার্স এবং সবশেষে ডাক্তার। তার মা পোল্যান্ড ও রাশিয়ার ইহুদি বংশোদ্ভূত। বাবা ও মায়ের দেখা মস্কোতে। জার্মানি-মস্কো অবরোধের কারণে মা পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চলে আসেন; বাবা ও মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। যখন তার জন্ম, রেজিনা ছিল বাস্তবিকই গৃহহীন। ববি ফিশার ও তার মা এফবিআই কর্মকর্তা এডগার হুভারের তালিকায় সন্দেহভাজন রুশ এজেন্ট। 

২০০২ সালে জানা যায় গেরহার্ড ফিশার তার প্রকৃত পিতা না-ও হতে পারেন। হাঙ্গেরির ইহুদি পদার্থবিজ্ঞানী পল নিমেনি সম্ভবত তার প্রকৃত পিতা। পল নিমেনি দীর্ঘদিন ববির লালন-পালনের খরচ এবং স্কুলের ব্যয়ভার মিটিয়েছেন। এসব তথ্য এফবিআইএর আবিষ্কার। তবে তার মা রেজিনার যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সাথে যোগাযোগ ছিল, তা প্রমাণিত। চিকিৎসাবিজ্ঞান পড়তে তাকে যিনি মস্কো যেতে অনুপ্রাণিত করেন, তিনি পরবর্তীকালের চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হারমান ইয়োসেফ মুলার।

অষ্টম থেকে দশম শতকের শাহ (কিং)

১৯৪৯-এর মার্চে মায়ের কিনে দেওয়া ১ ডলার দামের প্লাষ্টিক দাবা বোর্ডে বরিস ফিশারের দাবা খেলার সূচনা। তখন তার বয়স ছয় বছর। দাবার ঘুঁটির বাক্সের ভেতরে খেলার যে নিয়ম লেখা তাই অনুসরণ করে বোনের সাথে খেলতে শুরু করেন। দাবা তাকে পেয়ে বসে। পুরোনো একটি দাবার বই বের করেন এবং তা পড়ে চালের বিশ্লেষণ করতে শেখেন। ব্রুকলিন চেজ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কারমাইন নিগ্রো নিজে একজন দাবা বিশেষজ্ঞ এবং প্রশিক্ষক, তিনি  ববি ফিশারের খেলা দেখে মুগ্ধ হন। এটাই ববির জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট। 

১৯৫৫ সালে ১২ বছর বয়সী বালক ববি ফিশার মানহাটান চেজক্লাবে যোগ দেন। রোববার এলেই ওয়াশিংটন স্কোয়ার পার্কে দাবা খেলতেন। ফিশার তার প্রথম বই 'ববি ফিশার'স গেইম অব চেজ' কারমাইন নিগ্রোকে উৎসর্গ করেন। উৎসর্গপত্রে লিখেছেন, তিনি হয়তো শ্রেষ্ঠ দাবা খেলোয়াড় নন, কিন্তু অত্যন্ত ভালো একজন শিক্ষক। 

বিল লোম্বার্ডি ১৯৫৪ সাল থেকে তাকে প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। দাবাতে সম্পূর্ণ নিমগ্নতার পরামর্শটি তারই। প্রতিপক্ষের ড্র করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে তিনিই উৎসাহিত করেছেন। ১৯৫৬ সালে হথর্ন চেজ ক্লাবে যখন যোগ দেন, কলিন্স হলেন তার মেন্টর। তিনি ববি ফিশারের সাথে অন্তত হাজার গেম খেলেছেন। পরবর্তীকালের গ্যান্ডমাস্টার আর্নন্ড ডেনকারও হলেন তার মেন্টর। ১২ বছর বয়সে ববি হলেন ন্যাশনাল মাস্টার আর ১৩-তে আমেরিকার ইতিহাসে কনিষ্ঠতম আমেরিকান জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন। 

১৯৫৬ সালে, ১৩ বছর বয়সে আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন (জুনিয়র নয় সিনিয়র)। ডোনাল্ড বার্নকে যেভাবে পরাজিত করেন, খবরের কাগজে সে খেলার শিরোনাম হয়েছিল 'দ্য গেইম অব দ্য সেঞ্চুরি'। ডোনাল্ডের অপ্রতিরোধ্য আক্রমণ ঠেকাতে তিনি যেভাবে রানিকে বলি দিয়েছেন পরবর্তী পঞ্চাশ বছর তাই ছিল ববির প্রতিরক্ষা কৌশলের অন্যতম আলোচনা। ১৯৫৭তে ক্লিভল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ইউএস ওপেন চেজ কম্পিটিশনে তিনি হলেন ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ চ্যাম্পিয়ন। পরের বছর ১৪ বছর ১৪ মাস বয়সে ইউএস চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে হলেন ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার। 

ছেলে বিশ্ববিখ্যাত হোক—মা রেজিনা এই স্বপ্ন নিয়েই কাজ করেছেন। তিনি জানেন ছেলেকে দাবার রাজধানী মস্কোতে যেতে হবে। সুতরাং তিনি সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভকে চিঠি লিখলেন, ববিকে  সোভিয়েত ইউনিয়নে আমন্ত্রণ জানানো হোক। আমন্ত্রণ এল বটে, কিন্তু দেরিতে। তারপর টিভি শো 'আই হ্যাভ আ সিক্রেট' ববি ও তার বোনের জন্য মস্কো রাউন্ড ট্রিপের দুটি টিকেট স্পনসর করল। 

১৪ বছর বয়সী ববি ফিশার

মস্কো সেন্ট্রাল চেজ ক্লাবের যত বিখ্যাত খেলোয়াড় ছিলেন, ববি তাদের সাথে খেললেন এবং প্রত্যেকেই পরাজিত হলেন। গ্র্যান্ডমাস্টার ভ্লাদিমির আলাতোৎসেভ পরপর তিন গেম হেরে বুঝতে পারলেন তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম খেলোয়াড়ের সাথে দাবা খেলছেন। তিনি তখনকার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মিখাইল বটভিনিকের সাথে খেলতে চাইলে তিনি প্রত্যাখ্যাত হলেন। স্বভাববশতঃ খেপে গিয়ে ফিশার বললেন, রাশান পিগস। অমনি তার হোস্ট রাশানরা চটে গেল। তার কথার মধ্যে তারা আমেরিকানদের ভূরাজনৈতিক তাচ্ছিল্যের ঘ্রাণ পেলেন। নিন্দার ঝড়ে তার পক্ষে আর মস্কোতে থাকা সম্ভব হচ্ছিল না। 

এ সময় যুগোস্লাভিয়া থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে ইন্টারজোনাল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে বেলগ্রেড চলে গেলেন। তখনো তার বালকবয়স কাটেনি, কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক খেলোয়াড়ের মতো সিদ্ধান্ত নিলেন গ্র্যান্ডমাস্টারদের সম্মান রক্ষা করার জন্য তাদের সাথে ড্র করবেন আর অন্য সব প্রতিযোগীকে হারাবেন। গ্র্যান্ডমাস্টার অ্যাভারবাখ তাকে ঠিকভাবেই মূল্যায়ন করলেন—ঠান্ডা মাথায় এমন বিস্ময়কর চাল দেবার মতো দ্বিতীয় কোনো খেলোয়াড়ের কথা তার জানা নেই।

ইরাসমাস হল হাইস্কুলের ছাত্র ববি ফিশার ১৬ বয়সে ড্রপ আউট হিসেবে স্কুল ছাড়লেন, কিন্তু গভীর নিষ্ঠার সাথে রুশসহ সাতটি বিদেশি ভাষা শিখলেন। উদ্দেশ্য একটাই—দাবার সব ম্যাগাজিন ও বইপত্র তাকে পড়তে হবে। দাবার আরও গোপন কিছু আছে কিনা, জানতে হবে।

যথাযথ পোশাক না পরার অভিযোগে অভিজাতদের ম্যানহাটন চেজ ক্লাব তাকে একবার নিষিদ্ধ করে। তারপর তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে বহুসংখ্যক হাতে তৈরি স্যুট ও জুতো কেনেন এবং সবচেয়ে সুবেশী দাবা খেলোয়াড় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি বিদেশে যত টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন, সবচেয়ে খারাপ ফলাফল হয় আর্জেন্টিনার বুয়োনোস আইরেস টুর্নামেন্টে—বলা হয় এসময় তিনি এক নারীর ফাঁদে পড়ে দিশেহারা ছিলেন। 

টানা ৮ বার তিনি যুক্তরাষ্ট্র চ্যাম্পিয়ন হন। ১৯৭২ সাালে আইসল্যান্ডের রিকইয়াভিকে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে বরিস স্পাসকিকে হারিয়ে বিশ্বশিরোপার অধিকারী হন। অবশ্য এই খেলাতে প্রথম দুটি গেম তিনি হেরেছিলেন, তারপরই তার বিস্ময়কর পুনরুত্থান ঘটে এবং স্প্যাসকি হার মেনে নেন। 

