Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
June 24, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JUNE 24, 2025
বিস্মৃত কিন্তু ভয়াল বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন ১৮৭৬

ইজেল

আন্দালিব রাশদী
17 September, 2022, 04:50 pm
Last modified: 13 May, 2023, 05:03 pm

Related News

  • চলতি মাসে আরও তাপপ্রবাহ ও ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস
  • বর্ষাকাল শেষ হওয়ার পরপরই অক্টোবর–ডিসেম্বরে কেন প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড় হয়?
  • রাতে উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় 'দানা'; শুরু হয়েছে ঝড়-বৃষ্টি
  • ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-এর প্রভাবে সাতক্ষীরা উপকূলে তুমুল বৃষ্টিপাত
  • এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’: ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি

বিস্মৃত কিন্তু ভয়াল বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন ১৮৭৬

এই বর্ণনা বেঞ্জামিন কিংসবারির অ্যান ইম্পেরিয়াল ডিজাস্টার থেকে সংক্ষেপকৃত। এই সাইক্লোন এবং সাইক্লোন-পরবর্তী মহামারিতে তিন লাখেরও বেশি  জীবনের সমাপ্তি ঘটেছে। বঙ্গোপসাগর থেকে ছুটে আসা জলোচ্ছ্বাসে আনুমানিক ২ লাখ ১৫ হাজার মানুষ ডুবে মরেছে বলে মনে করা হয়।
আন্দালিব রাশদী
17 September, 2022, 04:50 pm
Last modified: 13 May, 2023, 05:03 pm

বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন ১৮৭৬

১৮৭৬ সালের অক্টোবরের শেষদিনগুলোতে বঙ্গোপসাগর সম্পূর্ণ শান্ত। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি প্রবাহ থেমে গেছে, উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু তখনো বইতে শুরু করেনি। আবহাওয়া দপ্তর তাপ আর চাপ রেকর্ড করছে। উপকূলজুড়ে বায়ুর চাপ বেশি, তাপমাত্রা কম; হালকাবাতাস বইছে। আকাশ মেঘমুক্ত। আবহাওয়াবিদ জন এলিয়ট মনে করছেন, আবহাওয়ার দিক থেকে চমৎকার একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা বজায় আছে।

এটা তো ঝড়েরই মৌসুম। সাইক্লোনটি তৈরি হলো উপসাগরের দক্ষিণে নিকোবার দ্বীপপুঞ্জের কাছে। ৩০ অক্টোবর রাতে ঝড়টা উত্তরে রওনা হয়। মেঘের পাহাড় সজ্জিত হচ্ছে, চাঁদ উজ্জ্বল লালচে আভা ছড়াচ্ছে। ব্রিটিশ স্পেকটার জাহাজের কমান্ডার কিন্তু মনে করছেন, আবহাওয়াটা খারাপের দিকে যাচ্ছে, সমুদ্রের আচরণ তিনি ভালো বুঝেন। দক্ষিণ দিক থেকে যে ঢেউ উঠেছে, তা বেশ উঁচু এবং ঢেউ গড়িয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে যাচ্ছে। সে রাতেই ঝড় এল। 

সকাল নাগাদ ঢেউ সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছাল, বাতাসের ঝাপটা আসছে। আকাশে লাগাতার বিদ্যুৎ ঝলক। উষ্ণ ও শীতল দুই ধরনের মুষলধারায় বৃষ্টি ঝরছে। বাতাস অবিরাম গর্জন করতে শুরু করেছে। এতক্ষণে জাহাজের ঝড়ো বাতাস এড়ানো অংশটা পানির নিচে আর মাস্তুলের দিকে চোখ পড়তেই মনে হলো ঝড় যেকোনো সময় এটাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে।

কিছুক্ষণ পরই উত্তাল সমুদ্র শান্ত হতে শুরু করল। জাহাজের কমান্ডার তার লগবইয়ে লিখলেন ঝড়ের মুখ জাহাজ অতিক্রম করে চলে গেছে।

এগোতে এগোতে ঝড় যখন টেনিসন নামের জাহাজকে কুপোকাৎ করে ফেলল, তখন ঝড়ের গতি তেমন বেশি কিছু নয়। এটাকে বঙ্গোপসাগরের স্বাভাবিক ঝড়ই বলা যায়। কিন্তু টেনিসনের ওপর দিয়ে যাবার সময় বজ্রনির্ঘোষে জাহাজের এক প্রান্ত থেকে ডেকের ওপর যা কিছু ছিল, ছুড়ে সমুদ্রে ফেলল। কয়েক ঘণ্টা পর ঝড়ের কবলে পড়ল আর একটি জাহাজ 'লাইটিনিং'। 

কমান্ডার  লিখলেন, বাতাসের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, সে সাধ্য কারও নেই, দমকল বাহিনীর পাইপ থেকে যে গতিতে এবং যে পরিমাণে পানি ছুটে আসে, বৃষ্টিটাও তেমনি, যে কাউকে পরাস্ত করে স্রোতে ভাসিয়ে নেবে। কমান্ডার কোয়ার্টার বোর্ডের কাছে যেতে চেষ্টা করছিলেন, ঝড় তাঁকে দশ ফুট ওপরে  উঠিয়ে নিয়ে ডেকের ওপর আছড়ে ফেলল, তিনি অজ্ঞান হয়ে গেলেন, মোটা দড়িতে নিজেকে আঁকড়ে নিয়েছিলেন বলে বঙ্গোপসাগরে তাঁর সলিল সমাধি ঘটেনি।

এই বর্ণনা বেঞ্জামিন কিংসবারির অ্যান ইম্পেরিয়াল ডিজাস্টার থেকে সংক্ষেপকৃত। এই সাইক্লোন এবং সাইক্লোন-পরবর্তী মহামারিতে তিন লাখেরও বেশি  জীবনের সমাপ্তি ঘটেছে। বঙ্গোপসাগর থেকে ছুটে আসা জলোচ্ছ্বাসে আনুমানিক ২ লাখ ১৫ হাজার মানুষ ডুবে মরেছে বলে মনে করা হয়। সাইক্লোন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঈশ্বরের ওপর মানুষের হাত নেই, এ তত্ত্বের বিরোধিতা করে তিনি বলেছেন, বাংলায় ব্রিটিশ শাসকদের উদাসীনতা এবং মানুষের জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করার প্রবণতার কারণেই জীবনও  সম্পদের ক্ষতি এমন অবিশ্বাস্য আকারের। নিউজিল্যান্ডবাসী লেখক ও গবেষক বেঞ্জামিন কিংসবারির গ্রন্থটি সচেতন পাঠকের অবশ্যপাঠ্য তালিকায় থাকতে পারে।

১৮৭৪ সালের বাংলার এক গ্রাম, দুর্ভিক্ষ চলছে। এর দুবছর পরই আঘাত হানে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়।

বঙ্গোপসাগর উপকূলমুখী সাইক্লোনের মুখোমুখি শেষ জাহাজ মৌলমিন তখন চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা যাচ্ছিল। এরপর উত্তাল সমুদ্রে আর কোনো জাহাজ আসেনি। ৩১ অক্টোবর ভোর থেকেই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ আবহাওয়া। ক্যাপ্টেন যাত্রীদের সুরক্ষিত করতে জাহাজের নিরাপদ অংশে ঢুকিয়ে দিলেন। বিকেল পাঁচটায় জাহাজের সর্বোচ্চ মাস্তুলটি ঝড়ে উড়ে গেল, সাতটায় উড়ে গেল জাহাজের সামনের মাস্তুল।

জাহাজের বিশাল ফানেল ভেঙে পড়ল ডেকের ওপর। জাহাজ হতে সাইক্লোনের দূরত্ব ৪০ থেকে ৫০ মাইল, সাইক্লোন পূর্ব দিকে যাচ্ছে। কিন্তু ক্রমেই ঝড়ের গতি বাড়ছে, জাহাজের ইঞ্জিনের আগুন নিভে গেল। বয়লার একেবারে শুকিয়ে গেছে। ব্যারোমিটারের পাঠ নেমে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এসে গেছে। মেঘনার মোহনায় পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে।

৩১ অক্টোবর রাতে উপকূল এবং দ্বীপাঞ্চলের নিচের দিকটা অস্বাভাবিক উঁচু জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেল। কিন্তু এটাই সব নয়, এ কেবল আগমনী বার্তা। তারপর এল আরও উঁচু ঢেউ। আর সাইক্লোন যখন স্থলভাগের ওপরে এল, সাথে নিয়ে এল এই অঞ্চলের মানুষের কল্পনাতীত অস্বাভাবিক উঁচু জলস্তম্ভ। মোহনার অগভীর অংশে এত পানির ঠাঁই হবে কেমন করে। সুতরাং তীব্র স্রোত সামনে যা পায়, তা-ই গ্রাস করতে করতে এগিয়ে যায়।

বাড়িঘর, গাছগাছালি মূলোৎপাটিত হয়ে সাগরে ভেসে গেল আর পুরো ব্যাপারটা এত দ্রুত ঘটেছে যে কেউ কাউকে সতর্ক করে দেবারও সুযোগ পায়নি। সতর্ক করলেই-বা কী হতো, যতদূরই দৌড়ে যাক, ধাবমান ঢেউয়ের বিশাল স্তম্ভেও সাথে কুলিয়ে উঠতে পারত না।

৩১ অক্টোবর রাতে ঘূর্ণিঝড়ের লেজটা ঢাকা  জেলা অতিক্রম করল, তবে তেমন ক্ষয়ক্ষতি এখানে হয়নি, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিষনার আশ্বস্ত থাকলেন।

৪ নভেম্বর ১৮৭৬ ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার ফ্রেডেরিক পিকক তার রুটিন প্রতিবেদনে সরকারকে জানালেন, সাইক্লোন জেলাগুলোতে কোনো ক্ষতি করেছে, এমন রিপোর্ট তিনি পাননি। ঢাকা বিভাগের একটি জেলা বাকেরগঞ্জ থেকেও কোনো খবর আসেনি। তবে ১ নভেম্বর বাকেরগঞ্জের কালেক্টর এবেনেজার বার্টন চিঠি লিখেছেন, গতকাল সারাদিন আকাশ ক্লান্তিকর মেঘে ঢাকা ছিল, এটা অবশ্যই খারাপ আবহাওয়ার লক্ষণ।

বেলা তিনটার সময় হালকা বাতাস প্রবাহিত হয় এবং বৃষ্টি পড়তে থাকে। রাত এগারোটা নাগাদ হালকা বাতাস সহিংস ঝড়ে পরিণত হয়। বার্টন রাত একটায় ঘুম থেকে উঠলেন এবং সাড়ে চারটা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে বুঝলেন, ঝড় থেমে যাচ্ছে। 

সকালে ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে বার্টন নিজেই বেরোলেন এবং তাঁর প্রতিবেশী এলাকা ও শহর ঘুরে বুঝতে পারলেন, কিছু ঘরবাড়ি ও গাছপালা হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। কোনো মৃত্যুর খবর তিনি পাননি। কিন্তু জেলার দক্ষিণাঞ্চলের অবস্থা কী? বার্টন দেখলেন, সারারাত উত্তর দিকে ঝড়ের বাতাস বয়ে গেছে। তিনি ধরেই নিয়েছেন দক্ষিণ নিরাপদ, যদি কিছু ঘটেও থাকে, তা উল্লেখ করার মতো কিছু নয়। তবে তার কিছুটা আশঙ্কাও ছিল, তিনিও নিশ্চিত হতে চাচ্ছিলেন।

২ নভেম্বর কালেক্টর বার্টন সাহেবের অধঃস্তন একজন কর্মকর্তা তোজাম্মেল আলী উত্তর-পূর্ব বরিশালের একটি দ্বীপ থেকে ফিরে এলেন। এটি সরকারি মালিকানায় আসা একটি দ্বীপ, জরিপের কাজে তোজাম্মেল আলীকে সেখানে যেতে হয়েছে। যখন ঢেউয়ের প্রথম আঘাত আসে, তিনি নৌকাতে ঘুমোচ্ছিলেন। ঢেউয়ের তোড়ে তিনি নৌকা থেকে ছিটকে পড়লেন এবং নৌকা ডুবে গেল। তিনি গলাপানিতে দাঁড়িয়ে, যদি দ্রুত সরতে না পারেন, ঢেউ তাঁকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি দ্রুত ছুটে গিয়ে একটি শিমুলগাছ আঁকড়ে ধরলেন এবং বেয়ে বেয়ে গাছের ওপরে উঠে গেলেন। তার সামনে জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন।

পরদিন সকালে গাছের ওপর থেকে তিনি দেখলেন, জলোচ্ছ্বাসের পানি সমুদ্রে নেমে যাচ্ছে আর ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বহুসংখ্যক মৃতদেহ। তিনি আঁতকে উঠলেন। এ কী!

