ভারত-পাকিস্তান সেনা কর্মকর্তাদের মধ্য বৈঠক পেছাল, যুদ্ধবিরতি অব্যাহত

ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক প্রধানদের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনার জন্য নির্ধারিত বৈঠক আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
এরই মধ্যে সীমান্তে টানা সংঘর্ষের পর রোববার দুই দেশেই শান্তিপূর্ণ রাত কাটে। এছাড়া, খুলে দেওয়া হয়েছে ভারতের ৩২টি বিমানবন্দর।
চার দিন ধরে চলা তীব্র গোলাগুলি ও কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত আসে। কাশ্মীর নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে থাকা হিন্দু-অধ্যুষিত ভারত ও মুসলিম-অধ্যুষিত পাকিস্তান — উভয়েই পুরো অঞ্চলটির মালিকানা দাবি করে।
রোববার ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শনিবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে পাকিস্তানকে হটলাইনে বার্তা পাঠানো হয়েছে। একজন শীর্ষ ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের আরেকটি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে নয়াদিল্লির।
তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভারতের বিমান অভিযানের পরিচালক এয়ার মার্শাল এ কে ভারতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'সামান্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও আমাদের সব সামরিক ঘাঁটি ও ব্যবস্থা এখনো পুরোপুরি সচল রয়েছে।'
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দুই দেশের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালকরা সোমবার সন্ধ্যায় টেলিফোনে কথা বলবেন। পূর্বে ঠিক করা সময় অনুযায়ী দুপুরে এই আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। তবে বিলম্বের কারণ জানানো হয়নি। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইং তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য দেয়নি।
এদিকে, সম্প্রতি সংঘাতের সময় সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া ভারতের ৩২টি বিমানবন্দর সোমবার থেকে আবার চালু হয়েছে বলে জানিয়েছে এয়ারপোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এসব বিমানবন্দর বেসামরিক কার্যক্রমের জন্য উন্মুক্ত। পাকিস্তান শনিবারই তার আকাশপথ খুলে দিয়েছে।
ভারতের সীমান্তবর্তী শহর অমৃতসারের বাসিন্দা ও চালক ধর্মেন্দ্র সিংহ (৩৪) জানান, 'এখানে তেমন ভয় নেই। জম্মুর মতো পরিস্থিতিও না। এখন সব শেষ... শহর আবার তার আগের রূপে ফিরছে, এটা দেখে ভালো লাগছে।'
সম্প্রতি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ একে অপরের সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়, যাতে বহু বেসামরিক লোক নিহত হয়। ভারত দাবি করে, পাকিস্তানের একটি হামলায় তাদের ২৬ সেনা নিহত হয়েছে। এই ঘটনার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করে নয়াদিল্লি।
পাকিস্তান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।
ভারত জানিয়েছে, তারা বুধবার পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে মোট নয়টি 'সন্ত্রাসী অবকাঠামো' লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে ইসলামাবাদ বলেছে, এসব হামলার লক্ষ্য ছিল বেসামরিক এলাকা।