১৯৭৫-এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে কথা ছিল তিনি আনাতোলি কারপভের বিরুদ্ধে খেলবেন। কিন্তু ওয়ার্ল্ড চেজ ফেডারেশন তার কিছু দাবি মেনে না নেওয়ায় তিনি চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। ওয়াকওভার পেয়ে কারপভ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হন। ববি ফিশার তারপর দীর্ঘ সময়ের জন্য স্বেচ্ছানির্বাসনে চলে যান। 

১৯৭৫-এ ববির এই আচরণ অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, সে সময় তিনি মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন কিনা, এ প্রশ্নও উঠে এসেছে। কেউ বলেছেন ববি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত, কেউ বলেছেন প্যারানয়েড পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার। তিনি ভয়ংকর মানসিক চাপে ছিলেন। কারও কারও মতে তার নার্সিসিস্টিক আচরণ থেকে সংকটটি উদ্ভূত। সোভিয়েতরা বলেছে, কারপভের কাছে হেরে যাবেন বলে তার মনে ভয় ঢুকে গিয়েছিল। সম্ভাব্য পরাজয় তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না বলে প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ান। 

একটি স্নায়ুযুদ্ধ ষড়যন্ত্রের কথাও বলা হয়—রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমের স্নায়ুযুদ্ধে ববি ফিশারের পরাজয় অনেকটা যুদ্ধে হারার মতো হবে। এই পরাজয় পশ্চিমকে 'ডিমরালাইজ' করে দেবে এই আশঙ্কায় তাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তত দিনে দাবার কিছু নিয়মকানুন পাল্টায়, তরুণ আনাতোলি কারপভ পরিবর্তিত আইনকানুনের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন—তাতে সম্ভবত ববি ফিশার কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিলেন এবং স্মরণশক্তির ওপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতাও তার কমে যাচ্ছিল বলে মনে করা হয়।

দ্বাদশ শতকের চেজম্যান। ৫ ডলারে কেনা, নিলামে বিক্রয় প্রায় এক মিলিয়ন ডলার

ববি ফিশার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে যত না আলোচনায় এসেছেন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে আরও বেশি আলোচিত হয়েছেন। এটাও বিস্ময়কর, বহু বছর স্বেচ্ছানির্বাসনে কাটিয়ে যখন ফিরলেন, ১৯৯২ সালে বেলগ্রেডে বরিস স্পাসকির সাথে খেলতে আসেন এবং দর্শক ও তার দীর্ঘদিন ধরে হতাশভক্তদের তাক লাগিয়ে তাকে হারিয়ে দেন।

অবশ্য সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে যুগোস্লাভিয়ার ওপর জাতিসংঘের 'স্যাংশন' থাকায় তিনি মার্কিন আইন অমান্য করেন যার শাস্তি মধ্যমেয়াদি কারাদণ্ড (দশ বছর পর্যন্ত) এটা এড়াতে তিনি বাকি জীবন হাঙ্গেরি, ফিলিপাইন ও জাপানে বসবাস করেন। তিনি আইসল্যান্ডের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। ২০০৮ সালের ১৭ জানুয়ারি আইসল্যান্ডের রাজধানী শহর রিকইয়াভিকের একটি হাসপাতালে রেনাল ফেইলিওর জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেন।

ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগে ববি ফিশার একবার গ্রেপ্তার হতে হয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে তার বিরুদ্ধে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় আর কখনো জন্মভূমিতে ফিরে আসেননি। ববি ফিশার স্কুল ড্রপ আউট, রগচটা, দাবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তার কিছু অসাধারণ রাজনৈতিক বক্তব্য স্মরণীয় হয়ে আছে:

ক. যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল বছরের পর বছর ধরে প্যালেস্টাইনিদের জবাই করছে। তাদের সব কাজই লুণ্ঠন আর জবাই। মায়ের দিক থেকে ববি ফিশার ইহুদি বংশোদ্ভূত।

খ. যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে শয়তান, এটাকে ধ্বংস করতে হবে, পৃথিবীর দৃশ্যপট থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে মুছে ফেলতে হবে। তারাই পৃথিবীকে নরক বানিয়ে ফেলেছে, আজকের পৃথিবী নারকীয় অবস্থা তাদের জন্য। (বলা বাহুল্য তার জন্ম আমেরিকায় এবং তিনি আমেরিকান নাগরিক।)

গ.  আমার প্রধান আগ্রহ ইহুদিদের মুখোশ উন্মোচন করা...আমি নিজের স্বার্থে তা করছি না, এটা পৃথিবীর জীবন মরণের প্রশ্ন।

ঘ. জনারণ্যে ভিতু হয়ে থাকার চেয়ে বরং তালাবদ্ধ কারা প্রকোষ্ঠে স্বাধীন মন নিয়ে থাকা আমার বেশি পছন্দের।

ঙ. শেষ পর্যন্ত সাদা মানুষদের আমেরিকা ছাড়তে হবে আর কালোদের চলে যেতে হবে আফ্রিকা।

চ. অধিকাংশ মানুষই ভেড়া, তাদের অন্যের সাহায্য প্রয়োজন হয়।

ছ. কিছুকাল আগে আমি নিৎশের একটা বই পড়লাম। তিনি বলেছেন মানুষের অনুভূতিকে ভোঁতা করে দেবার জন্যই ধর্ম। আমি একমত।

সিন্ধু সভ্যতার নিদর্শন: ভারতীয় দাবা

জ. সবার আগে আমাদের বুঝতে হবে কমিউনিজম কী? মানে আমার কাছে সত্যিকার কমিউনিজম হচ্ছে সোভিয়েত কমিউনিজম, যা আসলে বলশেভিকবাদের মুখোশ, যে বলশেভিকবাদ আবার ইহুদিবাদের মুখোশ।

ঝ. বোর্ডের ওপর যুদ্ধটাই হচ্ছে দাবা, উদ্দেশ্য প্রতিদ্বন্দ্বীর মনোবল চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেওয়া।

ঞ. যখন আমি বুঝতে পারলাম, সাম্যের জন্য এগিয়ে যাওয়া নয়, কালোকে জিততে হবে, এটা আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিল।

তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে কম বয়সী দাবা জুনিয়র বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, সবচেয়ে কম বয়সী গ্র্যান্ডমাস্টার এবং সবচেয়ে কম বয়সে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে চেয়েছেন। তার অহংবোধছিল প্রবল। খোলামেলাভাবেই বলেছেন, 'আমি কোনো টুর্নামেন্টে যোগ দিলে অমনি তার স্ট্যাটাস বেড়ে যায়।' আরও বলেছেন আমাকে দাবার জিনিয়াস বলাতে আমি আপত্তি জানাই, আমি সবকিছুতেই জিনিয়াস যিনি দাবাও খেলেন। ববি ফিশার সুস্থ দেহেও সুস্থ মনে যত দিন খেলেছেন শাহ মাৎ করেই খেলে গেছেন।
 

Related Topics

টপ নিউজ

দাবা / দাবাড়ু / ববি ফিশার / ইজেল

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • নিরাপত্তা উদ্বেগে ১২ দেশের নাগরিকের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা
  • আঞ্চলিক পরমাণু জোট নিজ দেশে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করবে ইরান
  • ডিজিটাল ওয়ালেটের লাইসেন্স পেল গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠান 'সমাধান'
  • টাকার নতুন নোটের খোলাবাজারে দ্বিগুণ মূল্য, গ্রাহক হয়রানি চরমে
  • দোকানে হানা দিলো হাতি, খাবার খেয়ে ‘টাকা না দিয়েই’ পালালো!
  • সাভার ট্যানারির কঠিন বর্জ্য থেকে জেলাটিন ও শিল্প প্রোটিন গুঁড়া উৎপাদন করবে চীনা কোম্পানি

Related News

  • চেসবক্সিং: যে খেলায় শুধু বক্সিং নয়, দাবাতেও হতে হবে তুখোড়
  • ঋত্বিক ঘটকের কন্যা: এক অসমাপ্ত আলাপ
  • শোক হতে শ্লোক
  • আমার স্নিকার্স
  • জুয়ার আশঙ্কা থেকে দাবা খেলা নিষিদ্ধ করল তালেবান

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

নিরাপত্তা উদ্বেগে ১২ দেশের নাগরিকের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা

2
আন্তর্জাতিক

আঞ্চলিক পরমাণু জোট নিজ দেশে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করবে ইরান

3
বাংলাদেশ

ডিজিটাল ওয়ালেটের লাইসেন্স পেল গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠান 'সমাধান'

4
অর্থনীতি

টাকার নতুন নোটের খোলাবাজারে দ্বিগুণ মূল্য, গ্রাহক হয়রানি চরমে

5
অফবিট

দোকানে হানা দিলো হাতি, খাবার খেয়ে ‘টাকা না দিয়েই’ পালালো!

6
অর্থনীতি

সাভার ট্যানারির কঠিন বর্জ্য থেকে জেলাটিন ও শিল্প প্রোটিন গুঁড়া উৎপাদন করবে চীনা কোম্পানি

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net