মাগুরায় শিশু আছিয়া হত্যা মামলায় চার্জ গঠন, সাক্ষ্যগ্রহণ ২৭ এপ্রিল

মাগুরায় শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চার্জ গঠন করা হয়েছে। আগামী ২৭ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। ওইদিন অভিযোগপত্র অনুযায়ী ১ থেকে ৩ নম্বর সাক্ষীকে সমন দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মনিরুল ইসলাম মুকুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চার্জ গঠনের আগে বিচারক আসামিদের আইনজীবী নিয়োগে আগ্রহ আছে কি না জানতে চান। আসামিরা আইনজীবী নিতে আগ্রহ প্রকাশ করলে বিচারক তাদের লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে আবেদন করতে বলেন।
পিপি আরও জানান, প্রধান আসামি হিটু শেখ ১৬৪ ধারায় ধর্ষণের দায় স্বীকার করলেও অভিযোগ গঠনের সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। একই দাবি করেছেন অন্য আসামিরাও।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় গঠিত পাঁচ সদস্যের আইনজীবী প্যানেলের আহ্বায়ক শাহেদ হাসান টগর বলেন, "এই মামলায় আসামিদের পক্ষে মাগুরা বারের কোনো আইনজীবী না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ছিল। আজও হিটু শেখদের পক্ষে কেউ আদালতে দাঁড়াননি।"
তিনি জানান, রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী প্যানেলের পাঁচ সদস্য শুরু থেকে মামলার সহযোগিতা করছেন এবং শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
আছিয়ার মা আয়েশা বেগম বলেন, "আজ চার্জ গঠনের শুনানি শেষে ২৭ এপ্রিল তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন বিচারক।"
রাষ্ট্রপক্ষে মামলায় অংশ নেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী। তিনি বলেন, "আছিয়া হত্যা মামলা একটি চাঞ্চল্যকর মামলা, যা দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে আদালত ও সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।"
তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩)-এর ৯(২) ধারা, পেনাল কোডের ৫০৬ ও ২০১ ধারায় অভিযোগ গঠনের অনুরোধ করেন। শুনানি শেষে বিচারক চার্জ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেন।
হিটু শেখসহ আসামিদের আদালতে হাজির করায় আদালত চত্বরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ মাগুরা সদরের নান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আছিয়া ধর্ষণের শিকার হয়। পরে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আছিয়ার।
ওই ঘটনায় আছিয়ার মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। প্রধান অভিযুক্ত হিটু শেখ আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।