এই প্রথম কালেক্টর বার্টন সাহেব জলোচ্ছ্বাসের কথা শুনলেন। তাহলে জেলার উত্তর-পূর্ব অংশের অবস্থা খুব খারাপ! দক্ষিণের নীরবতার কারণটি তাঁর বোধগম্য হলো কে খবর দেবে? এর চেয়েও ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস আঘাত করেছে সুন্দরবন অঞ্চল, গলাচিপা, বাউফল, মোহনার দ্বীপ দক্ষিণ শাহবাজপুর, মনপুরা ইত্যাদি এলাকায়।

পরদিন সকালে ছোট্ট নৌকায় দীননাথ সরকার এসে বরিশাল পৌঁছালেন। দীননাথ সরকার দক্ষিণ শাহবাজপুর মহকুমার দৌলতখানের পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর। তিনি বার্টনকে যা শোনালেন, তা অবিশ্বাস্য মনে হলো। এই বিশাল ঢেউয়ের কথা বলার মতো যদি কেউ থাকেন, বুঝতে হবে কেবল তিনিই বেঁচে আছেন আর সবাই মৃত।

দীননাথ বললেন, ৩১ অক্টোবর যখন ঝড় শুরু হলো, আমি আমার স্টেশন দৌলতখানেই ছিলাম। রাত ১১টার দিকে পেশকারের (উকিলের সহযোগী) ঘরে আগুন লাগল। আমাদের দৃষ্টি তখন সেই আগুন লাগা ঘরের দিকে। হঠাৎ আবিষ্কার করলাম, আমাদের পা, শরীর পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে, প্রবল তোড়ে পানির উঁচু পাহাড় এগিয়ে আসছে। আমাদের সব আশা উবে গেল। আমি গার্ডশেডের ছাদের ওপর ওঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম, পানির তীব্র তোড়ে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারপর কোনোভাবে কারাবন্দীদের শেডের ওপর উঠতে সমর্থ হই।

কিন্তু পানি বাড়তে বাড়তে প্রবল জোয়ারে একসময় শেডটাকেই ভাসিয়ে নিয়ে যায়। শেডের ওপর আমরা ছয়-সাতজন উঠেছিলাম। যখন ভেসে যাচ্ছিলাম, একজন কয়েদি ও একজন সঙ্গীকে নিয়ে সৌভাগ্যবশত একটি ভাসমান নৌকা আঁকড়ে ধরি। কিন্তু নৌকাও স্রোতের তোড়ে আমাদের ফেলে দিল। এবার পেলাম মূলোৎপাটিত একটি শিমুলগাছ। ভাসতে ভাসতে একসময় একটি আমগাছের ডাল ধরে গাছের ওপরে উঠে যাই। রাতটা কাটে গাছের শাখাতেই।

সকাল সাড়ে আটটায় পানি নেমে যেতে থাকলে দীননাথ সরকার নেমে আসেন। গাছ আঁকড়ে আরও কেউ বেঁচে আছে কিনা, জানার জন্য তিনি চিৎকার করে বলেন, কেউ কি আছো? সাড়া মেলে। হেড কনস্টেবল গোবিন্দ দাস এবং আরও একজন সাড়া দেন। তারা কোন দিকে যাবেন, বুঝতে পারছিলেন না। যারা বেঁচে আছে, তাদের অধিকাংশের পরনেই কোনো কাপড় নেই। ভাসমান চট তুলে এনে লজ্জাস্থান ঢেকে দীননাথ ও কনস্টেবলরা দৌলতখান পৌঁছালেন।

দীননাথ বললেন, আমি জায়গাটাকে চিনতে পারছিলাম না, তিরিশ ফুট পানির নিচে চলে গিয়েছিল। আশপাশে কারও দেখা মিলল না, সবাই সাগরে ভেসে গেছে। দীননাথ একটু পান্তাভাত জোগাড় করলেন, একটি নৌকাও পেলেন। বরিশাল এলেন।

