নির্বাচনে কোনো দলের পক্ষে থাকবেন না: ডিসি এসপিদের সিইসির নির্দেশনা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে দেশের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) কোনো দলের পক্ষ হয়ে কাজ না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচনের সময় সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে তাদেরকে দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান সিইসি।
জেলা পরিষদ নির্বাচন ও আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ শনিবার সকালে ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠকে সিইসি এ নির্দেশনা দেন।
ঢাকার আগারগাঁওয়ে ইসি মিলনায়তনে আজ সকাল ১০টায় এ বৈঠক শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সিইসি বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সাধারণ নির্বাচন বিষয়ে আপনাদের কঠোরভাবে দায়িত্ব-সচেতন হতে হবে।
"কোনো অবস্থায়ই নির্বাচন বিষয়ে আপনাদের কর্ম ও আচরণে এমন কিছুর প্রতিফলন হবে না যাতে জনগণ ভাবতে পারেন যে আপনারা কোনো একটি দলের পক্ষে কাজ করছেন।"
"জনগণের স্বাধীন ভোটাধিকার প্রয়োগের সহায়ক অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে হবে। নিরপেক্ষ থেকে আপনারা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।
"গণতন্ত্রের প্রয়োগ, চর্চা ও বিকাশে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে আপনাদের। নির্বাচন কমিশন তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন ও ক্ষমতা প্রয়োগে কঠোর অবস্থানে থাকবে"।
তিনি বলেন, "সংসদীয় পদ্ধতির বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রশ্নে মতপার্থক্য বা মতের ভিন্নতা থাকতেই পারে।
"আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ বিভাজন নিয়ে সংশয় থাকলেও আমরা আশা করি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ ও সার্বিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের সদিচ্ছা, প্রজ্ঞা এবং বিচক্ষণতা যে কোনো সংকট ও সংশয় নিরসনে সামর্থ্য রাখে।"
হাবিবুল আউয়াল বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সাধারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।
"ইভিএম প্রশ্নেও বিতর্ক রয়েছে। আমরা কেবল বিশ্বাস করি না, প্রমাণ পেয়েছি ইভিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্বাচনী সহিংসতা ও কারচুপি নিয়ন্ত্রণ সহজতর। অনূর্ধ্ব ১৫০টি আসনে, প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, ইভিএম প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি।
"তবে প্রয়োজনে সব আসনে বা ১৫০টির বেশি আসনে ব্যালটে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ও সামর্থ্য আমাদের থাকবে। সে লক্ষ্যে নির্বাহী ও পুলিশ প্রশাসনকেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সামর্থ্য ও প্রস্তুতি রাখতে হবে।"
হাবিবুল আউয়াল বলেন, "মনে রাখতে হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশে একই দিনে একই সময়ে ৪২ থেকে ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।
"কর্মযজ্ঞটি সহজসাধ্য না হলেও অসাধ্য নয় এবং সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে সার্থকভাবেই সাধন করতে হবে।"
বৈঠকে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আইজিপি উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর বা ২০২৪ সালের জানুয়ারীতে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই কমিশন তাদের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে।