মানুষের সুরক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

দেশের করোনা পরিস্থিতি ও এর অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় ও মানুষের সুরক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, গত বছর ডিসেম্বর মাসের শেষে চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পরপরই এই বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা ও আইইডিসিআর যৌথভাবে কাজ শুরু করে। আইইডিসিআর-এ কন্ট্রোল রুম খোলা হয় এবং রোগটি মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করা হয়।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পৃথক পৃথক কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
ভাইরাসসহ সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে National Preparedness and Response Plan for COVID-19, Bangladesh প্রণয়ন করা হয়েছে। পরিকল্পনার আওতায় তিন-স্তর বিশিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়:
১। বিদেশ হতে আগত ব্যক্তিদের মাধ্যমে যেন ভাইরাস না ছড়ায় সেজন্য বিদেশে গমন এবং বিদেশ থেকে আগমন নিরুৎসাহিত করা;
২। দেশের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তির আগমন ঘটলে দ্রুত সনাক্তকরণ এবং এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার রোধ;
৩। চিহ্নিত আক্রান্ত ও অসুস্থ ব্যক্তিদের দ্রুত পৃথক করে যথাযথ চিকিৎসা প্রদান।
গত জানুয়ারি থেকেই এই তিন স্তরের কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়। দেশের সকল বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর এবং স্থলবন্দরে বিদেশ প্রত্যাগত যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের মাধ্যমে স্ক্রিনিং করার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়াও লক্ষণযুক্ত এবং সন্দেহভাজন যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বিমান যাত্রীদের মধ্যে অবতরণের পূর্বেই হেলথ ডিক্লারেশন ফরম ও প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফরম বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
লক্ষণবিহীন ও সন্দেহজনক নয় এমন যাত্রীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় এবং তাদের নিয়মিত ফলোআপ করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট বিদেশী সংস্থা, চিকিৎসক পেশার প্রতিনিধি সকলকে নিয়ে জাতীয় কমিটি হয়েছে। বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠিত হয়েছে।
এসময় সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় মোট পাঁচটি প্যাকেজে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি আপৎকালীন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি ক্ষুদ্র, মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদের নতুন এই প্যাকেজগুলো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষতি সামলে উঠতে সহায়তা করবে বলে আশা করেন তিনি।