দীননাথ সরকার যেদিন পৌঁছালেন, সেদিন ৪ নভেম্বর। বার্টন দক্ষিণ শাহবাজপুরের মহকুমা প্রশাসক উমাচরণ বন্দোপাধ্যায়ের চিঠি পেলেন। কী ঘটেছে দীননাথ সরকার যেমন মনে করতে পেরেছেন এবং বলেছেন, তিনি কিছু স্মরণ করতে পারলেন। কী হয়েছে, উমাচরণ তা-ও জানেন না। কেমন করে তার জ্ঞান ফিরল, তা-ও জানা নেই। জ্ঞান ফেরার পর দেখলেন, তার পরিবারে সন্তান, নাতি-নাতনিসহ ১২ জনের একজনেরও কোনো হদিস নেই, সবাই ভেসে গেছে। তিনি আনুমানিক একটা হিসাব দিলেন, তার মহকুমার ১০ হাজার মানুষ ও ৫০ হাজার গবাদিপশু জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে। বেঁচে থাকা হাতে গোনা কজন মানুষের আর কিছুই নেই। উমাচরণের খেয়ে বাঁচার মতো কিছু নেই।

জেলার দক্ষিণাংশ হতে প্রলয়ংকরী ধ্বংসযজ্ঞ ও মৃত্যুর খবর বার্টনের অফিসে আসতে শুরু করেছে। বার্টন অনুমান করলেন, তাহলে তো পটুয়াখালীরও একই অবস্থা। সে রাতে বাউফলের সাবরেজিস্ট্রার ডি সিলভা একটি কাঁঠালগাছে উঠে নিজের জীবন বাঁচিয়েছেন। গলাচিপার সাব ইন্সপেক্টর জ্যাকসনের সারা শরীরে কাটাছেঁড়া, তিনি কোনোভাবে এসে পৌঁছেছেন। তার স্ত্রী ও সন্তানদের কেউই বেঁচে নেই। সেখানে কী ঘটেছে, তিনি বিস্তারিত কিছুই বলতে পারলেন না।

১৮৭৬-এর বেঙ্গল সাইক্লোন কিংবা বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন বাংলার বুকে যে আঘাত করেছে, তা ছিল ভয়ংকর সতর্কবার্তা।

মহকুমা প্রশাসকের মতো জাঁদরেল কর্মকর্তার পরিবারে তিনি ছাড়া বাকি ১২ সদস্যের সবারই যেখানে সলিল সমাধি ঘটেছে, সেখানে মহকুমার সাধারণ মানুষের অবস্থা কী, তা সহজেই অনুমেয়।

১৮৭৬-এর সাইক্লোনে যা বেঁচে গেছেন, তাদের কাহিনিই বিস্ময়কর। কারোরই তো বাঁচার কথা ছিল না।
ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার পিকক সাহেব মর্মান্তিক ধ্বংসযজ্ঞের খবর প্রথম পেলেন ৬ নভেম্বর ১৮৭৬।

 

Related Topics

টপ নিউজ

ঘূর্ণিঝড় / সাইক্লোন / বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কর্মচারীদের জন্য সর্বনিম্ন বিশেষ ভাতা ১,৫০০ টাকা ও পেনশনের জন্য ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করল সরকার
  • চাহিদা না থাকায় ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ভালো হওয়ায় কমতে শুরু করেছে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম
  • প্রতারণা করে গ্রাহকের ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার: অভ্যন্তরীণ তদন্ত
  • হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিল ইরান
  • গঙ্গা চুক্তি পুনঃআলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত
  • হরমুজ প্রণালী বন্ধ না করতে ইরানকে বোঝাতে চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান

Related News

  • চলতি মাসে আরও তাপপ্রবাহ ও ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস
  • বর্ষাকাল শেষ হওয়ার পরপরই অক্টোবর–ডিসেম্বরে কেন প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড় হয়?
  • রাতে উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় 'দানা'; শুরু হয়েছে ঝড়-বৃষ্টি
  • ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-এর প্রভাবে সাতক্ষীরা উপকূলে তুমুল বৃষ্টিপাত
  • এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’: ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি

Most Read

1
অর্থনীতি

কর্মচারীদের জন্য সর্বনিম্ন বিশেষ ভাতা ১,৫০০ টাকা ও পেনশনের জন্য ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করল সরকার

2
অর্থনীতি

চাহিদা না থাকায় ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ভালো হওয়ায় কমতে শুরু করেছে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম

3
অর্থনীতি

প্রতারণা করে গ্রাহকের ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার: অভ্যন্তরীণ তদন্ত

4
আন্তর্জাতিক

হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিল ইরান

5
বাংলাদেশ

গঙ্গা চুক্তি পুনঃআলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত

6
আন্তর্জাতিক

হরমুজ প্রণালী বন্ধ না করতে ইরানকে বোঝাতে চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net